পূর্ব কলকাতা: লেকটাউন, বারাসাত
সঙ্কটে সেতু
বিপজ্জনক পারাপার
রেলিং ভেঙে গিয়েছে। তৈরি হয়েছে অসংখ্য গর্ত। প্রতি দিন চার-পাঁচটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ বারাসত ২ নম্বর ব্লকের এই মাটিয়াগাছা সেতু ব্যবহার করেন। পারাপার করে স্কুলের ছাত্রছাত্রীরাও। অসতর্ক হয়ে নীচের নোয়াই খালে পড়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। অভিযোগ, সেচ দফতর দীর্ঘ দিন এই কাঠের সেতুটির ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ করেনি।
রাজারহাট চৌমাথা থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ২১১ নম্বর বাস রাস্তায় লাঙলপোতায় নোয়াই খালের উপরে রয়েছে এই মাটিয়াগাছা সেতু। বারাসত ২ নম্বর ব্লকের কীর্তিপুর ২ নম্বর পঞ্চায়েতের মাটিয়াগাছা, কামদুনি, খাসপুর, মদনপুর, লাঙলপোতা, গলাসিয়া প্রভৃতি গ্রামগুলির সঙ্গে রাজারহাট ব্লকের নানা এলাকার যোগাযোগ মূলত এই সেতুর উপরে নির্ভরশীল। দোকান-বাজার, স্কুল, ব্যাঙ্ক থেকে বাস ধরা সব কিছুর জন্যই কয়েক হাজার মানুষকে রাজারহাট ব্লকে যেতে এই সেতু পার হতে হয়।
কিন্তু কাঠের সেতুটির দীর্ঘ দিন বেহাল অবস্থা। প্রায় একশো ফুট লম্বা ও আট ফুট চওড়া সেতুটি খালের মধ্যে পোঁতা কাঠের খুঁটির উপরে তৈরি। দু’দিকে আরও এক সারি খুঁটির সঙ্গে সেতুটিকে কাঠের সরু পাটাতন দিয়ে বাঁধা হয়েছে। পথচারী ছাড়াও এই সেতু দিয়ে সাইকেল, মোটরসাইকেল, রিকশা এবং ভ্যানরিকশা চলাচল করে। কিন্তু সেতুটির বেশ কয়েকটি জায়গায় কাঠ পচে গিয়ে গর্ত তৈরি হয়েছে। রেলিঙের একাংশ ভেঙে পড়েছে। তা ছাড়া দু’পারে কোনও আলোর ব্যবস্থাও নেই। কিন্তু গভীর রাত পর্যন্ত এই সেতু দিয়ে পারাপার চলে। ফলে রাতে এলাকার মানুষের খুবই অসুবিধা হয়। বেহাল অবস্থা খুঁটিগুলিরও।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেতুটির অবস্থা এতই খারাপ যে মালবোঝাই গাড়ি উঠলেই সেতুটি কাঁপতে শুরু করে। গর্তে পা ঢুকে অনেকের আঘাত লেগেছে।
তা ছাড়া একাধিক বার ভারসাম্য হারিয়ে খালে পড়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। সেতুর খুঁটিতে আটকে থাকে বহু আবর্জনা আর কচুরিপানা। ফলে দুর্গন্ধ ছড়ানোর পাশাপাশি মশা-মাছির উপদ্রবও বেড়েছে।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেচ দফতর থেকে মাঝেমধ্যে কাঠ পাল্টে দিয়ে যায়। কিন্তু কাঠের মান খারাপ হওয়ায় তা দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
সেচ দফতরের আরবান ড্রেনেজ ডিভিশনের এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অমিয়কুমার বেরা বলেন, “নোয়াইয়ের উপরের সব কাঠের সেতুর মেরামতির প্রয়োজন। অর্থের অভাবে কাজ হচ্ছে না। বছরে এক বার খাল পরিষ্কার করা হয়। এ বারের কাজ হয়ে গিয়েছে। অর্থ এলে সেতুর মেরামতি ও খাল সাফাইয়ের কাজ করা হবে। দ্রুত কিছু করার চেষ্টা করছি। তা ছাড়া একটি নতুন দু’লেনের পাকা সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে।”

ছবি তুলেছেন অর্কপ্রভ ঘোষ




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.