|
|
|
|
সংস্কৃতি যেখানে যেমন |
লিট্ল ম্যাগাজিন |
মফস্সলে অনিয়মিতভাবে লিটল ম্যাগাজিনের প্রকাশ অনিয়মিত ভাবেই হয়ে থাকে। নামে শারদ সংখ্যা বলে প্রকাশিত হলেও বীরভূমের বেশ কয়েকটি লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশিত হয়েছে শারদ উৎসবের পরে। যেমন জয়দেবের কেঁদুলি থেকে প্রকাশিত ‘জয়দেব বার্তা’র। শারদ সংখ্যা সাহিত্য সভার মাধ্যমে দুবরাজপুর আশ্রমে প্রকাশ পেয়েছে গত রবিবার। সুভাষ কবিরাজ সম্পাদিত ওই সাহিত্য পত্রিকাটি ১৭ বছর ধরে চলছে। সিউড়ি থেকে প্রকাশিত হয়েছে রামকৃষ্ণ মণ্ডল সম্পাদিত ‘অবকাশ’ পত্রিকার শারদ অর্ঘ্য সংখ্যাটি। গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ ও ভ্রমণ কাহিনী নিয়ে প্রকাশিত পত্রিকাটি ২২ বছর ধরে চলছে। ওই একই বিষয়ে শারদ সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে সিউড়ির গোপাল চট্টোপাধ্যায়ের সম্পাদনায় ‘আহ্বান’। এই পত্রিকাটি অবশ্য মহালয়ার আগেই প্রকাশিত হয়েছে। বছরে এক বারই প্রকাশিত ওই পত্রিকার বয়স ১৬ বছর।
এ ছাড়া, বীরভূমে শুধুমাত্র মহিলাদের লেখা নিয়ে গত ৫ বছর ধরে দুবরাজপুর থেকে রীনা কবিরাজের সম্পাদনায় প্রকাশিত হচ্ছে ‘আলোর বেণু’ সাহিত্য পত্রিকা। এ বারের উৎসব সংখ্যায় কিছু প্রবন্ধ, গল্প, কবিতা, পত্র সাহিত্য প্রভৃতি ছাপা হয়েছে। প্রচ্ছদ এঁকেছেন সদ্য প্রয়াত শান্তিনিকেতনের আশ্রম কন্যা ও সমাজসেবী বলে পরিচিত শ্যামলী খাস্তগীর। তাঁর একটি খণ্ডাংশ আত্মজীবনী প্রকাশিত হয়েছে। অন্তিম সময়ের ওই লেখাটি তিনি রোগ শয্যায় লিখেছিলেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই লেখাটিতে গাঁধীবাদী মহিশূরের বাসিন্দা সমাজসেবী এম এন সুব্বারাওয়ের কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে শ্যামলীদেবী লিখেছেন, ‘বহু বছর আগে এক ক্যাম্পে চম্বলের ডাকাতরা তাঁর গান শুনে তাঁর কাছে এসে বলে যে, তারা ডাকাতি করে, পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে বেড়াতে বেড়াতে ক্লান্ত। ধরা দিয়ে জেল খেটে চাষবাস করে সাধারণ জীবনে ফিরতে চায়। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে বিনোবাজি ও জয়প্রকাশ নারায়ণের মধ্যস্থতায় সরকারি আমলা ও পুলিশদের রাজি করিয়ে ওই ডাকাতদের জেল থেকে ছাড়িয়ে তাদের চরকা কাটা, সতরঞ্জি বানানোর কাজে লাগানো হয়। ওই ডাকাতদের সঙ্গে সুব্বারাওজি বহু বছর জেলে ছিলেন।’
|
পাঁচালী ছন্দে বীরভূম |
সিউড়ির সাহিত্যপ্রেমী কৃষ্ণকমল রায় দীর্ঘদিন ধরে নানা বিষয়ে লেখালেখি করেছেন। ভ্রমণ, গল্প সংকলন, রম্যকাহিনী, ছড়া এবং লোককথা ও শিশুনাটিকা-সহ ইতিমধ্যে ৮টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত, ‘পুঁথি মালায় স্মরণীয় বরণীয় বীরভূম’ গ্রন্থটি লেখা হয়েছে পাঁচালী ছন্দে। যা পাঠকদের মন কেড়েছে। কয়েকটি বিষয়ে তথ্যের ঘাটতি থাকলেও লেখকের প্রচুর পরিশ্রমের আঁচ পাওয়া যায় ওই গ্রন্থটিতে। লেখক বীরভূমের নামকরণ, নদনদী, সড়ক ও পরিহবণ, পত্র-পত্রিকা, লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গায়ক, সমাজসেবী ইত্যাদি ৫৫টি বিষয়ে আলোকপাত করেছেন।
