|
|
|
|
|
ব্যাঙ্কে ঢিলেঢালা ভাবের জন্য
বাড়ছে ডাকাতি, মত পুলিশের
নিজস্ব সংবাদদাতা • রঘুনাথগঞ্জ |
|
ব্যাঙ্কের শাখাগুলিতে বিমা করানো রয়েছে বলেই নিরাপত্তা ঢিলেঢালা রয়ে গিয়েছে, আর সে কারণেই দুষ্কৃতীরা এত সহজে ব্যাঙ্কের ভিতরে ঢুকে যেতে পারছে বলে মনে করছে পুলিশ। পরপর ব্যাঙ্ক ডাকাতির পরে মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মৃণাল মজুমদার বলেন, “প্রতিটি ব্যাঙ্ক শাখার নামেই বিমা করা রয়েছে। তাই ব্যাঙ্কগুলি নিরাপত্তার ব্যাপারে সেভাবে সতর্ক নয়।” তিনি বলেন, “নিরাপত্তা নিয়ে ব্যাঙ্ক কর্তাদের সঙ্গে জেলা ও মহকুমা স্তরে বহুবার পুলিশ কর্তাদের বৈঠক হয়েছে। আমরা বারবার ব্যাঙ্ক কর্তাদের বলেছি অ্যালার্ম ঘণ্টা ও সিসিটিভি লাগানো দরকার। কিন্তু তা করা হচ্ছে না। নবগ্রাম শাখায় অ্যালার্ম ঘণ্টা থাকলেও তা কাজ করেনি।” তাঁর কথায়, “বিমা করা থাকলেই কিন্তু হয় না। ব্যাঙ্কে এ ধরনের চুরি-ডাকাতির ঘটনায় পুলিশের মাথাব্যথা বাড়ে। আমরা ব্যাঙ্কগুলিকে নিরাপত্তা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে চিঠি পাঠাচ্ছি। কিন্তু ব্যাঙ্ক কর্তারা জানিয়েছেন, তাঁদের সীমাবদ্ধ আর্থিক ক্ষমতায় সব ব্যবস্থা চালু করা সম্ভব নয়। তবু কথাবার্তা চলছে।”
কোনও কোনও ব্যাঙ্ক এমন বাড়িতে ভাড়া নেওয়া হয়েছে, যেখানে নিরাপত্তা যথেষ্ট মজবুত নয়। বরং সেখানে দুষ্কৃতীদের পক্ষে হানা দেওয়া সহজ। নবগ্রামে যেমন একটি দেওয়াল ভেঙেই ব্যাঙ্কে ঢুকে পড়েছিল দুষ্কৃতীরা। এই প্রসঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, “ব্যাঙ্ক যখন ঘর ভাড়া নেয়, তখন পুলিশকে তা নিয়ে কিছু জিজ্ঞাসা করে না। যদি আমাদের পরামর্শ চাওয়া হত, তা হলে নিরাপত্তা নিয়ে আমরা পরামর্শ দিতে পারতাম।”
একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের আঞ্চলিক অধিকর্তা প্রবালকুমার মৈত্র বলেন, “বড় বড় শাখাগুলিতে সিসিটিভি লাগানো হয়েছে। পোক্ত দরজাও লাগানো হয়েছে। কিন্তু গ্রামীণ শাখায় নিরাপত্তার অবস্থা তেমন বাড়েনি। তবে জেলার সমস্ত শাখার ম্যানেজারকে সতর্ক হতে বলেছি। তবে সেই সব শাখাই বিমা করা রয়েছে।” ডাকাতির ঘটনা সব থেকে বেশি ঘটেছে বঙ্গীয় গ্রামীণ বিকাশ ব্যাঙ্কে। ওই ব্যাঙ্কের আঞ্চলিক অধিকর্তা নিখিলেশ মিত্র বলেন, “নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলতে প্রতিটি শাখা প্রবন্ধককে বলা হয়েছে ব্যাঙ্কের ভবনের দরজা জানলাগুলো মজবুত করতে। প্রতিটি শাখায় কোলাপসিবল দরজাগুলি বসাতে হবে। তা ছাড়া পুলিশকে বলা হয়েছে সতর্ক থাকতে। তবে সিসিটিভি-র ব্যবস্থা করা যায়নি।’’
কৃষি সমবায় ব্যাঙ্কগুলোতে অবশ্য এইটুকু নিরাপত্তা ব্যবস্থাও করা যায়নি। সাগরদিঘির হরহরি কৃষি সমবায় ব্যাঙ্কটি গ্রামের এক প্রান্তে। সেখানে গত নভেম্বরে ৪ লাখ টাকা নিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। ব্যাঙ্কের ম্যানেজার ফরিদউদ্দিন শেখ বলেন, “জেলা সমবায় ব্যাঙ্কের পরামর্শ মতো একটি ভল্ট বসানো হয়েছে। তবে নৈশপ্রহরীর কোনও ব্যবস্থা করা যায়নি।” সন্ন্যাসীডাঙা কৃষি সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে লুঠ হয় প্রায় চার লক্ষ টাকা। সেখানেও সে ভাবে বদলায়নি নিরাপত্তা কাঠামো। ব্যাঙ্কের ম্যানেজার অরুণ কর্মকার বলেন, “নিরাপত্তা ব্যবস্থা সেভাবে বাড়ানো যায়নি। ভল্টটি শক্তপোক্ত করা হলেও রাত পাহারার কোনও ব্যবস্থা নেই। তবে ব্যাঙ্কের আর্থিক লেনদেন চলছে আগের মতোই।”
সুতির বিধায়ক ইমানি বিশ্বাস বলেন, “বারবার ডাকাতির ঘটনায় এলাকার আইনশৃঙ্খলা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশ পরিচয় দিয়ে তারা গ্রামে ঢুকছে।” আহিরণের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রূপারানি হালদার বলেন, “ব্যাঙ্কে ডাকাতির চেষ্টা হলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠে যায়।” তাঁর কথায়, “সিসিটিভি ও অ্যালার্ম লাগানো এমন কিছু ব্যায়বহূল নয়। কেন সেগুলি চালু হচ্ছে না, জানি না।” |
|
|
|
|
|