নৈহাটি
রাস্তার ধারে জঞ্জাল, নিরুপায় পুর কর্তৃপক্ষ
রাতের অন্ধকারে লুকিয়ে কখনও রাস্তার ধারে, কখনও ফাঁকা জমি বা পরিত্যক্ত জায়গায় শহরের ময়লা ফেলতে হচ্ছে নৈহাটি পুরসভাকে। কেননা, পুরসভার নিজস্ব ময়লা ফেলার জায়গা নেই। পুরসভার এই ভূমিকায় বিরক্ত বহু বাসিন্দাই। তাঁরা প্রতিবাদও উঠছে। কিন্তু সুরাহা হচ্ছে না।
জঞ্জাল অপসারণ নিয়ে তাঁরা যে নাজেহাল তা স্বীকার করেছেন নৈহাটির পুরপ্রধান তৃণমূলের ধীলন সরকার। তিনি বলেন, “জঞ্জাল ফেলার জন্য জমি কিনতে চেয়ে পাইনি। এখন জঞ্জাল ফেলতে গেলেও লোকের তাড়া খেতে হয়। তাই লুকিয়েই জঞ্জাল ফেলতে হচ্ছে। যে ভাবে বসতি বাড়ছে, তাতে এর পরে কী হবে জানি না।”
বস্তুত, জঞ্জাল, পানীয় জল, নিকাশি সমস্যা নিয়ে পুরসভার ঘুম ছুটেছে। পানীয় জলের পাইপ লাইন বসানো নিয়ে ইতিমধ্যেই যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে। নিকাশি সমস্যা মেটাতে ভুগর্ভস্থ পয়ঃপ্রণালীর পরিকল্পনা হলেও ৩১টি ওয়ার্ডের জন্য ৪টি পাম্পিং স্টেশনের জায়গার ব্যবস্থা করতে পারেনি পুরসভা।
কিন্তু পুরসভার সবচেয়ে বড় সমস্যা জঞ্জাল। অন্য পুরসভাগুলির মতো নৈহাটিতেও কঠিন বর্জ্য নিষ্কাশন প্রকল্প হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও প্রতিবন্ধকতা সেই জায়গাই। গঙ্গার ধার থেকে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের আগে পর্যন্ত পুর এলাকায় লোকসংখ্যা ও ঘরবাড়ি যে হারে বেড়েছে, তাতে জঞ্জালের চাপ বেড়েছে। কমেছে জঞ্জাল ফেলার জায়গা। পুরসভার পক্ষ থেকে বাড়ি বাড়ি ঘুরে ময়লা সংগ্রহ করা হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু তা ফেলা হচ্ছে রাস্তার ধারে বা কারও জমিতে বা পরিত্যক্ত জায়গায়।
রাস্তার ধারে ফেলে রাখা আবর্জনার স্তূপ।-নিজস্ব চিত্র।
বাসিন্দাদের বক্তব্য, রাস্তার ধারে ময়লার স্তূপ দেখতে তাঁরা অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছেন। জোরে হাওয়া দিলে সেই ময়লা উড়ে রাস্তায় চলে আসে। বাড়িতেও ঢোকে। মাঝেমধ্যে আবর্জনা গঙ্গাতেও ফেলা হয়। এ থেকেও দূষণ ছড়ায়। আর, সে জন্য পুরসভাই দায়ী বলে তাঁদের অভিযোগ।
বছর পাঁচেক আগে বামফ্রন্ট শাসিত নৈহাটি পুরসভা লাগোয়া পঞ্চায়েত এলাকায় ফাঁকা জায়গা কিনে আবর্জনা জমিয়ে তা থেকে সার তৈরির পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি। গত বছর পুর নির্বাচনে বামেদের হারিয়ে তৃণমূল বোর্ড গঠন করে। জঞ্জাল থেকে সার তৈরির বিষয়টি নিয়ে নতুন বোর্ড উদ্যোগী হয়। পুর এলাকার মধ্যেই জমি খোঁজা শুরু হয়। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, গোড়ার দিকে দু’-একটি জমির সন্ধান মিলেছিল। কিন্তু জঞ্জাল জমিয়ে তা থেকে সার তৈরির জন্য জমি কেনার কথা শুনে বাসিন্দারাই আপত্তি তোলেন। পুরসভার সাফাই-কর্মীরা জানিয়েছেন, জঞ্জাল ফেলতে গিয়ে খুঁজতে হয় কারও নীচু জমি উঁচু করতে হবে কী না। অথবা পরিত্যক্ত জায়গা আছে কি না। না হলে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে-সহ অন্য রাস্তার ধারে ফাঁকা জায়গা দেখে ফেলতে হয়। সবচেয়ে সমস্যা কুকুর বা বিড়াল জাতীয় প্রাণীর মৃতদেহ নিয়ে। আগে সেটি ফেলে তার উপরে জঞ্জাল চাপা দিতে হয়। এক জায়গায় বেশি জঞ্জাল ডাঁই হয়ে গেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিক বলেন, “জঞ্জাল নৈহাটির জ্বলন্ত সমস্যা। কী ভাবে এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে শহরকে পরিচ্ছন্ন আর স্বাস্থ্যকর রাখা যায়, তার জন্য আমরা ভাবছি। রাস্তায় ময়লা ফেলার অভ্যাসটা বন্ধ করতে হবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.