|
|
|
|
দার্জিলিং-কালিম্পং-কার্শিয়াং পুরসভার চেয়ারম্যানদের নাম ঘোষণা |
দুর্নীতি রুখতে কমিটি গড়ার সিদ্ধান্ত গুরুঙ্গের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
দীর্ঘ প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা। পাহাড়ের মানুষের কাছে পরিচিত নাম। এবং সর্বোপরি গ্রহণযোগ্যতা। এই তিনটি বিষয়কেই মাথায় রেখেই পাহাড়ে তিন পুরসভার চেয়ারম্যানের নাম ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানাল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। গত রবিবার দলীয় সমাবেশ থেকে মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ তিন চেয়ারম্যানের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে জানান। মোর্চার তরফে ভোটের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরেই পাহাড়ের ওই তিন পুরসভার চেয়ারম্যান কারা হচ্ছে তা মোটামুটি স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। বাকি ছিল শুধুমাত্র দলীয় সভাপতির গুরুঙ্গের সিলমোহর। সেই সঙ্গে তিনটি পুর এলাকায় স্বচ্ছ প্রশানিক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন লোকেদের চেয়ারম্যানের পদে বসানো ছাড়াও আরেকটি কড়া বার্তা দিয়েছেন গুরুঙ্গ। ঠিক হয়েছে, প্রতি পুর এলাকায় ‘অ্যান্টি করাপশন কমিটি’ (এসিসি) তৈরি হবে। মোর্চা সূত্রের খবর, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিততে চলেছেন ধরে নিয়েই মোর্চা সভাপতি তিনটি নাম ঠিক করে নেন। এরমধ্যে কালিম্পঙের এলবি পারিয়ার কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের অবসরপ্রাপ্ত আমলা। দার্জিলিঙের অমর সিংহ রাই দীর্ঘদিন ঐতিহ্যবাহী লরেটো কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল ছিলেন। আর কার্শিয়াঙের সমরদ্বীপ ব্লোন কার্শিয়াঙের জ্ঞানাঙ্কুর স্কুলের প্রিন্সিপালও ছিলেন। তিনি ছাড়া বাকি দু’জন আবার সরাসরি মোর্চার সদস্য নন। আগামী ১৩ ডিসেম্বরের পর সরকারি তরফে চেয়ারম্যানেরা পুরসভার দায়িত্বভার বুঝে নেবেন। সেই সঙ্গে পর্যটন বিকাশকে মাথায় রেখে উন্নয়ন এবং নাগরিক পরিষেবা স্বাভাবিক করাই তাঁদের দায়িত্ব বলে মোর্চার তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সচিব তথা বিধায়ক হরকা বাহাদুর ছেত্রী বলেন, “পাহাড়ের তিন মহকুমায় নাগরিক পরিষেবা স্বাভাবিক করাই হবে চেয়ারম্যানদের প্রথম কাজ। সেই সঙ্গে পর্যটনের কথা মাথায় রেখে ওঁদের কাজ করতে হবে। তিনটি শহরকে সাজাতে হবে। তিনজনেই পাহাড়ের পরিচিত নাম এবং সবার দীর্ঘ প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা রয়েছে।” চেয়ারম্যান হিসাবে তিনজনই যথেষ্ট ‘দাপটে’র সঙ্গে কাজ করবেন বলে মোর্চা প্রচার সচিব জানিয়েছেন। জিএনএলএফ সুপ্রিমো সুবাস ঘিসিঙের ডাকে কেন্দ্রীয় সরকারের পঞ্চায়েত এবং গ্রামোন্নয়ন দফতরের সচিবের পদ ছেড়ে পার্বত্য পরিষদের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন এলবি পারিয়ার। একসময় রাজ্য সরকার ‘হিল কমিশনারে’র পদও তৈরি করে। পরে ঘিসিং-এর সঙ্গে মতবিরোধের জেরে তিনি দিল্লি চলে যান। পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানের পদ সামলে অবসরের পর পাহাড়ে ফিরে আসেন। মোর্চার স্টাডি ফোরামের সদস্য হিসাবে কাজ করছিলেন। এলবি পারিয়েরারের কথায়, “চেয়ারম্যান হিসাবে প্রশাসনিক অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাব। ডাম্পিং গ্রাউন্ড, রাস্তা এবং পানীয় জলকে সামনে রেখে কাজ করতে হবে।” বয়সে নবীন হলেও প্রশাসনিক অভিজ্ঞতায় কম জান না গোথেলস, নর্থ পয়েন্টে পড়াশুনো করা কার্শিয়াঙের সমরদ্বীপ ব্লোন। জ্ঞানাঙ্কুর স্কুলের প্রিন্সিপালও ছিলেন। বর্তমানে তাঁর নয়াবাজারে একটি মার্কেট কমপ্লেক্স রয়েছে। কার্শিয়াং মহকুমার যুব মোর্চার তিনি সাধারণ সম্পাদকও। দলের পাশাপাশি ব্যবসায়ী এবং স্বেচ্ছাসেবী মহলে তাঁর পরিচিত যথেষ্ট। তাঁর কথায়, “দল যে দায়িত্ব দিয়েছে তা পুরোপুরি পালন করার চেষ্টা করব। আবর্জনা, জল নিকাশি এবং পানীয় জল তালিকায় প্রথমে রেখেছি। কাশির্য়াঙের নতুন করে সাজাতে হবে।” দার্জিলিঙের ঐতিহ্যবাহী লরেটো কলেজের দীর্ঘদিন ভাইস প্রিন্সিপাল থাকা অমর সিংহ রাইকে পাহাড়ের মানুষ ‘প্রোফেসর’ হিসাবেই চেনেন। এক সময় কলকাতায় পড়াশুনোও করেন। সেনা বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্নেলের এই ছেলেকে মোর্চা সভাপতি দার্জিলিঙের নতুন করে সাজানোর দায়িত্ব দিয়েছেন। গত দুই বছর ধরে দলের স্টাডি ফোরামের সদস্য হিসাবে কাজ করে গিয়েছেন। নাগরিক পরিষেবা এবং পর্যটন এই দু’য়ের সমন্বয়েই কাজ করবেন বলে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন। |
|
|
|
|
|