এবার জলপাইগুড়ির উন্নয়নে নজর মন্ত্রীর
ন্তব্য জলপাইগুড়ি! লক্ষ্য, উন্নয়নে আরও গতি আনা। সে জন্য মঙ্গলবার প্রায় সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত টানা বৈঠক ও পরিদর্শন করলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। কখনও জেলার উন্নয়ন নিয়ে সরকারি অফিসারদের নিয়ে বৈঠক করলেন। তার পরে শহরের বিশিষ্ট জনদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করে পরামর্শ নিলেন। শহরের উন্নয়ন নিয়ে পুর চেয়ারম্যানের সঙ্গে ঘরোয়া বৈঠকও করলেন। সেই সঙ্গে হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নির্দেশ দিলেন। জলপাইগুড়ির ঐতিহ্যবাহী বান্ধব নাট্য সমাজ পরিদর্শন করে প্রাচীন প্রেক্ষাগৃহের পুর্নগঠনে উদ্যোগীও হলেন। সকাল দশটায় সার্কিট হাউসে ঢোকার পরে যখন গৌতমবাবু জলপাইগুড়ি শহর ছাড়লেন তখন ঘড়িতে সাতটা, মধ্যে মিনিট পনেরোর দুপুরের খাওয়ারের বিরতি ছাড়া। সকাল থেকে অন্তত আটটি বৈঠকের পরে মন্ত্রী বললেন, “স্বাধীনতার পর থেকে বিভাগীয় সদর জলপাইগুড়ির উন্নয়ন কার্যত স্তব্ধ, এই স্তব্ধতা কাটাতে ঐতিহ্যবাহী এই শহরকে একটি ঝাঁকুনি দিতে হবে।” বস্তুত মঙ্গলবারই ছিল ‘ঝাকুনির’ প্রস্তুতি পর্ব। শহরের উন্নয়ন নিয়ে আগামী ডিসেম্বর মাসে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রক জলপাইগুড়িতে নাগরিক কনভেনশনের আয়োজন করবে বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন। এদিন প্রথমে জেলার উন্নয়ন নিয়ে প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন মন্ত্রী। রাজ্য বিধানসভার পরিকল্পনা উন্নয়ন বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান জটু লাহিড়ী সহ প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন গৌতমবাবু। বৈঠকে জলপাইগুড়ি ও দার্জিলিং জেলায় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখা হয়। বৈঠকে যোগ দিতে এসেছিলেন জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসুও। বৈঠক শুরুর আগেই মোহনবাবুকে নিজের ঘরে ডেকে নেন গৌতম বাবু। জলপাইগুড়ি শহরের উন্নয়ন নিয়ে বৈঠক হয়।
ছবি: রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ দিন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের দফতরে গিয়ে জেলার কাজকর্ম খতিয়ে দেখেছেন মন্ত্রী। জানিয়েছেন, মাসে চারদিন জলপাইগুড়ির অফিসে তিনি বসবেন। বিকেলে ফের সার্কিট হাউসে এসে শহরের বিশিষ্টজনেদের নিয়ে আলোচনা করেন। পরে জরাজীর্ণ বান্ধব নাট্যসমাজ পরিদর্শন করেন। এর পুর্নগঠন নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন মন্ত্রী। জেলা হাসপাতালের পরিকাঠামো ঢেলে সাজাতে স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন মন্ত্রী। বৈঠকের ফাঁকে হাসপাতালের যে চিকিৎসকরা কাজ থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন তাদেরকে ডেকে পাঠিয়ে ব্যাক্তিগত ভাবে আলোচনা করেছেন তিনি। এদিন জেলা সদরে একের পর এক কর্মসূচি প্রসঙ্গে গৌতম বাবু বলেন, “জলপাইগুড়ি জেলার জন্য ১৩৯ কোটি টাকা পর্ষদ বরাদ্দ করা হয়েছে। আরও যে প্রস্তাব গ্রহন করা হয়েছে তাতে সব মিলিয়ে ২০০ কোটি টাকার অঙ্ক ছাড়িয়ে যাবে। সার্কিট বেঞ্চ, স্পোর্টস কমপ্লেক্স নিয়ে উদ্যোগের কথা সকলেই জানেন, আগামী মাসে জলপাইগুড়িতে নাগরিক কনভেনশন করব। সেখানে সর্বস্তরের মানুষের কাছ থেকে উন্নয়নের প্রস্তাব নেব।” সন্ধে বেলায় শহরের প্রাণকেন্দ্র কদমতলায় যুব তৃণমূলের একটি জনসভায় ভাষণ দেন গৌতমবাবু। সম্প্রতি জলপাইগুড়িকে রাজ্য সরকারের বঞ্চনার অভিযোগ করে যুব কংগ্রেস শহরে মিছিল করে। এদিনের সভায় যুব কংগ্রেসের নাম না করলেও গৌতম বাবু বলেন, “যারা মিছিল করেছেন তাঁদের যারা রাজনৈতিক গুরু তাঁরা জানেন জলপাইগুড়ির উন্নয়ন নিয়ে কী কী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায়, যোশেফ মুন্ডা পুর চেয়ারম্যান মোহন বসুর সঙ্গে উন্নয়ন নিয়ে আমার নিয়মিত আলোচনা হয়। বিশু’দার (কংগ্রেস নেতা বিশ্বরঞ্জন সরকার) সঙ্গেও আলোচনা হয়। কারও কোনও জিজ্ঞাসা থাকলে আমার সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করুন। রাস্তায় নেমে নিছিল করে অযথা উন্নয়নের কাজ আটকে দেবেন না।” রাজনৈতিক সভা থেকেই গৌতমবাবু পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, “এতদিন কেন্দ্রে কংগ্রেসের সরকার রয়েছে, আগের দফায় সিপিএমও সেই সরকারের শরিক ছিল। তবু জলপাইগুড়ি কী ভাবে বঞ্চিত থেকে গেল, এই উত্তর কে দেবেন?”

এক নজরে
১. রাজীব আবাস যোজনায় বস্তিমুক্ত শহর উন্নয়ন প্রকল্পে শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়িকে সামিল করা হবে।
২.সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী পরিকাঠামোর কাজ আগামী মাস থেকেই শুরু হবে। ৮১ কোটি টাকা পূর্ত দফতরের বরাদ্দ।
৩. জলপাইগুড়ি স্পোর্টস কমপ্লেক্সের জন্য ২২ কোটি টাকা বরাদ্দ।
৪. রুগ্ন চা নিলাম কেন্দ্রের দশা কাটাতে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রস্তাব।
৫. জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতাল ও আলিপুরদুয়ার হাসপাতালের আধুনিকীকরণে ২০ কোটির প্রকল্প।
৬. জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের জন্য ১৮ কোটি।
৭. জলপাইগুড়িতে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.