২০-২৫ বছর আগে নবান্নের মাস মানেই ছিল ‘ডাং-গুলি’ খেলার মরসুম। ভুরিভোজের পাশাপাশি নবান্নের অপরিহার্য অঙ্গ ছিল ডাং-গুলি। গ্রাম বাংলার এই খেলা এখন চর্চার অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে। এটি মূলত ছেলেদের খেলা। সাধারণত এই খেলা দুই ধরনের। একটি দলগত, অন্যটি একক। প্রথমটির নাম ‘বাড়ি-দুরি’। এলাকা ভেদে ‘মনা-দোনা।’ দ্বিতীয়টি ‘ভজা-ভজি’। এলাকা ভেদে ‘খাটা-খাটি’। এই খেলায় রয়েছে ক্রিকেটের ছোঁয়া। এখানে ব্যাটের বদলে ব্যবহৃত হয় দুই প্রান্ত সুচালো ১৮\২০ ইঞ্চি লম্বা লাঠি। উইকেটের মতো এক দিকে পোঁতা হয় ছোট লাঠির চৌকো ঘর। দলগত খেলায় দু’টি দলে দলে ৮-১০ জন করে থাকেন। প্রথম দল যখন চৌকো ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে ডাং-এর গর্তে গুলি রেখে সামনের দিকে ছুঁড়ে দেন দ্বিতীয় দলের ছেলেরা সেই গুলি লুপে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন অবস্থানে দাঁড়িয়ে থাকেন। লুপে নিতে পারলেই যিনি গুলি ছুঁড়েছিলেন তিনি আউট হয়ে যান। |
যদি মাটিতে পড়ে যায় তা হলে গুলি ছুঁড়ে চৌকো ঘর স্পর্শ করাতে পারলেও আউট হতে হয়। এটাও করতে না পারলে তখন গুলির এক দিকে আঘাত করে শূন্যে তুলে ডাং-এর সাহায্যে দূরে পাঠানো হয়। তার পরে সেই গুলি থেকে চৌকো ঘর পর্যন্ত পায়ে বাড়ি, দুরি, থেরি, চাল, চম্পা, ঢেক, লঙ্কা কিংবা মোনা, দোনা, তেনা, চারা, মাচা, ছৈ, ঘৈ পর্যন্ত ডাং দিয়ে মাপা হয়। সেই অনুযায়ী দান চালেন খেলোয়াড়। যেমন বাড়ি বা লঙ্কাতে মাপ শেষ হলে যথাক্রমে পায়ে ও চোখের উপরে গুলি রেখে ডাং-এর আঘাতে ফের দূরে পাঠিয়ে মাপ শুরু হয়। ক্রিকেটের শতরানের মতো এখানেও ১০০ থেকে ৮০ ডাং-এ এক ‘গজা’ ধরা হয়। এই ভাবে খেলার শেষে দুই দলের সংগৃহীত গজার সংখ্যা অনুযায়ী এক জনকে বিজয়ী বলে ঘোষণা করা হয়।
খাটাখাটি খেলাটিতেও এক একটি দলে ৮-১০ জন করে থাকেন। তারা ডাং-এর উপরে গুলি রেখে ক্রমাগত আঘাত করে। গুলি মাটিতে পড়ে গেলে ফের এক বার তার সুচালো অংশে আঘাত করে একই প্রক্রিয়া অবলম্বন করেন। যিনি যতবার ডাং-এর সঙ্গে গুলি স্পর্শ করাতে পারেন তাঁর তত পয়েন্ট হয়। পয়েন্ট অনুযায়ী এক জন খেলোয়াড় তাঁর নিকটতম পয়েন্ট সংগ্রহকারীকে ছাপানোর অধিকারী হন। খাটানোর অর্থ হল, দু’টি ইট বা মাটির গর্তের উপরে গুলি বসিয়ে তার নিচে ডাং দিয়ে দূরে ছুড়ে দেন প্রথম জন। তার নিকটতম পয়েন্ট সংগ্রহকারী গুলি লুপে কিংবা ছুড়ে ইট বা মাটির গর্ত স্পর্শ করাতে পারলেই প্রথম জন আউট হয়ে যান। তখন দ্বিতীয় জন তাঁর নিকটতম পয়েন্ট সংগ্রহকারীকে খাটানোর সুযোগ লাভ করেন। |
লুপতে কিং বা গুলি ছুড়তে লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে পয়েন্ট অনুযায়ী গুলির সুচালো অংশ আঘাত করতে করতে দূরে পাঠানো হয়। প্রতিপক্ষকে চোখে কিংবা মাথার উপরে গুলি নিয়ে ইট বা গর্তের কাছে পৌঁছে দিতে হয়। অসাবধানতায় গুলি মাটিতে পড়ে গেলে ফের পয়েন্ট অনুযায়ী গুলি দূরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এক কালে চুটিয়ে ডাংগুলি খেলেছেন ময়ূরেশ্বরের নাসিম আমেদ, লাভপুরের সুরেশ মণ্ডলরা। তাঁদের কথায়, “এক দিকে ক্রিকেটের দাপট অন্য দিকে সরকারি স্বীকৃতির আভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে এই খেলা। চর্চা না হলে পরবর্তী প্রজন্ম জানতেই পারবে না এই খেলার কথা।”
