সিপিএমের লোকাল কমিটির সম্মেলন চলার সময়েই ঠিক বাইরে বিক্ষোভ দেখানো হল। শনিবার এই সম্মেলনে ভোটাভুটির পরে বগুলা লোকাল কমিটির ১১ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তবে সম্পাদক নির্বাচন করা যায়নি, প্রাক্তন মন্ত্রী বিনয় বিশ্বাসকে আহ্বায়ক করে সম্মেলন শেষ করতে হয়। তবে নতুন কমিটিতে কোনও মহিলা সদস্য নেই। পরে অবশ্য সর্বসম্মতিক্রমেই হাঁসখালি জোনাল সম্মেলনের ১৩ জন প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন। জেলা সম্পাদক আশু ঘোষ বলেন, “পরবর্তীকালে বগুলা লোকাল কমিটির সম্পাদক নির্বাচন করা হবে। সেই সঙ্গে ওই কমিটিতে কোনও মহিলা সদস্যকেও নেওয়া হবে।”
সম্মেলনে সভাপতি মণ্ডলী ছিলেন বিনয়বাবু, বাপ্পা সেনগুপ্ত এবং বিষ্ণু বিশ্বাস। হাঁসখালি জোনাল কমিটির সদস্য বিনয়বাবু বলেন, “সম্মেলন ঠিকঠাক ভাবেই হয়েছে। কিন্তু বাইরে যাঁরা গণ্ডগোল করেছেন তাঁরা আমাদের দলের কেউ নন। আমাদের দলের রাজনীতি সম্পর্কে তাঁদের কোনও ধারণাই নেই।” তিনি বলেন, “দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ীই ভোটাভুটি হয়েছে। নতুন কমিটিও তৈরি হয়েছে।” সম্মেলনের পর্যবেক্ষক প্রাক্তন মন্ত্রী নয়ন সরকারের মত, “সম্মেলন চলাকালীন বাইরে যাঁরা গণ্ডগোল করছিলেন, তাঁদের কেউ বাইরে থেকে নিয়ে এসেছিলেন কি না, তা আমরা জেলা কমিটির তরফ থেকে খতিয়ে দেখছি। প্রয়োজনে ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।” তবে তিনিও দাবি করেন, “যাঁরা গণ্ডগোল করেছেন, তাঁরা সরাসরি আমাদের দলের সঙ্গে যুক্ত নন।”
দলীয় সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, ২০১০ সালে সদস্যপদ নবীকরণ করার পরে বগুলা লোকাল কমিটির অধীনে সদস্য সংখ্যা ছিল ১২৯ জন। তার মধ্যে ৩৩ জন নতুন তৈরি হওয়া গাজনা ও ময়ূরহাট ১ ও ২ গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে তৈরি হওয়া লোকাল কমিটিতে চলে গিয়েছেন। ২ জনকে বহিষ্কার করা হয়। লেভি না দেওয়া এবং অসুস্থতার কারণে দলের বাইরে আরও ১৫ জন। বাকি ৭৯ জনের মধ্যে ৭০ জন ওই দিন সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে শুরু থেকেই উত্তেজনা ছিল। বিকেলে নতুন কমিটির ৯ জনের একটি তালিকা জমা পড়ার পরেই গণ্ডগোল শুরু হয়ে যায়। আরও ৬ জনের নামের প্রস্তাব আসে। তখনই প্রস্তাব দেওয়া হয় ভোটাভুটির। এর আগে এই লোকাল কমিটিতে সেই ২০০১ সালে এক জন প্রার্থীর জন্য ভোটাভুটি হয়েছিল। তারপর আবার ভোটাভুটিতেই নির্বাচিত হলেন এই দিনের ১১ সদস্য। বিদায়ী সম্পাদক ভবেশ বাগচি ভোটাভুটিতে হেরে যান। তিনি অবশ্য বলেন, “সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করার মতো শারীরিক সক্ষমতা আমার আর নেই। তাই আমার নাম তালিকাতে থাকলেও আমিই আর থাকতে চাইনি।” ভোটাভুটির পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়। আশুবাবুর কথায়, “ওই সম্মেলন চলাকালীন যাঁরা বাইরে গণ্ডগোল করেছিলেন, তাঁদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। নয়নবাবু রিপোর্ট দিলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |