|
|
|
|
এনজেপি |
চোরাই তেলে আগুন লেগে ১৪ দোকান ভস্মীভূত |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
চোরাই তেলের কারবারিদের দৌরাত্ম্যে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন লাগোয়া এলাকা যে জতুগৃহ হয়ে উঠেছে তা ফের স্পষ্ট হল। দমকল সূত্রের খবর, সোমবার ভোরে সেখানকার একটি টায়ার সারাইয়ের দোকানে প্রথম আগুন লাগে। ওই দোকানে চোরাই তেল মজুত থাকায় আগুন দ্রুত অন্য দোকানেও ছড়িয়ে পড়ে। ১৪টি দোকান ও ১টি বাড়ি পুরোপুরি পুড়ে যায়। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের ১টি ইউনিয়ন অফিস-সহ দু’টি ঘর আংশিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দমকলের তিনটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
দমকলের ডেপুটি ডিরেক্টর উদয় অধিকারী বলেন, “আগুন লাগার খবর পেয়ে দমকল কর্মীরা ঘটনাস্থলে যান। দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। অবৈধ নির্মাণের মধ্যে ওই আগুন লাগে। কী কারণে আগুন লেগেছে তা এখনও পরিষ্কার নয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।” আগুন লাগার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যান ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর জয়দীপ নন্দী। তিনি বলেন, “আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনার ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কী ভাবে আগুন লাগল তা প্রশাসনের তরফে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।” |
|
নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন লাগোয়া এলাকায় ভস্মীভূত দোকানপাট। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক |
পুলিশ সূত্রের খবর, এনজেপিতে ইন্ডিয়ান অয়েলের পেট্রোল ও ডিজেলের ডিপোকে কেন্দ্র করে চোরাই তেলের কারবারিরা সক্রিয়। এনজেপি সংলগ্ন একটি বস্তির বেশ কিছু বাড়িতে কুয়ো তৈরি করে তেল মজুত করা রাখা হয়। এ ছাড়াও কিছু বাড়ি এবং দোকানে বড় বড় পাত্রে তেল মজুত করে রাখা হয়। সেই তেল পাচার হয় শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ির বিভিন্ন এলাকায়। বছরখানেক আগে বাম আমলে একই ভাবে মজুত চোরাই তেলে আগুন লেগে ইন্ডিয়ান অয়েলের ডিপো সংলগ্ন একটি বস্তির অনেক বাড়ি পুড়ে যায়। পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রচুর পরিমাণ চোরাই তেল বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করে। শিলিগুড়ি সফরে এসে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টচার্য বিষয়টি জানতে পেরে সেই সময়ের উত্তরবঙ্গের আইজি কুন্দনলাল টামটাকে অভিযান চালানোর নির্দেশ দেন। আইজি নিজে বেশ কয়েকদিন সেখানে যান।
সম্প্রতি ওই তেলের কারবারিরা ফের সক্রিয় হয়ে ওঠে বলে অভিযোগ। এ দিন যে ১৪টি দোকানে আগুন লাগে তার বেশ কয়েকটিতে চোরাই তেল মজুত ছিল বলে অভিযোগ। ফলে আগুন ভয়াবহ আকার নেয়। ক্ষতিগ্রস্ত এক ব্যবসায়ীর যদিও দাবি, “খুব বেশি তেল ছিল না। সামান্য কিছু তেল দু-একটি দোকানে ছিল।” ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী অমর সাহা, সুশীলারানি সাহা বলেন, “ঘরে ঘুমিয়ে ছিলাম। সকালে চিৎকার শুনে স্বামী, ছেলেমেয়েদের টেনে তুলে বাইরে বেরিয়ে আসি। সব পুড়ে গিয়েছে। এখন কী করে চলবে, জানি না।” |
|
|
|
|
|