সাত দিন ধরে পেটের রোগ দেখা দিয়েছে খয়রাশোলের দেবগঞ্জ গ্রামের আদিবাসী পাড়ায়। ইতি মধ্যে পেটের রোগে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি বাসিন্দাদের। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গ্রামে একাধিক বার মেডিক্যাল টিম গিয়েছে। বাসিন্দাদের বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। উপসর্গ বলতেপেট ব্যথা, বমি, পায়খানা। ঠিক কী কারণে পেটের রোগ ছড়িয়েছে তা স্পষ্ট করে বলতে না পারলেও খয়রাশোলের নাকড়াকোন্দা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের ধারণা, মূলত এলাকার একটি পুকুরের জল দূষিত হওয়ার জন্য এই রোগ ছড়িয়েছে। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের নির্দেশে ইতিমধ্যে পুকুরের জলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট না পাওয়ায় কোথা থেকে এই রোগ ছড়িয়েছে তা জানা জানা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ডেপুটি সিএমওএইচ-১ অরুণলাল মণ্ডল। তিনি বলেন, “রিপোর্ট আসতে কমপক্ষে ১০ দিন সময় লাগার কথা। আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। তবে একবার রোগ ছড়ালে নিয়ন্ত্রণে আনতে একটু সময় লাগে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই আদিবাসী পাড়ায় মোট ৩০টি পরিবার বাস করে। গত মঙ্গলবার থেকে প্রথম এই রোগ দেখা দেয়। স্থানীয় বাসিন্দা কঙ্কর মুর্মু, সোমলাল হেমব্রমরা বলেন, “হঠাৎ করে পেট ব্যথা, বমি শুরু হওয়ায় প্রতিটি পরিবারের দুই থেকে তিন জন সদস্য হয় নাকড়াকোন্দা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বা ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরেছেন। শ্রমজীবী পরিবারগুলির এক একটি পরিবারের সবাই আক্রান্ত হয়েছেন। মুখের কাছে জল তুলে দেওয়ার লোক পাওয়া যাচ্ছে না। কাজে যেতে না পারায় ভাতের হাঁড়িও চড়ছে না।” এলাকাবাসীর দাবি, শুক্রবার বাসন্তি মুর্মু (১১) ও রজনী টুডু (৩) নামে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে এই রোগে। যদিও স্বাস্থ্য দফতরের কথায়, বাসন্তির ম্যানেনজাইটিস হয়েছিল। সিউড়ি সদর হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়েছে। অন্য দিকে, নাকড়াকোন্দা স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে রজনীকে ছেড়ে দেওয়ার পরে মৃত্যু হয়েছে। তার কী কারণে মৃত্যু হয়েছে তা এখনও জানা যায়নি বলে দাবি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের।
খয়রাশোলের বিডিও উজ্জ্বল মণ্ডল বলেন, “ওই পাড়ায় দু’টি নলকূপ থাকলেও এলাকার বাসিন্দারা ওখানে একটি পুকুরের জলে বাসন মাজা, কাপড় ধোওয়ার কাজ করেন। পুকুরের জল দূষিত হওয়ায় এই রোগ ছড়িয়ে থাকতে পারে। রোগ ছড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পাড়ায় মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয়েছিল। এখনও লাগাতার মেডিক্যাল টিম পর্যবেক্ষণ করছে। আক্রান্ত পরিবারগুলির কাছে প্রয়োজনীয় সাহায্য পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।” ভবিষ্যতে ১০০ দিন কাজের প্রকল্পে যাতে ওই পাড়ার মানুষ বেশি করে কাজ পান সেটা দেখার আশ্বাস দিয়েছেন বিডিও। |