মহকুমা হাসপাতালের ক্যান্টিন নিয়ে ফের বিতর্ক শুরু হয়েছে। পুরনো ক্যান্টিনটি সরিয়ে নিতে বলায় ক্যান্টিন মালিক হাসপাতাল চত্বরেই আবার একটি অবৈধ নির্মাণ তৈরি করে ক্যান্টিন চালাতে উদ্যোগী হয়েছেন বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও রোগী কল্যাণ সমিতি ক্ষোভের মুখে পড়েছে। যদিও উভয় তরফের দাবি, বিষয়টি নজরে আসার পরেই সেই অবৈধ নির্মাণ বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগের পাশেই ২০০২ সাল থেকে ক্যান্টিন চলত। ক্যান্টিনের মালিক অতীন রায় হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগের পাশে ক্যান্টিনটি চালাচ্ছিলেন। সেটি নিয়ম বহির্ভূত ভাবে চলছে বলে তা সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা আসানসোলের মহকুমাশাসক সন্দীপ দত্ত ও হাসপাতাল সুপার নিখিল দাস। |
সেই অবৈধ নির্মাণ। নিজস্ব চিত্র |
এ দিকে, কোনও কাগজপত্র দেখাতে না পারলেও অতীনবাবুর দাবি, ওই সময়ে হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত সুপার তাঁকে ক্যান্টিন চালানোর জন্য লিখিত অনুমতি দিয়েছেন। ফলে সেখান থেকে উঠে গেলেও হাসপাতাল চত্বরেই তাঁর একটি ক্যান্টিন পাওয়ার কথা। ক্যান্টিন সরিয়ে নিতে বললেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনও ঘর তৈরি করে দিচ্ছেন না এই অজুহাতে হাসপাতাল চত্বরেই বাঁশ ও টালি দিয়ে অবৈধ নির্মাণ শুরু করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, “কর্তৃপক্ষ আমাকে ক্যান্টিন সরাতে বলেছেন। কিন্তু ঘর তৈরি করে দিচ্ছেন না। আমি কি খোলা আকাশের নিচে ক্যান্টিন চালাব?” তাঁর দাবি, ক্যান্টিনটি সরিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি তাঁকে অস্থায়ী ছাউনি করতে বলা হয়েছিল।
হাসপাতালের মূল দরজার সামনে দিয়ে ময়না-তদন্তের ঘরের দিকে এগোলেই রাস্তার ডান দিকে বাঁশ-টালির নির্মাণটি চোখে পড়বে। রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা মহকুমাশাসক সন্দীপবাবু বলেন, “সরকারি জায়গায় ব্যক্তিগত নির্মাণ কখনই তোলা যায় না। আমরা সেটা করতে দিতে পারি না। ক্যান্টিন মালিককে ডেকে সেটা বন্ধ করতে বলেছি।” হাসপাতাল সুপার নিখিলবাবু বলেন, “আমরা ইতিমধ্যেই অতীনবাবুকে নোটিস পাঠিয়েছি। কিছুতেই এই অবৈধ কাজ বরদাস্ত করা হবে না।”
শীঘ্রই হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগের সম্প্রসারণের কাজ শুরু হবে। কিন্তু এই ক্যান্টিনটি থাকার জন্য সেই কাজ বাধাপ্রাপ্ত হয়। খোঁজ-খবর নিয়ে হাসপাতাল সুপার নিখিল দাস জানতে পারেন, ক্যান্টিনটি চালানোর কোনও বৈধ কাগজপত্রই নেই। অবশেষে তিনি ক্যান্টিন মালিককে সেখান থেকে উঠে যাওয়ার নির্দেশ দেন। ক্যান্টিন তুলে নেওয়া হলেও আবার নতুন বিতর্ক দেখা দিয়েছে। অবশ্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মহকুমাশাসকের নির্দেশে নতুন করে অবৈধ নির্মাণের কাজটি বন্ধ করে দিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে মহকুমাশাসক জানান, এই অবৈধ নির্মাণটি বন্ধ করা না হলে আরও কিছু অবৈধ নির্মাণ হাসপাতাল চত্বরে গজিয়ে উঠতে পারে। তাই কঠোর হাতে এ সব দমন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। |