মহকুমা আদালত চত্বরের পরিকাঠামো বেহাল। নেই পানীয় জলের বন্দোবস্তও। এমনই অভিযোগ বাসিন্দাদের।
প্রতিদিন সকাল থেকেই কালনা, মন্তেশ্বর ও পূর্বস্থলী থেকে বহু মানুষ মামলা মোকদ্দমার কাজের জন্য এই আদালতের উপরেই নির্ভরশীল। আইনজীবীদের অনেকেরই বসার জায়গা নেই। খোলা আকাশের নীচে বসেই কাজ করতে দেখা যায় অনেক আইনজীবীকেই। বৃষ্টি পড়লে মক্কেলদের কথাবার্তা সারতে হয় চায়ের দোকানে বসেই। আদালত চত্বরে সাধারণ মানুষের জন্য নেই কোনও বিশ্রামাগার। সাক্ষীদের বসার জন্য তৈরি কংক্রিটের আচ্ছাদনটি বর্তমানে টাইপিস্টদের দখলে। রয়েছে পানীয় জলের সঙ্কটও। আদালতে চত্বরের একমাত্র নলকূপটি মাঝেমধ্যেই অকেজো থাকে বলে অভিযোগ। মহিলাদের জন্য নেই কোনও শৌচাগার। পুরুষদের জন্য শৌচাগার থাকলেও সেটি নিয়মিত পরিষ্কার হয় না। কালনা শহরের বাসিন্দা নিমাই চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “গ্রীষ্মে গাছের তলায় দাঁড়ানো যায়, বৃষ্টি পড়লে ভেজা ছাড়া আর উপায় থাকে না।” ক্ষুব্ধ আইনজীবীরাও। এক আইনজীবী বিকাশ ঘোষের অভিযোগ, “আদালতের পরিকাঠামো উন্নয়নের ব্যাপারে বার বার মহকুমা প্রশাসনকে জানানো হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।” |
আদালতে চত্বরে রয়েছে পুলিশি ব্যারাক। সেটিও দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে বেহাল। নানা জায়গায় তৈরি হয়েছে ছোট-বড় ফাটল। বর্ষায় ফাটল দিয়ে জল ঢুকছে। নষ্ট হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রও। আদালতে তোলার আগে বিভিন্ন থানা থেকে নিয়ে আসা বন্দিদের রাখা হয় যে লক-আপে, সেটি আয়তনে বেশ ছোট। মহিলাদের জন্য আলাদা কোনও লক-আপও নেই। ধৃত মহিলাদের পুলিশি পাহারায় লক-আপের বাইরেই রাখা হয়। আদালত চত্বরের চারদিক ঘেরা না থাকায় বেশ কয়েক বার বন্দিরা পালিয়ে যাওয়ারও চেষ্টা করেছে বলে জানা গিয়েছে। যদিও প্রত্যেক বারই পুলিশি তৎপরতায় তারা ধরা পড়ে যায়। জীর্ণ দশা সংলগ্ন জি আর অফিসেরও।
আদালত চত্বরের এই সমস্যার কথা স্বীকার করেছে মহকুমা প্রশাসন। কালনার মহকুমাশাসক সুমিতা বাগচি বলেন, “আদালত চত্বরের পরিকাঠামো উন্নয়ন নিয়ে কথাবার্তা চলছে পূর্ত দফতর ও নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির সঙ্গে।” পাশাপাশি আইনমন্ত্রীর মাধ্যমেও যাতে অর্থ বরাদ্দ হয়, তা নিয়ে পূর্বস্থলী দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক স্বপন দেবনাথের সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানান তিনি। |