বিক্ষোভের আগুন তেহরানের ব্রিটিশ দূতাবাসে।
আজ বিকেলে মিছিল করে আসা একদল কট্টরপন্থী ইরানি ছাত্র ঢুকে পড়ে ব্রিটিশ দূতাবাস চত্বরে। ইউনিয়ন জ্যাক নামিয়ে ফেলে নিজেদের পতাকা তোলে তারা। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় দূতাবাসের গাড়ি। জানলা দিয়ে ছুড়ে ফেলা হয় কাগজপত্র। ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতের বাড়ির সামনেও প্রতিবাদীদের জমায়েত হয়েছে বলে সরকারি টিভি জানিয়েছে। আবার অন্য একটি সূত্রের খবর, দূতাবাস কর্মীদের আবাসন চত্বরে হানা দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। এমনকী দূতাবাসের ছ’জন কর্মী বিক্ষোভকারীদের হাতে বন্দি হয়েছেন বলেও প্রথমে শোনা গিয়েছিল। যদিও সংবাদসংস্থা এএফপি-র খবর, দূতাবাসের এক কর্মীই তাদের জানিয়েছেন যে তাঁরা সকলে সুরক্ষিত আছেন। তা সত্ত্বেও সঠিক পরিস্থিতি কী, রাত পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। অবস্থা দ্রুত আয়ত্তে আনতে তেহরানের কাছে আর্জি জানিয়েছে উদ্বিগ্ন লন্ডন। |
দিন কয়েক আগেই ইরানের উপরে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ‘সন্দিহান’ আমেরিকা, ব্রিটেন ও কানাডা। দু’দিন আগে ইরানের পার্লামেন্টে একটি বিল পাশ হয়। ব্রিটেনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক কাটছাঁট করার কথা বলা হয় ওই বিলে। এই পরিস্থিতিতে আজ তেহরানের কোলহক গার্ডেনে ব্রিটিশ দূতাবাসের সামনে মিছিল করে হাজির হন প্রতিবাদীরা। রাস্তায় পোড়ানো হয় ইউনিয়ন জ্যাক। স্লোগান ওঠে, ‘ইংল্যান্ডের মৃত্যু চাই!’ অনেকেরই হাতে ছিল ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানী মজিদ শাহরিয়ারির ছবি। গত বছর আততায়ীর হামলায় তিনি নিহত হওয়ার পরে ওই হত্যাকাণ্ডে ইজরায়েল ও ব্রিটেনের গুপ্তচরদের হাত আছে বলে দাবি করেছিল ইরান।
আজ ব্রিটিশ দূতাবাস বন্ধ করে দেওয়ার দাবি তুলে বিক্ষোভকারীরা বলেন, ওই দূতাবাস ‘গুপ্তচরের আস্তানা’। ১৯৭৯-এ একই ভাবে তেহরানের মার্কিন দূতাবাসের দখল নেয় জঙ্গিরা। তখন মার্কিন দূতাবাস সম্পর্কেও একই কথা বলে তারা। মার্কিন দূতাবাসে সে বার জঙ্গিদের হাতে ৪৪৪ দিন ধরে বন্দি হয়ে ছিলেন ৫২ জন। তার পর থেকেই ওয়াশিংটন ও তেহরানের কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। মার্কিন দূতাবাস দখলের এই ঘটনার ঠিক আগে গণবিদ্রোহের মুখে ক্ষমতা ছাড়েন পশ্চিমী-ঘনিষ্ঠ ইরানের শাহ (রাজা) মহম্মদ রেজা পহলভি। দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী হন ধর্মগুরু আয়াতোল্লা খোমেইনি। আমেরিকা ওই বিদ্রোহ দমনের চেষ্টা চালানোয় ইরানে মার্কিন-বিরোধী ক্ষোভ বেড়েছিল। আজকের ঘটনায় ১৯৭৯-র ছায়া দেখছেন অনেকেই। |