|
ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল আয়োজিত এবং বীরভূম জেলা ক্রীড়া সংস্থার পরিচালনায় ২৬ ও ২৭ নভেম্বর সিউড়িতে ক্রীড়া সংস্থার মাঠে হয়ে গেল অনূর্ধ্ব ১৭ বাংলাদেশের জাতীয় দল ও বাংলা একাদশের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ। প্রথম ইনিংসে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ ৬৮ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩১৪ রান করে। বাংলা একাদশ ব্যাট করতে নেমে ১৬৩ রানে অল আউট হয়ে যায়। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলা একাদশ কোনও উইকেট না হারিয়ে ১০ রান করে। এর পরে দু’পক্ষই আলোচনা করে খেলা সমাপ্ত করে। জয়ী ঘোষণা করা হয় বাংলা দেশকে। ম্যান অফ দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছেন জয়ী দলের অধিনায়ক মেহেদি হাসান। তিনি ১৬৭ বলে ১৩০ রান করে নট আউট থাকেন। দু’দিনের খেলায় হাজির ছিলেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি তথা জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা, সাংসদ রামচন্দ্র ডোম, সিউড়ির পুরপ্রধান উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গলের যুগ্ম সম্পাদক বিশ্বরূপ দে, বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনের শিক্ষা ও ক্রীড়া অধিকর্তা তারেক আনোয়ার, রাজ্য জেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক কল্যাণ ঘোষাল প্রমুখ।
|
বীরভূম জেলা ক্রীড়া সংস্থার পরিচালনায় এবং সাঁইথিয়া স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের ব্যবস্থাপনায় হয়ে গেল জেলা আন্তঃক্লাব লিক কাম নক আউট ফুটবল প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতায় সাঁইথিয়া স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনকে ১-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বোলপুর ইয়ং টাউন ক্লাব। সাঁইথিয়া কামদাকিঙ্কর স্টেডিয়ামে ২৩ নভেম্বর ওই খেলা হয়। ওই দিনের খেলায় উপস্থিত ছিলেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি বিদ্যাসাগর সাউ, সম্পাদক সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, ক্রীড়াবিদ শম্ভুনাথ চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। দুই দলই রাজ্য স্তরের প্রতিযোগিতায় যোগ দেবে বলে ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
|
ময়ূরেশ্বরের লোকপাড়া প্রতিবাদ ক্লাব পরিচালিত মকর্দ্দম হোসেন স্মৃতি স্বর্ণ ও রৌপ্য পদক নক আউট ফুটবল প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হল মালদহ জনি এন্টার প্রাইজ। তারা পাঁচথুপি মা শ্মশানকালী ক্লাবকে সাডেন ডেথ-এ ১-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ২৭ নভেম্বর স্থানীয় স্কুল মাঠে ওই খেলা হয়। ম্যান অফ দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছেন মালদহের প্রসূন চট্টোপাধ্যায়। পাঁচথুপির সুনীল মাড্ডি ম্যান অফ দ্য সিরিজ নির্বাচিত হয়েছেন। প্রচলিত রীতি অনুযায়ী ওই দিনই এলাকার প্রাক্তন দুই ফুটবলার ধীরেন্দ্রনাথ পাল এবং দেবীপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়কে সম্বর্ধনা জানানো হয়। ওই দিনের খেলা দেখতে মাঠে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি অন্নপূর্ণা মুখোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ অপূর্ব মণ্ডল, ময়ূরেশ্বর ২ ব্লকের বিডিও বাবুলাল মাহাতো, নেহেরু যুব কেন্দ্রের জেলা সমন্বয়ক শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়, ময়ূরেশ্বর ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও সহ-সভাপতি যথাক্রমে বিনয় সাহা এবং জটিল মণ্ডল, ওই পঞ্চায়েত সমিতির দুই কর্মাধ্যক্ষ চন্দ্রনীল ঘোষ, নিতাইপদ ঘোষ-সহ বিশিষ্টজনেরা।
|
রামপুরহাটের খরুণ স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ৮ দলীয় নক আউট ফুটবল প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলা হল ২৭ নভেম্বর। ওই খেলায় আমোদপুর প্লেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনকে টাইব্রেকারে ৭-৮ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সাঁইথিয়া স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন। ম্যান অফ দ্য সিরিজ নির্বাচিত হয়েছেন সাঁইথিয়ার রাজীব দত্ত। আমোদপুরের কুলজিৎ খট্টিক নির্বাচিত হয়েছেন ম্যান অফ দ্য ম্যাচ। ওই দিনের খেলায় উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, খরুণ পঞ্চায়েতের প্রধান গীতা লেট, বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ উমাকিঙ্কর চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ।
|
২৭ নভেম্বর সিউড়িতে স্বদেশী বাজার ক্যারম কমিটি আয়োজিত ৬৪ দলের সারা বাংলা দ্বৈত ক্যারম প্রতিযোগিতায় নলহাটির চাঁদ-মোহন গ্রুপকে ১৩\২৯ পয়েন্টে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আসানসোলের সাদ্দাম-টিঙ্কু গ্রুপ। এই খেলা দেখতে মাঠে উপস্থিত ছিলেন পুরপ্রধান উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের সদস্য মিহির মণ্ডল প্রমুখ।
|
• ২৪ নভেম্বর জেলা প্রাথমিক স্কুল ক্রীড়া সংস্থার খয়রাশোল দক্ষিণ চক্রের বার্ষিক ক্রীড়া কমিটির পরিচালনায় স্থানীয় টামড়া প্রাথমিক স্কুলের মাঠে অনুষ্ঠিত হল ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। ৫৮টি প্রাথমিক স্কুল ও ১৮টি শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের ১৫৭ জন প্রতিযোগী ৩৮টি ইভেন্টে যোগ দিয়েছিল। ওই প্রতিযোগিতা থেকে বাছাই করা ৪২ জন প্রতিযোগী মহকুমা স্তরের প্রতিযোগিতায় যোগ দেবে।
• ২৫ নভেম্বর বীরভূম জেলা প্রাথমিক স্কুল ক্রীড়া সংস্থার দুবরাজপুর চক্রের বার্ষিক ক্রীড়া কমিটির পরিচালনায় স্থানীয় কুলেকুঁড়ি মাঠে অনুষ্ঠিত হল বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। স্থানীয় ৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং দুবরাজপুর পুর এলাকার ৮৫টি প্রাথমিক স্কুল ও ১৮টি শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের ২৫৮ জন ছাত্রছাত্রী ওই প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়েছিল। ৩৮টি ইভেন্টের ৪৪ জন সেরা প্রতিযোগী মহকুমাস্তরের প্রতিযোগিতায় যোগ দেবে বলে উদ্যোক্তাদের তরফে জানানো হয়েছে। |