প্রত্যন্ত গ্রামের এক সাধারণ পরিবারের ছাত্রী দেশের প্রতিনিধি হয়ে ‘এডুকেশনাল এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে’ যোগ দিতে জাপানে যাচ্ছে। বারবিসার ‘জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ের’ দশম শ্রেণির ওই ছাত্রীর নাম বীথিকা দত্ত। তাঁর বাড়ি নিম্ন অসমের কোকরাঝাড় জেলার শ্রীরামপুর গ্রামে। আগামী বৃহস্পতিবার বীথিকা দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা হবে। ২৬ নভেম্বর উড়ে যাবে জাপানে। বীথিকার ওই সম্মানে খুশির আবহ জেলা জুড়ে। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক স্মারকি মহাপাত্র বলেন, “ওই ছাত্রী জেলার গর্ব।” বিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মানব সম্পদ উন্নয়ন দফতরের উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ের ৬০ জন ছাত্রছাত্রী এ বার দেশের হয়ে জাপানে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পাবে। তাঁদের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ থেকে একমাত্র বীথিকা যাচ্ছে। দশ দিনের সফরে দশম শ্রেণির ওই ছাত্রী জাপানের পড়ুয়াদের সামনে ভারতীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরবেন। সেই সঙ্গে জাপানের দৃষ্টব্য স্থান ঘুরে দেখে সেখানকার শিক্ষা ও সংস্কৃতির অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করবে। |
বারবিসার জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ অনিমেষ পাল বলেন, “খুবই আনন্দের খবর। দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ কম ছাত্রছাত্রীরা পেয়ে থাকে। বীথিকা যে দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে সেই বিষয়ে এতটুকু সংশয় আমাদের নেই।” বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, বরাবর মেধাবী ছাত্রী বীথিকা। সময় পেলে বই পড়ে। সিলেবাসের বই ছাড়াও বিভিন্ন পত্রপত্রিকা, উপন্যাস পড়া ওর নেশা। মানব সম্পদ দফতরের কর্তারা ওই ছাত্রীর মেধা দেখে অবাক হয়েছেন। এর পরে তাকে দেশের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ দেওয়া হয়। ওই সম্মান পেয়ে খুশি বীথিকা নিজেও। ওই ছাত্রীর কথায়, “দেশের শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক ভাবনা যথাযথ ভাবে বিদেশের মাটিতে তুলে ধরব। সেখানকার শিক্ষা ও সংস্কৃতি খুঁটিয়ে জানার চেষ্টা করব। দেশে ফিরে অভিজ্ঞতার কথা প্রত্যেককে জানাব।” ছেলেবেলায় টুকটাক গান গাইলেও এখন বীথিকার একমাত্র নেশা বই পড়া। পছন্দের লেখক রবীন্দ্রনাথ, চার্লস ডিকেন্স, টমাস হার্ডি। বৃহস্পতিবার বাবা প্রফুল্ল দত্ত এবং মা নিলিকা দেবীর সঙ্গে দিল্লি যাচ্ছে সে। সেখানে ৬০ জনের প্রতিনিধি দলকে অভিনন্দন জানাবেন জাপানি রাষ্ট্রদূত। বাবা প্রফুল্লবাবু বলেন, “এত দিন জাপানের কথা বইয়ে পড়েছি। টিভির পর্দায় দেখেছি। আমার মেয়ে ওই দেশে যাচ্ছে ভাবতেই কেমন লাগছে।” |