অব্যবস্থার অভিযোগ তুলে সোমবার সব্দরনগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। বিএমওএইচকে ঘেরাও করে অভাব-অভিযোগের কথাও বলেছিলেন। আশ্বাস মিলেছিল, এ বার থেকে চিকিৎসক সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে থাকবেন। তবে পরের দিন থেকেই আবার সেই চেনা ছবিটাই ফিরে এল। যদিও এ দিন চিকিৎসক ঘড়ির কাঁটা মিলিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসেছিলেন। তবে রোজকার মতোই তাড়াহুড়ো করে সাড়ে এগারোটা বাজতে না বাজতেই বেরিয়ে যান। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল পর্যন্ত চিকিৎসকের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে থাকার কথা হলেও কাল বিএমওএইচ নিজে আশ্বাস দিয়েছিলেন দুপুর দেড়টা পর্যন্ত চিকিৎসক থাকবেন। তবে চব্বিশ ঘণ্টা পেরোতে না পেরোতেই ফের চিকিৎসককে না পাওয়ায় ক্ষুব্দ তাঁরা। মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সদস্য আরএসপি-র বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “এ দিন চিকিৎসক সময়ে এলেও তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যান। অনেক রোগী এসে ফিরে গিয়েছেন। আমি এ ব্যাপারে বিএমওএইচ-এর সঙ্গে কথা বলেছি।” ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সুব্রত বক্সি বলেন, “এ ব্যাপারে খোঁজ নিচ্ছি।” এ দিন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে চিকিৎসককে না পেয়ে ফিরে আসেন মর্জিনা বিবি ও নকুলেশ্বর মণ্ডল। বলেন, “আমরা গিয়ে দেখি ডাক্তারবাবু নেই। স্বাস্থ্যকর্মীদের সে কথা বলতে গেলে তারা বলে, কাল যাদের সঙ্গে নিয়ে এসে বিক্ষোভ করেছেন, তাদের বলুন হাসপাতালে এসে ওষুধ দিতে।” ফিরোজা বিবি বলেন, “পেটের যন্ত্রনা নিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসেছিলাম। আমাকে নার্স একটু ওষুধ দিয়ে দিল। কিছু ক্ষণের জন্য ব্যাথা কমলেও আবার যন্ত্রনা শুরু হয়। ডাক্তারবাবু স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ছিলেন না।” তাপসী সর্দারের অভিযোগ, “হাসপাতালে কিছুই তো নেই। ডাক্তারের দেখা মেলে না, নার্সকেও সব সময়ে পাওয়া যায় না, অন্য পরিষেবাও অনিয়মিত। অনেক সময়ে গ্রুপ-ডি স্টাফেরাও আমাদের ওষুধ দেয়।” স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সাতটা আবাসন থাকলেও সেথআনে কেউই থাকে না। হাসপাতালের সীমানা বরাবর কোনও দেওয়াল পর্যন্ত তৈরি করা হয় নি। হাসপাতাল প্রাঙ্গণের চার দিক আগাছায় ভরেছে। হাসাপাতাল চত্বরে যে বড় গাছগুলো ছিল রাতের অন্ধকারে সেগুলো ইতিমধ্যেই কেটে নিয়েছে দুষ্কৃতীরা। চিকিৎসক ছাড়াও হাসাপাতালের নার্স, গ্রুপ ডি অ্যাসিস্ট্যান্ট কিংবা সুইপার কেউই সময়ে আসেন না বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দা রাজীব আলম বলেন, “এটি নওদার একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যকেন্দ্র। কিন্তু সরকারি কর্মীদের অবহেলা আর অব্যবস্থার কারণে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এই হাল।” |