|
লোক-গীতিকার |
দিনের বেলায় অন্যের দোকানে হিসেবের খাতা সারা। আবার জীবিকার প্রয়োজনে টুকিটাকি চাষের কাজ করতে হয় তাঁকে। সারা দিন এত কিছু করার পরে রাত হলেই বিভিন্ন লোকগান লিখতে বসেন নানুর ব্লকের ব্রাহ্মণডিহি গ্রামের বাসিন্দা গণপতি ঘোষ। এলাকায় তিনি লোক সঙ্গীতের গীতিকার হিসেবে পরিচিত। দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। তবুও পদাবলী কীর্তন লেখার প্রয়োজনে তাঁকে আরও পড়াশোনা করতে হয়। কীর্তনের পালা লিখতে শুরু করেছেন কয়েক বছর আগে। তা শুরু হয়েছে স্থানীয় কীর্তণীয়া রূপালী মণ্ডল, চন্দন মণ্ডল, ব্রজগোপাল অধিকারীর অনুরোধে। তাঁরা জানান, গণপতিবাবুর লেখা রামী চণ্ডীদাস, ভক্ত রঘুনন্দন, চাপাল গোপাল উদ্ধার, ভক্ত হরিদাস প্রভৃতি তিন ঘণ্টার কীর্তন পালা গান শ্রোতাদের মন জয় করেছে। এখনও পর্যন্ত ১০টি’র মতো পদাবলী কীর্তনপালা লিখেছেন তিনি।
তবে গণপতিবাবুর লোকগান লেখা শুরু ভাদু ও পাঁচালি গান দিয়ে। প্রায় ৪৬ বছর আগে পাশের গ্রামের অহিভূষণ লেটের কাছে তাঁর গান লেখার হাতেখড়ি হয়েছিল। লিখতে পারেন বোলান গানও। ভাদু শিল্পী স্থানীয় বগতোড় গ্রামের অমৃত মণ্ডল ও বর্ধমানের শ্রীগ্রামের গৌরহরি মেটের কথায়, “প্রাচীন ধর্মমূলক ঘটনা থেকে বধূ নির্যাতন, পণপ্রথা, বিভিন্ন সমাজ সচেতনতা মূলক গান লিখেছেন গণপতিবাবু। বাজার চলতি যে কোনও গানের সুর বলে দিলে সেই অনুযায়ী লোকগীতি অনায়াসে তিনি লিখে দেন। এখনও পর্যন্ত সাত হাজার লোক গান তিনি লিখেছেন।”
|
সঙ্গীতানুষ্ঠান |
২৯ নভেম্বর পাত্রসায়রের বালসি গ্রামে ধ্রুপদী সঙ্গীতের একটি অনুষ্ঠান হবে। অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে স্থানীয় নাইটিঙ্গেল অ্যাসোসিয়েশন ও মূর্চ্ছনা সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়। মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ অসিত রায় জানান, মঙ্গলবার বিকেল ৫টা থেকে বালসির ব্যাঙ্ক মোড়ের একটি কম্পিউটার হলঘরে ওই সঙ্গীতের আসর বসবে। সারা রাত ধরে চলবে এই অনুষ্ঠান। ধ্রুপদী সঙ্গীতের ঐতিহ্য বিষ্ণুপুর ঘরানার বিশিষ্ট কয়েক জন ও কলকাতার বিশিষ্ট শিল্পীরা উপস্থিত থাকবেন।
|
সাহিত্য সভা |
বিষ্ণুপুর মহকুমা গ্রন্থাগারে গত শনিবার মাসিক সাহিত্য সভা হল। ওই গ্রন্থাগারের সহযোগিতায় এবং একটি সাহিত্য সংস্থার উদ্যোগে এই সাহিত্য সভা শুরু হয়েছে। জানানো হয়েছে, প্রতি মাসের তৃতীয় শনিবার সেখানে সাহিত্য আসর বসবে। প্রথম সভায় কবিতা পাঠ ও আলোচনায় যোগ দেন অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত পণ্ডিত, অনির্বাণ পাল, তুলসিদাস মাইতি, নয়নতারা দে প্রমুখ কবি-লেখকরা।
|
যাত্রাপালা |
বাঙালির উৎসব মানেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থাকবেই। আর গ্রাম বাংলার উৎসবে যাত্রাপালা কিংবা নাটক তো অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। প্রতি বছরের মতো এ বারও মানবাজারের পাথরমুড়াতে রাস উৎসব পালিত হল। সেই সঙ্গে রাসমন্দির চত্বরে যাত্রাপালাও হল। স্থানীয় শিল্পীরাই পালা মঞ্চস্থ করলেন। |
|
|
|
|
|