অসহায় দুই জেলা পরিষদ
সবংয়ে অবৈধ সেতু-খেয়া
দীর উপর বাঁশ দিয়ে সেতু তৈরি করে অবৈধ ভাবে পারাপার চালাচ্ছেন কয়েক জন যুবক। আড়াই মাস ধরে এ ভাবে পারাপার (স্থানীয় কথায়, খেয়া) চললেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ। অথচ, ওই ‘খেয়া’ বন্ধে পুলিশের সাহায্য চেয়েছে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর--দুই জেলা পরিষদই। তার পরেও অবৈধ খেয়া বন্ধ না হওয়ায় বিস্মিত দুই জেলা পরিষদের সভাধিপতিরা।
কেন বন্ধ করা যায়নি? সবং থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’বার খেয়া বন্ধে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। বন্ধ করার পরেই ফের চালু করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে কিছু রাজনৈতিক দলেরও মদত রয়েছে। তবে খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীরাজ খালেদের আশ্বাস, “দু’দিনের মধ্যে অবৈধ খেয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে।”
সবংয়ের কাঁটাখালি, আমড়াখালির পাশ দিয়েই বয়ে গিয়েছে কেলেঘাই নদী। সবংয়ের অন্য দিকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভগবানপুর। আগে পারপার চলত নৌকাতেই। কিন্তু নদীর পরিসর ছোট হওয়ায় বর্তমানে নদীর উপর বাঁশ দিয়ে সেতু তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। তার উপর দিয়ে যাতায়াত করলে মানুষকে টাকা দিতে হয়। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা বা এলাকার যুবকরা ওই খেয়া নিলামে ডাকেন। পায়ে হেঁটে পার হতে গেলে এক টাকা লাগে। সাইকেল নিয়ে গেলে ৩ টাকা। মোটরবাইকে এক জন গেলে ৫ টাকা। দু’জন হলে ৭ টাকা। ছোট চার-চাকার যানের জন্য ৫০ টাকা। যেহেতু নদীটি দুই জেলার সীমানায়, তাই জেলা-ভাগের পর খেয়ার দায়-দায়িত্বও ভাগ হয়। কাঁটাখালি খেয়াটি রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের অধীনে।
আমড়াখালির কাছে নতুন তৈরি সেই সেতু-খেয়া। ছবি তুলেছেন রামপ্রসাদ সাউ।
এ বার সেখানে নিলামে ১১ লক্ষ ৯৯ হাজার ৯০১ টাকা ডাক উঠেছিল। সবংয়ের দক্ষিণ নিমকি-মোহাড় গ্রামের সুদামচন্দ্র দাস-সহ কয়েক জন দায়িত্ব পান। কিন্তু দেখা যায়, সরকারি অনুমতি ছাড়াই আমড়াখালির কাছে আরও একটি নতুন খেয়া (সেতু) তৈরি করেছেন কয়েক জন যুবক। ফলে সরকার অনুমোদিত খেয়ায় ভিড় কমেছে। প্রচুর টাকা দিয়ে খেয়া নিলামে নিয়েও সমস্যায় পড়েন সুদামবাবুরা। তাই তাঁরা জেলা পরিষদের দ্বারস্থ হন। দুই জেলা পরিষদের সঙ্গেই কথা হয়। তাতে দেখা যায় কোনও জেলা পরিষদই আমড়াখালির ওই খেয়ার অনুমতি দেয়নি। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, “আমরা ওই খেয়ার অনুমতি দিইনি। বেআইনি ভাবে কয়েকজন খেয়া চালাচ্ছে।” পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি গান্ধী হাজরাও বলেন, “আমরাও ওই খেয়ার অনুমতি দিইনি। শুনেছি কয়েক জন জোর করে ওই খেয়া চালাচ্ছে।” দু’জনেরই বক্তব্য, “খেয়া বন্ধে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে লিখিত ভাবে পুলিশকে জানানো হয়েছিল। তাতেও কাজ হয়নি। আমরা অবাক হচ্ছি, জেলা পরিষদ লিখিত ভাবে খেয়া বন্ধের কথা পুলিশকে জানানোর পরেও পুলিশ কী ভাবে চুপচাপ বসে রয়েছে!” পুলিশ
অবশ্য এ বার ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। সুদামবাবুদের বক্তব্য, “প্রায় ১২ লক্ষ টাকা দিয়ে খেয়া নিয়েছি। কয়েক জন মিলে খেয়া চালাই। কী ভাবে ওই টাকা তুলব, আর আমাদেরই বা কী লাভ থাকবে! বেআইনি খেয়া বন্ধ না হলে আমাদের চরম ক্ষতি হবে।” অন্তরাদেবীর অবশ্য আশ্বাস, “এর পরেও পুলিশ পদক্ষেপ না করলে উপরমহলেও বিষয়টি জানানো হবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.