কো-অর্ডিনেশন
‘পরিবর্তনের’ জমায়েতেই রাজ্যকে হুঁশিয়ারি
মতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমানায় এই প্রথম বার দাবি-দাওয়া নিয়ে পথে নামল সরকারি কর্মচারীদের সিপিএম-প্রভাবিত সংগঠন রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটি। বকেয়া মহার্ঘ ভাতা, বেতন, পেনশন-সহ দাবি পূরণ না-হলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিল তারা। রাজ্য সরকার পরিকল্পনা-বহির্ভূত খাতে খরচ বাড়িয়ে নিজেরাই আর্থিক সঙ্কটের কথা বলছে বলে ওই কর্মচারী সংগঠনের অভিযোগ।
‘পরিবর্তনে’র জমানায় কো-অর্ডিনেশন কমিটির প্রথম কেন্দ্রীয় জমায়েতে মঙ্গলবার রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে ভিড় হয়েছিল ভালই। প্রথমে একটি লেনে সমাবেশ শুরু করেও পরে আরও একটি লেন বন্ধ করে দিতে হয়। তবে সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলির নেতৃত্ব এই ভিড়ের ‘কৃতিত্ব’ নিতে চাননি। বরং তাঁরা বলেছেন, ৬ মাসেই মানুষ বুঝতে পেরেছেন, রাজ্যে ‘বিপজ্জনক’ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তাই নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকেই সমাবেশে এসেছেন।
মহাকরণে ‘পরিবর্তনে’র পরে সরকারি কর্মচারী সংগঠনের সংস্কৃতিতেও একটি ‘পরিবর্তন’ এ দিন চোখে পড়েছে। দাবি দিবস এবং বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দিতে সরকারি কর্মচারীরা এ দিন এসেছিলেন সন্ধ্যায়, দফতর ছুটির পরে। অতীতের মতো কাজের সময় সমাবেশ করতে তাঁরা যাননি। তবে সংগঠনের নেতৃত্বের বক্তব্য, আগেও তাঁরা অর্ধ-দিবস ছুটি নিয়ে মিছিল বা সমাবেশ করতেন। এ বার বেশি মানুষকে জড়ো হওয়ার সুযোগ দেওয়ার জন্যই ছুটির পরে কর্মসূচি রাখা হয়েছিল।
কো-অর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক অনন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের ৬ দফা দাবি নিয়ে আমরা সরকারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা চেয়েছিলাম। আমরা হুঁশিয়ারি দিচ্ছি, দাবিগুলি মিটিয়ে দিতে হবে। না-হলে বিভিন্ন জায়গায় গণ ডেপুটেশন এবং বৃহত্তর কর্মসূচিতে যাব।” কমিটির বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়ার পরেই ২৩ মে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন কর্মচারী সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন, তখনই তারা বলেছিল, জনস্বার্থবাহী কাজে তারা ‘সহযোগিতা’ করবে। সরকারের পরিকল্পনা রূপায়ণে ‘সক্রিয় ভাবে উদ্যোগী’ হবে। কিন্তু জন-বিরোধী নীতি নিলে প্রতিবাদ করার কথা তখনই মুখ্যমন্ত্রীকে বলে দেওয়া হয়েছিল। অনন্তবাবুদের দাবি, এমন কোনও দাবি তাঁরা তোলেননি, যা ৬ মাসে বিবেচনা করা যায় না। কর্মচারীদের স্বার্থ না-দেখে সরকার পরিকল্পনা ছাড়াই খরচ করে চলেছে বলে তাঁরা প্রতিবাদে নেমেছেন।
অনন্তবাবুর অভিযোগ, “পরিকল্পিত বাজেট হলে চুরি-চামারি করতে অসুবিধা হয়! এই সরকার পরিকল্পিত ব্যয়ের দিকে যাচ্ছেই না। এক এক জন মন্ত্রীর ঘর সংস্কার করতে গড়ে ৫ লক্ষ টাকা করে খরচ হল। মুখ্যমন্ত্রীর ঘর সাজাতে শুধু বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের ক্ষেত্রেই খরচ হয়েছে ৩০ লক্ষ টাকা! কোনও পরিকল্পনা নেই। মন্ত্রীদের ভাতা বাড়িয়ে দেওয়া হল। অথচ কর্মচারীরা বকেয়া পেলেন না!” সরকারি হিসাব পরীক্ষার সময় এই ধরনের বেহিসাবি খরচের খতিয়ান তাঁরা পেশ করতে চান বলে অনন্তবাবুরা জানিয়েছেন। কর্মচারী আন্দোলনের প্রবীণ নেতা এবং সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুকোমল সেন সরব হয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাবিত পেনশন বিলের ‘বিপদ’ নিয়ে। তাঁর প্রশ্ন, “মুখ্যমন্ত্রী কী বলছেন? এই বিল নিয়ে তাঁর অবস্থান কী? পেনশন বিল যে দিন সংসদে পেশ হবে, সেই দিনই সারা দেশে সরকারি কর্মচারীরা দফতর থেকে বেরিয়ে এসে দু’ঘণ্টার বিক্ষোভ করবেন। মুখ্যমন্ত্রী কি ওই বিলই মেনে চলবেন?” সরকারি কর্মচারীদের একাংশের ক্ষোভ যে মাথাচাড়া দিচ্ছে, তা এ দিন স্পষ্ট হয়েছে পরিবহণ ক্ষেত্রেও। সরকারি পরিবহণ নিগমের অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের পেনশন এবং বর্তমান কর্মীদের একাংশের বেতন বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রতিবাদে ২৫ নভেম্বর কলকাতায় সিএসটিসি দফতরের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলি। কর্মীদের বকেয়া আটকে দেওয়ার পাশাপাশি সরকারি বাস কমিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধেও এ দিন সরব হয়েছেন সিটুর রাজ্য সম্পাদক কালী ঘোষ, আইএনটিইউসি-র কার্যকরী সভাপতি রমেন পাণ্ডে। প্রসঙ্গত, কৃষকদের বেশ কিছু দাবিতে এ দিনই ফিয়ার্স লেনে আইন অমান্য করে এসইউসি-র সংগঠন এআইকেকেএস।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.