|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৩... |
|
তিনি শুষ্কং কাষ্ঠং পণ্ডিত নন |
বইপোকা |
উপলক্ষের অপেক্ষা করিতে করিতেই বাঙালির কাল কাটিয়া যায়, কাজের কাজ আর করা হইয়া উঠে না। বাজারে এক্ষণে সর্বাপেক্ষা ‘হিট’ উপলক্ষ সার্ধশতবর্ষ, রবীন্দ্রনাথ শতবর্ষের ধার কিঞ্চিৎ মারিয়া দিয়াছেন। কিন্তু মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর যে জন্মজয়ন্তীটি আসিতেছে ডিসেম্বরের ছয় তারিখে, সেটি ‘একশতোত্তরোনষষ্টি’, সাদা বাংলায় ১৫৯তম। কিন্তু এমন দন্তচূর্ণকারী বাংলাটি ব্যবহার করিলাম কেন? আমি করি নাই, নৈহাটির বঙ্কিম-ভবন গবেষণা কেন্দ্র হইতে শাস্ত্রীমহাশয়ের জন্মজয়ন্তী উদ্যাপনের যে আমন্ত্রণপত্রটি সম্প্রতি আসিয়াছে তাহাতেই শব্দটি ব্যবহৃত হইয়াছে। আর এই শব্দের নেপথ্যেই যেন রহিয়া গিয়াছে অধিকাংশ বঙ্গজনের মনে সযত্নে লালিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর ছবিটি। সেই ছবি এক নীরস, গুরুগম্ভীর পণ্ডিতের, যিনি চর্যাপদ ইত্যাদি লইয়া লিখিতেন। প্রায় তিন দশক জুড়িয়া তাঁহার পাঁচ খণ্ডের রচনা-সংগ্রহ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুস্তক পর্ষৎ প্রকাশ করিয়াছে। বঙ্গীয় গ্রন্থসমাজে তাহার সম্পাদনা দৃষ্টান্ত হইয়া থাকিবে। কিন্তু তাহার প্রচ্ছদ হইতে গ্রন্থসজ্জা, কাগজ হইতে মুদ্রণ সর্বত্র সেই ছবির ছায়া। অথচ হরপ্রসাদ কেবল গম্ভীর জ্ঞানের কথা লিখিয়া যান নাই, গভীর বোধের কথাও লিখিয়াছেন। তাঁহার রচনায় আছে এক আশ্চর্য উপভোগ্যতা। সেই সরস ব্যক্তিত্বটিকে মনে রাখিয়া তাঁহার বাংলা ও ইংরাজি রচনাবলি নবরূপে প্রকাশিত হউক, তাঁহার ১৭৫তম জন্মজয়ন্তীকে লক্ষ্য করিয়া। তাহা আসিতে এখনও প্রায় দুই দশক বিলম্ব জানি, তবু কথাটি বলিলাম, কারণ বঙ্গজনের বৎসর হয় আঠারো মাসে! |
|
|
|
|
|