মাত্র সাড়ে ছ’মাস আগেই বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যের সব থানার যাবতীয় গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। ভোট চুকে যাওয়ার পরেও বিভিন্ন জেলায় আদালত বেশ কিছু গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। কিন্তু শুধু বীরভূম জেলাতেই ৬০০ গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করতে পারেনি পুলিশ। মঙ্গলবার একটি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে এই তথ্য জানান বীরভূমের পুলিশ সুপার নিসাত পারভেজ। পুলিশ সুপারের দেওয়া এই তথ্যে হাইকোর্টের বিচারপতি কল্যাণজ্যোতি সেনগুপ্ত ও বিচারতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ বিস্মিত। এক মাসের মধ্যে সব পরোয়ানা কার্যকর করার জন্য পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছে তারা।
একটি কেস ডায়েরিতে অসঙ্গতি থাকায় ডিভিশন বেঞ্চ সোমবার বোলপুর থানার ওসি -কে হাইকোর্টে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু ওসি হাজির হননি। ক্ষুব্ধ বিচারপতিরা মঙ্গলবার ওই ওসি -কে নিয়ে জেলার পুলিশ সুপারকে হাইকোর্টে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ অনুসারে বীরভূমের পুলিশ সুপার ওই ওসি -কে নিয়ে এ দিন ডিভিশন বেঞ্চে হাজির হন। জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে পুলিশ সুপারকে কয়েকটি প্রশ্ন করেন বিচারপতিরা। তখনই শুধু ওই একটি জেলাতেই ৬০০ গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর না -হওয়ার বিষয়টি উঠে আসে।
হাইকোর্টের প্রশ্ন, জেলায় পুলিশ সুপার রয়েছেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ডিএসপি, এসডিপিও পদপর্যাদার অফিসারেরা আছেন। অনেক থানাও আছে। তা সত্ত্বেও আদালতের জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর হচ্ছে না কেন? আদালত নিশ্চয়ই এক দিনে ৬০০ গ্রেফতারি পরোয়না জারি করেনি। তা হলে সেগুলি কেন কার্যকর হয়নি?
পুলিশ সুপার বিচারপতিদের এই প্রশ্নের কোনও জবাব দিতে পারেননি। এত পরোয়ানা বকেয়া পড়ে থাকার কোনও যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যাও দিতে পারেননি তিনি। তার পরেই ডিভিশন বেঞ্চ ৬০০ গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করার জন্য এক মাস সময় দেয় বীরভূম জেলা পুলিশকে। হাইকোর্টের নির্দেশ কতটা কার্যকর হল, এক মাস পরে জেলার মুখ্য দায়রা বিচারককে রিপোর্ট দিয়ে তা জানাতে হবে পুলিশ সুপারকে। |