মহাকরণে এসে জাগরী বাস্কে ও তাঁর স্বামী রাজারাম যে ভাবে এসে আত্মসমর্পণ করেছেন, মাওবাদীরা তাকে সাজানো ‘নাটক’ আখ্যা দিল। মাওবাদীদের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির তরফে আকাশের নামে লেখা চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, ২০০৬ সালেই রাজারামকে বিয়ে করে জাগরী সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে গিয়েছিলেন। গর্ভবতী হওয়ার পরে তিনি কোনও দিন বন্দুক ধরেনি। রাজারাম অবশ্য সক্রিয় রাজনীতিতে ছিলেন। কিন্তু ২০১০ সালের জুন মাসে তাঁকে দলের সব দায়িত্ব থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। মাওবাদীদের সাহায্যেই তাঁরা গ্রামে জীবন কাটাচ্ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের প্রধান রাজীব কুমার তাঁদের আত্মসমর্পণের জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। গত চার মাস ধরে এই দম্পতি পুলিশ হেফাজতে ছিলেন।
১৮ নভেম্বর তারিখে লেখা আকাশের নামে ওই চিঠিতে বলা হয়, যৌথ বাহিনীর অভিযানে কোণঠাসা হয়ে মাওবাদী দম্পতি আত্মসমর্পণ করেছেন, তা দেখানোর জন্যই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ১৭ নভেম্বর তাঁদের মহাকরণে নিয়ে যাওয়া হয়। মাওবাদীদের আরও অভিযোগ, তাদের রাজ্য কমিটির সদস্য অনন্ত ওরফে দ্বিজেনকে গত বছর নভেম্বর মাসে গ্রেফতার করেন রাজীব কুমার। কিন্তু তাঁকেও আদালতে হাজির না-করে, জেলে না-পাঠিয়ে ১১ মাস ধরে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। এ বার দ্বিজেনের আত্মসমর্পণ নিয়ে পুলিশ পুনরায় ‘নাটক’ দেখাতে পারে বলে মাওবাদীরা মনে করছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, তারা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে খুনের হুমকি দিয়ে কোনও পোস্টার দেয়নি। মাওবাদীদের অভিযোগ, তাদের নাম করে যে পোস্টার দেওয়া হয়েছে, তা তৃণমূলেরই ‘ষড়যন্ত্র’। মুখ্যমন্ত্রী এবং খাদ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, মাওবাদীদের অযোধ্যা স্কোয়াডের নামে এই পোস্টারগুলি পাঠানো হয়েছিল। মাওবাদীদের পাল্টা বক্তব্য, কোনও দিনই অযোধ্যা স্কোয়াডের নামে তারা কোনও পোস্টার দেয় না। অযোধ্যা স্কোয়াড নামে যে কিছু নেই, তা পুলিশ-প্রশাসনের জানা উচিত। খাদ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই বলেছেন, জঙ্গলমহলে বিপণি খুলে গরিব গ্রামবাসীদের চাল ও কেরোসিন তেল দেওয়া হচ্ছে বলেই মাওবাদীরা তার বিরোধিতা করেছে। মাওবাদীদের পাল্টা দাবি, মন্ত্রী ৫০০ বিপণি খুলে চাল বিলি করলেও তারা ‘জনবিচ্ছিন্ন’ হবে না। |