প্রতারণা মামলায় জড়িত সন্দেহে ৩ জন কমিশন এজেন্টকে ধরা হয়েছে। কিন্তু, আরও অন্তত ৪ জন বড় মাপের ‘কমিশন এজেন্ট’ বহাল তবিয়তে শিলিগুড়ি শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন একজন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারি, একজন অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষকও। যাঁরা কম সময়ে বেশি টাকা আয়ের স্বপ্ন দেখে প্রতারিত হয়েছেন, তাঁদের অনেকেই চাইছেন, ওই ৪ জনকে জেরা করা হোক। পাশাপাশি, তাঁদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণও খতিয়ে দেখার দাবিও তুলেছেন তাঁরা।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে স্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু, অন্য কোনও কমিশন এজেন্টদের নামে সুনির্দিষ্ট ভাবে অভিযোগ পুলিশের কাছে জমা পড়েনি। উল্টে, একজন এজেন্ট তথা অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক নিজেই প্রতারিত হয়েছেন বলে আগাম অভিযোগ করেছেন। দার্জিলিং জেলা পুলিশের এক পদস্থ কর্তা জানান, শীঘ্রই মামলার অগ্রগতি পর্যালোচনা করে পদক্ষেপ করা হবে। যাঁদের জেরার করার দাবি উঠেছে তাঁদের ব্যাপারেও বিশদে খোঁজখবর করার জন্য তদন্তকারী অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে ওই পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন।
এই অবস্থায় মঙ্গলবার দার্জিলিং ডিস্ট্রিক্ট লিগাল এড ফোরামের তরফে শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুুপার অমিত জাভালগির কাছে চিঠি পাঠিয়ে সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলার জন্য সময় চাওয়া হয়েছে। সংস্থার পক্ষ থেকে অমিত সরকার জানান, তাঁদের কাছে কয়েকজন কমিশন এজেন্টের ভূমিকার ব্যাপারে নানা অভিযোগ করেছেন একাধিক ব্যক্তি। যাঁদের নানাভাবে ওই এজেন্টরা প্রভাবিত করে টাকা লগ্নি করিয়েছেন বলে অভিযোগ। বিশেষত, দার্জিলিং জেলা কংগ্রেসের এক প্রবীণ নেতাও জানিয়েছেন, একজন স্কুল শিক্ষকের মাধ্যমে কলেজের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক তাঁর কাছে লগ্নির প্রস্তাব দেন। ওই নেতা জানান, যে হেতু দুজনই শিলিগুড়িতে বিদ্বজ্জন হিসেবে পরিচিত, সে জন্য তিনি এক কথায় লগ্নি করতে রাজি হন। শুধু তাই নয়, আরও দুজন কংগ্রেস নেতাও ওই অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষকের কথায় মোটা টাকা লগ্নি করেন বলেও লিগাল এডের কর্তারা জানতে পেরেছেন। সে কারণেই সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সত্যাসত্য খতিয়ে দেখার জন্য দ্রুত আলোচনা চাইছে লিগাল এড। তার পরে যাঁদের বিনা খরচে আইনি সাহায্য প্রয়োজন তাঁদের সহায়তা করা হবে বলে অমিতবাবু জানিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, ১০ মাসে টাকা দ্বিগুণ হবে, এই দাবি করে মুম্বইয়ের একটি সংস্থা শিলিগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গের নানা এলাকা থেকে বহু কোটি টাকা তোলে। আচমকা সংস্থার কর্তারা গা ঢাকা দেন। তা নিয়ে থানায় অভিযোগ জমা পড়লেও বিষয়টি নিয়ে প্রথমে তদন্ত হয়নি। মাসখানেক আগে শিলিগুড়ি থানার পুলিশ তদন্তে নেমে মুম্বই থেকে সংস্থার এক কর্তাকে গ্রেফতার করে তার পরে সংস্থার কমিশন এজেন্ট রাজীব ভদ্র, রণবীর দাস, দেবব্রত পালকে গ্রেফতার করে পুলিশ। |