|
|
|
|
দুষ্কৃতী ধরতে গিয়ে আক্রান্ত পুলিশকর্মী |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কোন্নগর |
সাদা পোশাকে দুষ্কৃতী ধরতে গিয়েছিলেন দুই পুলিশকর্মী। তাঁদের মারধর করে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। রবিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির উত্তরপাড়া থানা এলাকার বারুজীবীতে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জখম কানাইপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ এবং অন্য এক অফিসারের চিকিৎসা করানো হয় হাসপাতালে। পরে এসডিপিও (শ্রীরামপুর) রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় এবং উত্তরপাড়া থানার আইসি অসিত সাউ বিশাল বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। এলাকায় তল্লাশি চালানো হয়। তবে, রাত পর্যন্ত ওই দুষ্কৃতীরা ধরা পড়েনি।
জেলা পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী বলেন, “নির্দিষ্ট সূত্রে খবর পেয়ে দু’জন পুলিশ অফিসার সাদা পোশাকে এক দুষ্কৃতীকে ধরতে গিয়েছিলেন। দুষ্কৃতীরা দলে ভারি ছিল। পুলিশের সঙ্গে তাদের ধ্বস্তাধ্বস্তি হয়। দুষ্কৃতীরা পুলিশের নাগাল এড়িয়ে পালিয়ে যায়। তাদের ধরার চেষ্টা চলছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ কানাইপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ সঞ্জয় চক্রবর্তী এবং এক অফিসার সদানন্দ সামন্ত বারুজীবীতে যান শুভ্র ব্রহ্ম নামে এক দুষ্কৃতীকে ধরতে। তার বিরুদ্ধে একাধিক অসামাজিক কাজের অভিযোগ আছে পুলিশের খাতায়। দুষ্কৃতীরা দলে ভারি ছিল। দুই অফিসার তাদের কাবু করতে পারেননি। পুলিশকে মারধর করে শুভ্রকে নিয়ে পালিয়ে যায় অন্য দুষ্কৃতীরা। সঞ্জয়বাবুর হাতে চোট লাগে। সদানন্দবাবুও জখম হন। তাঁদের উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়।
দিনে-দুপুরে পুলিশকর্মীদের উপরে দুষ্কৃতী হামলায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। বারুজীবী-সহ আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকায় দুষ্কৃতীদের বাড়বাড়ন্ত লেগেই থাকত এক সময়ে। মূলত হুব্বা শ্যামল এবং রমেশ মাহাতোর সাঙ্গোপাঙ্গরাই দাপিয়ে বেড়াত। হুব্বা শ্যামল খুন হয়েছে বেশ কয়েক মাস হয়ে গেল। রমেশ মাহাতো জেলে। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, এই অবস্থাতেও পুলিশ ওই এলাকার রাশ পুরোপুরি হাতে নিতে পারেনি। ইদানীং রমেশের শাগরেদ শুভ্রই অপরাধমূলক কাজকর্মে নেতৃত্ব দিচ্ছে সেখানে। মাঝেমধ্যে পুলিশ হানা দিলেও কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামবাসীদের অভিযোগ, কারণে-অকারণে হুমকি দেওয়া, তোলা আদায় এখানে সব কিছুই রমরমিয়ে চলে। জমি কেনাবেচা অথবা বাড়ি তৈরি সব কিছুতেই মোটা টাকা তোলা দিতে হয় দুষ্কৃতীদের। পুলিশ তাদের টিকি ছুঁতে পারছে না। এলাকাবাসীর বক্তব্য, পুলিশকেই যদি সকলের সামনে মার খেয়ে ফিরে যেতে হয়, তবে সাধারণ গ্রামবাসীদের অবস্থা সহজেই অনুমেয়। সমাজবিরোধীদের দাপটে কেউ টুঁ শব্দ করার সাহস পান না।
জেলা পুলিশের এক অফিসারের আক্ষেপ, “নিয়মিত ওই এলাকায় পুলিশ হানা দেয়। কিন্তু পুলিশের গাড়ি ঢুকলেই দুষ্কৃতীদের কানে সে খবর পৌঁছে যাচ্ছে। ফলে, পুলিশের নাগাল এড়িয়ে গা-ঢাকা দিচ্ছে দুষ্কৃতীরা। তবে, এলাকায় শান্তি ফেরাতে পুলিশ সব রকম চেষ্টা করবে।” |
|
|
|
|
|