দিল্লির বিধানসভা নির্বাচন হতে এখনও দু’বছর বাকি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী পদের প্রার্থী কে হবেন, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই দ্বৈরথ শুরু হয়ে গিয়েছে বিজেপির অন্দরমহলে। লড়াইয়ে রয়েছেন বাজপেয়ী-ঘনিষ্ঠ বিজয় গোয়েল ও দিল্লি প্রদেশ সভাপতি বিজেন্দ্র গুপ্ত।
রাজনৈতিক কারণেই দিল্লির মসনদের লড়াই সব দলের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। গত তিনটি দফায় দিল্লিতে ক্ষমতায় রয়েছে কংগ্রেস। কিন্তু মূল্যবৃদ্ধি, দুর্নীতির মতো প্রশ্নে দিল্লিতে এখন কংগ্রেস বেশ নড়বড়ে অবস্থায়। স্বভাবতই দিল্লির ক্ষমতা দখল করার স্বপ্ন দেখছে বিজেপি। সেই লড়াইয়ে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে মরিয়া বিজয় গোয়েল। সাংগঠনিক ভাবে তিনি কতটা শক্তি ধরেন, তা প্রমাণ করতে আজ দিল্লিতে একটি সভাও করেন তিনি। নামে অরাজনৈতিক মঞ্চ হলেও সেই সভা যথেষ্ট সফল বলেই বিজেপি শিবিরের খবর। পাশাপাশি দলীয় নেতৃত্বকে গোয়েল এই বার্তাও দিয়ে রাখলেন প্রদেশ সভাপতি নন, দিল্লিতে কংগ্রেস-বিরোধী মুখ আসলে তিনিই।
|
 |
 |
বিজয় গোয়েল |
বিজেন্দ্র গুপ্ত |
|
কিন্তু দলের একাংশের আবার পছন্দ প্রদেশ সভাপতি বিজেন্দ্র গুপ্তকেই। সাংগঠনিক ভাবে দুর্বল বলে অপবাদ থাকলেও সম্প্রতি আডবাণীর রথযাত্রার সমাপ্তি অনুষ্ঠানটি সফল ভাবে সম্পন্ন করে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের নজর টেনেছেন বিজেন্দ্র। ফলে পিছিয়ে থাকতে চাননি বিজয় গোয়েল। দিল্লিতে বিদ্যুতের দামবৃদ্ধির প্রতিবাদে আজ তালকোটরা স্টেডিয়ামে ‘বিজলি আন্দোলন’-এর ডাক দেন তিনি। সেই প্রতিবাদসভায় আশাতীত সাফল্য পেয়েছেন বলে ঘনিষ্ঠ মহলে স্বীকার করেছেন তিনি। তাছাড়া জনসংযোগের প্রশ্নেও তিনি এগিয়ে রয়েছেন। মানুষের কাছে পৌঁছতে দিল্লির পার্কগুলি বেছে নিয়ে নিয়মিত প্রাতঃভ্রমণ করেন গোয়েল। তাঁর আমন্ত্রণে বর্ষীয়ান নাগরিকদের সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন লালকৃষ্ণ আডবাণী, অনন্ত কুমারের মতো নেতারা।
তবে বাজপেয়ী-ঘনিষ্ঠ বিজয়ের প্রতিপত্তি অনেক বেশি ছিল এনডিএ সরকারের আমলে। বাজপেয়ী মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রীও ছিলেন তিনি। এখনও প্রতি বছর বাজপেয়ীর জন্মদিন ঘটা করে পালন করে থাকেন গোয়েল। ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হওয়ায় চাঁদনি চক-সহ দিল্লির ব্যবসায়ী মহলেও যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে গোয়েলের।
বিজেন্দ্র সেই তুলনায় জনসংযোগে পিছিয়ে। সাংগঠনিক ভাবেও কিছুটা দুর্বল। দিল্লি সরকারের বিভিন্ন নীতির বিরুদ্ধে তাঁর সরব হওয়ার কথা থাকলেও এখনও সে ভাবে ছাপ ফেলতে পারেননি তিনি। তবে দিল্লিতে আডবাণীর রথযাত্রার সমাপ্তিসভা সফল করতে সর্বশক্তি উজাড় করে দিয়েছিলেন তিনি। সাফল্য এসেছে। বিজেপির শীর্ষ নেতারা সর্বসমক্ষে প্রশংসা করেছেন বিজেন্দ্রর। বিজেন্দ্রও উজ্জীবিত হয়ে শীলা দীক্ষিত সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামতে চলেছেন। তার আগেই আজ শক্তি প্রদর্শন করে তাঁকে পাল্টা বার্তা দিয়ে রাখলেন গোয়েল।
|