কালী ভাসানের পরে সোনামুখী মাতল কার্তিক পুজোর ভাসানে। সোনামুখী শহরের দ্বিতীয় বড় উৎসব হল কার্তিক ভাসান। সেই উৎসব শেষ হল মঙ্গলবার দুপুরে। এই উপলক্ষে সোমবার রাতভর মেতে উঠেছিলেন এই শহরের বাসিন্দারা। তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন দূরদূরান্ত থেকে আসা বাসিন্দারা।
অনেকে বলেন, সোনামুখী বল কালী-কার্তিকের শহর। কালী প্রতিমার মতোই কার্তিক ঠাকুরও সুউচ্চ হয়। কার্তিক ঠাকুরগুলির উচ্চতা হড়ে ১৫ থেকে ২০ ফুট। ভাসানের বৈশিষ্ট্য, সুইচ্চ প্রতিমা নিয়ে সন্ধ্যে থেকে ভোর পর্যন্ত বিশাল শোভাযাত্রা হয়। সোমবার সন্ধ্যা থেকে শহরের পথে শোভাযাত্রা বের হয়। ১৬টি কার্তিক ঠাকুর নিয়ে বাসিন্দারা শোভাযাত্রায় বেরিয়ে ছিলেন। সারি দিয়ে ঠাকুরগুলি নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। সেই শোভাযাত্রায় বাদ্যযন্ত্র ও বাহারি আলোর রোশনাই ছিল। এটাই এখানকার ভাসানের ঐতিহ্য। |
কার্তিক ভাসানের শোভাযাত্রা। ছবি: শুভ্র মিত্র। |
উচ্চতা, সাজসজ্জার সঙ্গে নামেও বৈচিত্র্য রয়েছে কার্তিক পুজোর নামের সঙ্গে। কোথাও কার্তিক ঠাকুরের পুজো ঘূর্ণি, ডেঙ্গো, মাইতো কার্তিক নামে পরিচিত। আবার পাড়ার নাম ধরেও কার্তিকপুজো করা হয়। বড়তলা, বকুলতলা, নিমতলা, ইত্যাদি নামেও পুজো করা হয়। পাঁচ দিনের পুজো শেষে ভাসানের শোভাযাত্রায় ছিল চন্দননগরের আলো। ছিল অকেস্ট্রা ও আতসবাজির প্রদর্শনী। এসব দেখতে সোনামুখী শহরে মানুষের ঢল নেমেছিল। স্থানীয় বাসিন্দা তথা কোন্নগরের একটি স্কুলের শিক্ষক মিঠুন আশ বলেন, “কার্তিক পুজো আমাদের কাছে দুর্গাপুজোর মতোই আকর্ষণীয়। সারা বছর আমরা কালী আর কার্তিকপুজোর জন্য অপেক্ষা করে থাকি। বাড়ির বাইরে যাঁরা থাকেন তাঁরা এই সময় বাড়ি ফেরেন।” তাঁর মতোই এই শহরের বাসিন্দারা সোমবার রাতে জেগে ভাসান দেখলেন। উৎসবে মাতলেন। মঙ্গলবার তাঁদের অনেকের চোখে দুর্গাপুজোর বিষন্নতার ছাপ দেখা গেল। সোনামুখীর পুরপ্রধান কুশল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কার্তিকপুজোর ভাসানে এ বারেও শহরের বাসিন্দাদের সঙ্গে বাইরে থেকে আসা মানুষজনও আনন্দ উপভোগ করেছেন। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।” |