|
|
|
|
বদলের রাস্তায় হাঁটতে রাজি নন মর্গ্যান |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
নীল রঙের গ্লাভস ধুলোয় সাদা হয়ে গিয়েছে। সদ্য অনুশীলন করে ওঠার পর যা হয় আর কী! অভ্র মণ্ডল অবশ্য গ্লাভসগুলো পরেই ড্রেসিংরুমের দিকে হাঁটা দিলেন। টোলগে ওজবের কাঁধে হাত রেখে। মুখে হাসি। চোখে জল।
বেঙ্গালুরুর বিমান ধরার জন্য যখন সন্দীপ নন্দী আর গুরপ্রীত সিংহের তৎপরতা তুঙ্গে, তখন অভ্র নিষ্পৃহ। এই মরসুমে তাঁকে যে আর ইস্টবেঙ্গল গোলের নীচে খেলতে দেখা যাবে না। বুধবার ইস্টবেঙ্গল যখন হ্যালের বিরুদ্ধে আই লিগে নামবে, অভ্র তখন রওনা দেবেন নতুন দল পুণে এফসি-র উদ্দেশে। সাত বছরের অটুট সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার আগে মঙ্গলবার তাই যুবভারতীতে কিছুটা আবেগতাড়িত হয়ে পড়লেন তিনি, “খুব খারাপ লাগছে। ইস্টবেঙ্গল ছেড়ে যেতে মন চাইছে না। কিন্তু ফুটবলার জীবনের স্বার্থে আমাকে যেতেই হবে। ঠাকুমাকে এখনও সাহস করে বলে উঠতে পারিনি।” মৃদু হাসির আড়ালে অন্তরের বিষণ্ণতা ঢাকতে পারলেন না।
হ্যাল ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে ইস্টবেঙ্গল আবার অভ্রময়। বিদায়লগ্নে তাঁর পাশে দাঁড়ালেন লাল-হলুদের তিন বিদেশি বন্ধু টোলগে-পেন-ওপারা। সবার মুখে একই কথা, “অভ্রর অনুপস্থিতি আমরা অনুভব করব। ও খুব ভাল গোলকিপার। যে কোনও দলের জন্যই সম্পদ।” কিন্তু এ বার তো ওর বিরুদ্ধেই গোল করতে হবে? অস্ট্রেলিয়ান স্ট্রাইকারের সাফ জবাব, “কোনও অসুবিধা নেই। ওর শক্তি আর দুর্বলতা ভাল জানি। ম্যাচে প্রভাব পড়বে না।” ঠাট্টা করে যোগ করলেন, “পুণে ম্যাচের আগে ওর সঙ্গে গড়াপেটা করে নেব। আরও সহজ হয়ে যাবে।” হাসি-ঠাট্টা-কান্নার মধ্যেই মঙ্গলবার পুরো অনুশীলন করে ইস্টবেঙ্গলকে বিদায় জানালেন অভ্র। গোলকিপার কোচ অতনু ভট্টাচার্য বললেন “নব্বইয়ে ত্রিমুকুট জেতার পরেও আমাকে ইস্টবেঙ্গল ছেড়ে চলে যেতে হয়েছিল। কিন্তু চার বছর বাদে আবার ফিরে এসেছিলাম। অভ্রর ফিরতে এত সময় লাগবে না।”
মর্গ্যান যে দল নিয়ে বেঙ্গালুরু গেলেন, তাতে বড় ম্যাচের ১৮-তে দু’টি বদল হয়েছে। রবিন্দর সিংহ এবং সৈকত সাহা রায়ের জায়গায় ঢুকেছেন টোলগে ও সুবোধ কুমার। তবে বুধবার প্রথম এগারোয় বড় ম্যাচের প্লেয়ারদের রাখতে চাইছেন। প্রশ্ন একটাই, টোলগে না গাও? টোলগে এসে যাওয়ায় কার্যত সমস্যা বাড়ল মর্গ্যানের। সেই তিন বিদেশি নির্বাচন নিয়ে সমস্যা। পেন, টোলগে, ওপারা এবং অ্যালান গাওয়ের মধ্যে কোন তিন জনকে খেলাবেন, সেটা এখনও ঠিক করে উঠতে পারেননি ব্রিটিশ কোচ। যদিও বড় ম্যাচে খেলতে না পারার আফসোস কিছুতেই যাচ্ছে না টোলগের। অনুশীলনের পর বললেন, “একটা ভুলের জন্য মোহনবাগানের বিরুদ্ধে খেলতে পারিনি। এ বার থেকে সতর্ক থাকব। যাতে আমার জন্য দলের কোনও অসুবিধা না হয়।”
ডার্বির হতাশা কাটিয়ে ছন্দে ফিরতে মরিয়া পেনও। বলছিলেন, “যে করেই হোক হ্যালের বিরুদ্ধে জিততে চাই। জয়ের অভ্যাস একবার চলে গেলে আবার সেটা ফিরে পেতে বিশাল সমস্যা হয়।” ৬ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে ইস্টবেঙ্গল লিগে ছয় নম্বরে। তালিকায় সবার নীচে হ্যাল, মাত্র এক পয়েন্ট। পরিসংখ্যানের বিচারে প্রতিপক্ষের চেয়ে অনেকটা এগিয়ে ইস্টবেঙ্গল। তবু হ্যালকে হালকা ভাবে নিতে চাইছেন না মর্গ্যান। “রিজার্ভ বেঞ্চ নিয়ে কোনও পরীক্ষানিরীক্ষা করতে চাই না। সেরা দলই খেলবে।”
হ্যাল কোচ মুরলীধরন অবশ্য আত্মবিশ্বাসী। ফোনে বললেন, “ইস্টবেঙ্গল ভাল দল। তবে আমরাও তৈরি।”
|
বুধবারে:
আই লিগ-
মোহনবাগান: প্রয়াগ ইউনাইটেড (যুবভারতী, ২-০০)
ইস্টবেঙ্গল: হ্যাল (বেঙ্গালুরু, ৩-৩০),
ডেম্পো: লাজং (মারগাও),
সালগাওকর: মুম্বই এফসি (পুণে)। |
|
|
|
|
|