সেনার অনুমতির অপেক্ষায় থমকে জলের লাইনের কাজ
লতা থেকে টালা পর্যন্ত ভূগর্ভে জলের পাইপলাইন পাতার কাজ গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশে আটকে গিয়েছে। তদারকি সংস্থা ‘রাইটস’ জানিয়েছে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের চূড়ান্ত অনুমতি না মেলায় এই অবস্থা। এমনিতেই নানা কারণে কাজে কিছুটা দেরি হয়েছে। এখন তাড়াতাড়ি অনুমতি না-পেলে বরাহনগর-নোয়াপাড়া মেট্রোর কাজও পিছিয়ে যাবে। কারণ, নতুন জলের লাইন চালু না হলে জল সরবরাহের বর্তমান পাইপ বন্ধ করা যাবে না। তাই মেট্রোর কাজও শুরু করা যাবে না।
পাইপ বসানো নিয়ে এই জটিলতা তৈরি হয়েছে ব্যারাকপুর ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় প্রায় ৪০০ মিটার অংশে। পুরসভার তরফে ওই কাজের দেখভাল করছে ‘রাইটস’। সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার পল্লব পাল বলেন, “ওখানে সেনাবাহিনীর জমিতে পাইপ বসাতে হচ্ছে। তাই প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অনুমতি প্রয়োজন। প্রথম পর্যায়ের অনুমতির জন্য ২০১০ সালের এপ্রিল-মে থেকে আট মাস ওখানকার কাজ আটকে যায়। খোদ মুখ্যমন্ত্রীকে জট ছাড়াতে উদ্যোগী হতে হয়। এ বার ওখানে শ’খানেক গাছ কাটতে হবে। তাই ফের অনুমতি দরকার। মাস দুই হল, ওঁদের কাছে ফের আবেদন করা হয়েছে। অনুমতি আসেনি।”
পলতা থেকে গঙ্গার শোধিত জল ভূগর্ভের বহু পুরনো ৪২ ইঞ্চি এবং ৬০ ইঞ্চি ব্যাসের সংযোগ দিয়ে টালায় আসে। প্রস্তাবিত মেট্রোর জন্য বিটি রোডের বিভিন্ন জায়গায় স্তম্ভ গড়তে এমন বেশ কিছু সংযোগ ভাঙতে হবে। তাই পলতা ও টালার মাঝে ২০০৯-এর মে মাসে শুরু হয়েছে নতুন পাইপ পাতার কাজ। এখনকার পাইপ ভূগর্ভে গড়ে প্রায় ৬ ফুট নীচ দিয়ে গিয়েছে। কিন্তু ভূগর্ভের অন্যান্য সংযোগ ব্যবস্থাকে অক্ষুণ্ণ রাখতে নয়া পাইপ বসছে আট মিটার, অর্থাৎ প্রায় ২৬ ফুট নীচ দিয়ে। ব্যাসও হবে কিছুটা বেশি, ৬৪ ইঞ্চি।
মোটা ইস্পাতের পাইপে ফুটো হওয়া এড়াতে তা ঢেকে দেওয়া হচ্ছে ৬ ইঞ্চি পুরু কংক্রিটের চাদরে। জনজীবন যাতে ব্যাহত না হয়, তাই কাজে লাগানো হয়েছে আধুনিক টানেল বোরিং যন্ত্র (টিবিএম)। তা হলে কেন গাছ কাটতে হচ্ছে? পল্লববাবু বলেন, “প্রায় ২২ কিলোমিটার অংশের মধ্যে ৬.৯ কিলোমিটার অংশে উপর থেকে মাটি কেটে পাইপ বসাতে হবে। ক্যান্টনমেন্ট অঞ্চলটি এই অংশের মধ্যে।”
জেএনএনইউআরএম-এর অধীনে নয়া পাইপ বসানোর ৩০৪ কোটি টাকার এই প্রকল্পের মেয়াদ ৩৬ মাস। অর্থাৎ, কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০১২-র মে মাসে। ইতিমধ্যেই কাজ নানা কারণে পিছিয়ে গিয়েছে। কলকাতা পুরসভার চিফ ইঞ্জিনিয়ার (জল) বিভাস মাইতি বলেন, “অনুমতি না আসায় আমরাও চিন্তিত।” মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ও বলেন, “আমরা বলেছি, এর জন্য যত গাছ কাটা হবে, তার চেয়ে বেশি গাছ লাগিয়ে দেব। নীতিগত অনুমতি পেয়েছি। শীঘ্রই চূড়ান্ত অনুমতি পাব বলে আশা করছি।” প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পূর্বাঞ্চলের এক পদস্থ অফিসার বলেন, “আমাদের এস্টেট বিভাগ থেকে বিষয়টি যথাস্থানে জানানো হয়েছে। অনুমতিপত্র পাঠাবেন তাঁরাই।”
জলের লাইন পাতার সঙ্গে যেহেতু মেট্রো-প্রকল্পও জড়িত, রেল মন্ত্রক এবং রাজ্য তাই পুরসভা ও ‘রাইটস’-এর কাছে কাজের অগ্রগতি নিয়ে খোঁজ নিচ্ছে। পুরসভা সূত্রের খবর, এখনও প্রায় এক-চতুর্থাংশ কাজ বাকি। পুরসভা ‘রাইটস’-কে বলেছে, মার্চের মধ্যে কাজ শেষ করতে। ‘রাইটস’ বলেছে, জুনের আগে শেষ হবে না। পাইপ বসানোর পরেও এর সঙ্গে জুড়তে হবে পলতা ও টালার জলাধারকে। পুরসভার এক পদস্থ ইঞ্জিনিয়ার বলেন, “মেট্রোকে বলেছি, ওদের প্রকল্পের জন্য জল সরবরাহের পুরনো সংযোগটি ভাঙা হচ্ছে। পলতা থেকে টালা পর্যন্ত তাই একটি পরিবর্ত সংযোগপথ ওদের দ্রুত গড়ে দিতে হবে।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.