পুরনো গাড়ি ধরতে ফের হবে অভিযান
লকাতা এবং শহরতলিতে ১৫ বছরের পুরনো বাস, ট্যাক্সি, লরি প্রভৃতি বাণিজ্যিক যানবাহন বাতিলের প্রক্রিয়া আবার শুরু হচ্ছে।
মহানগরের বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে পুরনো গাড়ি বাতিল নিয়ে রাজ্য পরিবেশ দফতরের একটি বিজ্ঞপ্তিকে নির্দেশ হিসেবে জারি করে কলকাতা হাইকোর্ট। ২০০৮ সালের ১৯ জুলাই আদালত নির্দেশ দেয়, কলকাতা মেট্রোপলিটন এলাকায় চলে, এমন সব ১৫ বছরের পুরনো বাণিজ্যিক যানবাহন বাতিল করতে হবে। পরবর্তী ছ’মাস ধরে পাবলিক ভেহিকল্স দফতর ১৫ বছরের পুরনো বাণিজ্যিক গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ও ফিটনেস পরীক্ষা বন্ধ করে দেয়। ফলে, কয়েক হাজার বাস, ট্যাক্সি, লরি বাতিল হয়ে যায়।
কিন্তু হাইকোর্টের ওই নির্দেশ নিয়ে প্রবল আপত্তি জানান তৎকালীন পরিবহণমন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তী। তিনি আরও ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন পরিবহণ দফতরকে সম্পূর্ণ এড়িয়ে গিয়ে পরিবেশ দফতরের একটা বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে হাইকোর্টের নির্দেশ জারি হওয়ায়। সুভাষবাবু পরিবেশ দফতরের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নালিশও করেন। যদিও তাতে বিশেষ কাজ হয়নি। কিন্তু পরিবহণ দফতর তখন হাইকোর্টের রায়কে এককালীন নির্দেশ হিসেবে ব্যাখ্যা করে পুরনো গাড়ি বাতিলের প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়।
অথচ, পরিবেশ দফতরের পক্ষ থেকে ওই নির্দেশের ব্যাখ্যা চেয়ে আবেদন করলে আদালত জানিয়ে দেয়, গাড়ি ১৫ বছরের পুরনো হলেই বাতিল হবে। কিন্তু সেই ব্যাখ্যাও গ্রহণ করেনি পরিবহণ দফতর। এমনকী, সুভাষবাবুর মৃত্যুর পরে রঞ্জিত কুণ্ডু পরিবহণমন্ত্রী হলেও আগের সিদ্ধান্তই বহাল থাকে।
কলকাতা ও শহরতলিতে ১৫ বছরের পুরনো বাণিজ্যিক গাড়ির সংখ্যা বাড়তেই থাকে। অবশ্য ইদানীং পরিবেশ দফতর বা রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ পুরনো গাড়ি বাতিলের ব্যাপারে কোনও ভাবেই উদ্যোগী হয়নি।
কিন্তু পরিবহণসচিব ভগবতীপ্রসাদ গোপালিকা শুক্রবার জানান, পুরনো গাড়ি বাতিল সংক্রান্ত হাইকোর্টের নির্দেশ যত দ্রুত সম্ভব আবার কার্যকর হবে। গোপালিকা বলেন, “হাইকোর্টের নির্দেশে কোনও অস্পষ্টতা নেই। আমাকে কেউ জানায়নি যে, পুরনো গাড়ি বাতিলের প্রক্রিয়া বন্ধ আছে। পাবলিক ভেহিক্লস দফতর নিজস্ব সিদ্ধান্তে এটা করছে। আদালতের নির্দেশে ১৫ বছরের পুরনো বাণিজ্যিক যানবাহন বাতিলের যে প্রক্রিয়া রাজ্য সরকার শুরু করেছিল, তা কোনও ভাবেই বন্ধ করা যায় না। যত দ্রুত সম্ভব ওই প্রক্রিয়া চালু করা হবে।” পরিবহণসচিব বিষয়টি আরও স্পষ্ট করে বলেন, “কলকাতা হাইকোর্টের ওই নির্দেশ অবশ্যই ধারাবাহিক ভাবে প্রতি বছর কার্যকর করতে হবে। প্রতি বছরই বহু গাড়ির বয়স ১৫ বছর পেরোচ্ছে। তাদের তো বাতিল করতেই হবে। শুধু ২০০৮ সালে কিছু গাড়িকে বাতিল করা হল কেন?”
পাবলিক ভেহিক্লস দফতরের সহকারী অধিকর্তা (কারিগরি) আশিস সিংহ বলেন, “পরিবহণ দফতরের যে নির্দেশ আমাদের কাছে আছে, সেটাই কার্যকর করেছি। প্রতি বছর বহু গাড়ির বয়স ১৫ বছর হয়ে যাচ্ছে। আমি নীতিগত ভাবে মনে করি, সেগুলোর রেজিস্ট্রেশন ও ফিটনেস পরীক্ষা বন্ধ করে দেওয়া উচিত।” পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের করা বায়ুদূষণ সংক্রান্ত একটি জনস্বার্থ মামলার জেরে হাইকোর্ট পুরনো গাড়ি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল। সুভাষবাবু এ দিন এ বিষয়ে বলেন, “আদালত অবমাননার এটা একটা প্রকৃষ্ট নমুনা। তবে দেরিতে হলেও যে পরিবহণ দফতর আবার পুরনো গাড়ি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এর জন্য নতুন সরকারকে সাধুবাদ জানাই।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.