মন্দির নগরী বিষ্ণুপুরে এসে বিষ্ণুপুর উৎসবের প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠক করলেন রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী রচপাল সিংহ। শনিবার রাতে বিষ্ণুপুর ট্যুরিস্ট লজে এই বৈঠক করার পরে রবিবার তিনি বিষ্ণুপুরের দ্রষ্টব্যস্থানগুলি পরিদর্শন করেন।
আগামী ২৩ থেকে ২৭ ডিসেম্বর বিষ্ণুপুর মেলা হচ্ছে। তার পরেই হবে বিষ্ণুপুর উঞসহ। রাজ্য পর্যটন দফতরের উদ্যোগে গত কয়েক বছর ধরে বিষ্ণুপুর উৎসব শুরু হয়েছে। ২৮-৩০ ডিসেম্বর এই উৎসব হবে। শনিবার রাতে পর্যটন মন্ত্রী বিষ্ণুপুরের পুরপ্রধান তথা রাজ্যের আবাসন মন্ত্রী শ্যাম মুখোপাধ্যায় ও বিষ্ণুপুরের মহকুমাশাসক সুশান্ত চক্রবর্তীকে নিয়ে ওই উৎসবের প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ঘরানার শহর বিষ্ণুপুর মন্দিরনগরী নামেও পরিচিত। এখানকার পর্যটনের আকর্ষণ বাড়ানোর জন্য এ বারও বিষ্ণুপুর উৎসব করা হচ্ছে। ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের বিশিষ্ট শিল্পীদের সঙ্গে বিষ্ণুপুর ঘরানার শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করবেন।” |
মন্দিরের সামনে পর্যটনমন্ত্রী। বিষ্ণুপুরে রবিবার ছবিটি তুলেছেন শুভ্র মিত্র। |
বিষ্ণুপুরের পর্যটনের পরিকাঠামোর উন্নয়ন প্রসঙ্গে পর্যটন মন্ত্রী বলেন, “লালবাঁধ সংস্কার ও সৌন্দার্যায়ন, বাঁধের পাড় থেকে লালগড় প্রকৃতি উদ্যান পর্যন্ত রোপওয়ে, উল্লেখযোগ্য মন্দিরগুলিতে আলোর ব্যবস্থা করার চিন্তা ভাবনা রয়েছে।” তিনি জানান, এখানে হস্তশিল্পের বিক্রি বাড়ানোর জন্য ‘আর্ট অ্যান্ড ক্রাফট’ তৈরি করা হবে। সে জন্য জমি খোঁজা হচ্ছে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, “বিষ্ণুপুর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ-এর প্রস্তাব তালিকায় রয়েছে। আমাদের সরকার এই দাবি নিয়ে আরও কার্যকরী পদক্ষেপ করতে চাইছে। তার জন্য এই এলাকার আরও উন্নয়ন করতে হবে।”
রবিবার সকালে মহকুমাশাসককে সঙ্গে নিয়ে পর্যটনমন্ত্রী উৎসবের মাঠ এবং বিষ্ণুপুরের দু’টি গুরুত্বপূর্ণ মন্দির শ্যামরাই, রাসমঞ্চ ও লালবাঁধ-লালগড় প্রকৃতি উদ্যান ঘুরে দেখএন। দুপুরে ইন্দাস থানার সোমসারে শ্রীরামকৃষ্ণ সেবা মন্দিরে বার্ষিক উৎসবে যোগ দেন। দলীয় কর্মীরা সোমসারকে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য মন্ত্রীর কাছে দাবি জানান।
বিষ্ণুপুর মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকার উন্নয়নে রাজ্য পর্যটন দফতরে কিছু প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। যার মধ্যে ছিল, পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে সপ্তাহে ছুটির দিনে শনি ও রবিবার সন্ধ্যায় বিষ্ণুপুর ট্যুরিষ্ট লজে বিষ্ণুপুর ঘরানার আসন বসানো। দলমাদল কামান, মদনমোহন ও ছিন্নমস্তা মন্দিরে আলোর বন্দোবস্ত করার মতন বিষয়। পর্যটনমন্ত্রী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাঁকুড়ার পর্যটন উন্নয়নে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছেন। তাঁর নির্দেশেই আমি বিষ্ণুপুরে এসেছি। পরিকল্পনাগুলি বাস্তবায়িত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।” |