পিচ উঠে আলগা হয়ে গিয়েছে পাথর। যান চলাচলের সময় সেই পাথর ছিটকে গিয়ে জখম হচ্ছেন পথচারীরা। ভাঙছে পার্শ্ববর্তী দোকানের কাচের শোকেস। তার উপর লেগেই রয়েছে দুর্ঘটনা। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমার সংগ্রামপুর থেকে স্বরূপনগরের বিডিও অফিস পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার এলাকায় সংগ্রামপুর রোডের এমন শোচনীয় অবস্থা যাত্রী ও যান চালকদের কাছে যন্ত্রণাদায়ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে ১৮ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে গোটা রাস্তাতেই তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। যতবারই রাস্তার পাকাপাকি সংস্কাররের জন্য দাবি তোলেন এলাকার মানুষ, ততবারই স্রেফ ইট দিয়ে রাস্তার গর্ত বুজিয়ে কাজ সারা হয়। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, তার ফলে আরও খারাপ হয় পরিস্থিতি। গাড়ির চাকার চাপে ইট ভেঙে গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে ধুলো ওড়ে। ধুলোর চোটে রাস্তায় হাঁটাচলা করাই দায় হয়ে দাঁড়ায়। তার উপর ইটের টুকরো সরে গিয়ে ফের দেখা দেয় গর্ত। এই রাস্তা দিয়ে প্রচুর মানুষকে বসিরহাট হসপাতালে আসাযাওয়া করতে হয়। রোগীদের নিয়ে যাওয়া আসার ক্ষেত্রে সমস্যা আরও বাড়ে। রাস্তার কারণে স্থানীয় চাষিরাও সময়ে তাঁদের সবজি বাজারে নিয়ে যেতে পারেন না। ফলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। এবড়ো- খেবড়ো রাস্তায় গাড়ির যন্ত্রাংশেরও ভীষণ ক্ষতি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গাড়ির মালিকেরা। বার বার রাস্তার সমস্যা নিয়ে আবেদন জানানো হলেও কোনও কাজ না হওয়ায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় মানুষ এ বার প্রশাসনের বিরুদ্ধে বড় ধরনের আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ওই রাস্তায় কাজের সূত্রে যাতায়াতকারী রমেন সর্দার, মুজিবর রহমান, করুণা পাত্র, ফরিদা বিবিরা জানালেন, “প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ওই রাস্তায় কি হেঁটে, কি গাড়িতে যাওয়া-আসা করতে হচ্ছে। অথচ রাস্তার সারাতে কারও কোনও উদ্যোগ নেই।” |
পূর্ত দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, গত শনিবার বারাসত ডিভিশনের নির্বাহী বাস্তুকার উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় বসিরহাট ডিভিশনের আধিকারিককে নিয়ে রাস্তাটি সরেজমিন দেখেছেন। আপাতত ওই রাস্তায় তাপ্পি দেওয়া হবে। পরে পাকাপাকি মেরামতির জন্য ১৩ লক্ষ টাকার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
বসিরহাট ডিভিশনের সহকারি বাস্তুকার তপন নস্কর বলেন, “দ্রুত টেন্ডার ডেকে যাতে রাস্তাটি সংস্কারের কাজ শুরু করা যায় সে জন্য একটি পরিকল্পনা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। আশা করা যায় তাড়াতাড়িই রাস্তার মেরমতির কাজ শুরু করা যাবে।” |