পিছিয়ে গেল আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালের সদ্যোজাত অসুস্থ শিশুদের জন্য ‘সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট’ উদ্বোধনের কাজ।
ইউনিটটি তৈরির কাজ শেষ। প্রশাসন সূত্রের খবর, সম্ভাব্য উদ্বোধনের কথা ছিল আগামী ২৯ নভেম্বর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসার কথা ছিল এই উপলক্ষে। তার আগে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে এসেছিলেন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের যুগ্ম আধিকারিক কল্যাণ মুখোপাধ্যায়। তিনি এ দিন জানিয়ে দেন, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসক এবং কর্মীর অভাবে ইউনিটটি আপাতত চালু করা হচ্ছে না। চিকিৎসক, কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। তা শেষে করে উদ্বোধন করতে করতে ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
এ দিন পরিদর্শক দলে কল্যাণবাবু ছাড়াও ছিলেন হুগলির জেলাশাসক শ্রীপ্রিয়া রঙ্গরাজন, মহকুমাশাসক অরিন্দম নিয়োগী, স্থানীয় বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা প্রমুখ। হাসপাতালের সুপার নির্মাল্য রায় আধিকারিকদের কাছে অভিযোগ করেন, চিকিৎসক ও কর্মীর অপ্রতুলতায় হাসপাতালের সার্বিক স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে সমস্যা হচ্ছে। মাস দুই পরে এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে বলে সরকারি আধিকারিকেরা সুপারকে আশ্বস্ত করেন। |
আরামবাগ মহকুমা হাসপাতাল সূত্রের খবর, আড়াইশো শয্যাবিশিষ্ট এই হাসপাতালে রোগী ভর্তি থাকেন গড়ে প্রায় সাড়ে তিনশো জন। চিকিৎসক থাকার কথা ২৭ জন। আদতে আছেন মাত্র ১৭ জন। অন্যান্য কর্মী সংখ্যাও প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। এ দিকে আশপাশের কয়েকটি জেলার রোগীর চাপ সামাল দিতে হয় এই হাসপাতালকে।
এই পরিস্থিতিতে উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরি না করেই শিশুদের জন্য বিশেষ ইউনিট চালু করা নিয়ে শুরু থেকেই চিন্তিত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তিন জন চিকিৎসককে মাত্র এক মাসের প্রশিক্ষণের পরে ইউনিট চালু করার কথা। কিন্তু তাতে নতুন ব্যবস্থায় তো বটেই হাসপাতালের নিয়মিত পরিষেবাও ধাক্কা খাবে বলে হাসাপাতালে চিকিৎসকদের একাংশ মনে করেন।
২০১০ সালের ১ নভেম্বর ২ কোটি টাকা ব্যয়ে সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিটের কাজ শুরু হয়। এ বছরের অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি কাজ শেষ হয়। ৬০ জন শিশুকে এই ইউনিটে বিভিন্ন পর্যায়ে রাখা যাবে। কিন্তু ক’জন চিকিৎসক, ক’জন নার্স থাকবেন, কার কত ক্ষণ ডিউটি হবে, সে সব নিয়ে ধোঁয়াশা এখনও কাটেনি বলে হাসপাতাল সূত্রে দাবি করা হয়েছে।
রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে একের পর এক শিশু মৃত্যুর জেরে বেশ কয়েকটি ‘সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট’ চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে আরামবাগ-সহ কয়েকটি চালু করার কথা ডিসেম্বর মাসের মধ্যে। কিন্তু পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সরকারি স্তরেই। |