লিলির মন্ত্রে উমেশকে গড়েছেন সুব্রত
তি আর বেড়ে ওঠার কাহিনি মিলিয়ে তিনি যেন ভারতের হ্যারল্ড লারউড। বডিলাইন নামক কোনও মহাবিতর্ক যদিও এখনও তাঁর নামের পাশে লেখা হয়নি। তিনি বিদর্ভ থেকে উঠে আসা দেশের নতুন পেস-চমক। উমেশ যাদব। লারউড কয়লার খনিতে কাজ করতে করতে আগুনে পেস বোলিং আয়ত্ব করেছিলেন। উমেশের বাবা কাজ করেছেন কয়লার খনিতে। পরিস্থিতি এতটাই কঠিন হয়ে উঠছিল যে, বাবার কথায় তাঁকে পুলিশের পরীক্ষায় বসতে হয়েছিল। সেটা উমেশ পাশও করেন। কিন্তু গ্র্যাজুয়েট না হওয়ায় চাকরিটা তিনি পাননি।
নাগপুর পুলিশের ক্ষতি ভারতীয় ক্রিকেটের লাভ হয়ে দেখা দিল। ধারাবাহিক ভাবে ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার গতিবেগে বল করে ভারতীয় ক্রিকেটমহলকে নাড়িয়ে দিয়েছেন। সঞ্জয় মঞ্জরেকর এর মধ্যে টুইট করেছেন যে, শ্রীনাথের পর এত ফুটন্ত পেসে আর কোনও ভারতীয়কে বল করতে দেখেননি। এ দিন ভিভিএস লক্ষ্মণ বলে গেলেন, “ইডেনে যে রকম বল করেছে উমেশ তাতে আমি খুব উৎসাহিত। আমাদের পেসাররা ঘণ্টায় একশো চল্লিশ কিলোমিটার গতিবেগে বল করছে এটা দারুণ একটা লক্ষণ।”
এ হেন উমেশ যাদবের উত্থান যে প্রাক্তন ভারতীয় মিডিয়াম পেসারের হাত ধরে, তাঁর নাম সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। গত দু’বছর ধরে যিনি শশাঙ্ক মনোহরের বিদর্ভের কোচ। “আমি যখন উমেশকে প্রথম দেখেছিলাম, তখনই সবথেকে বেশি প্রভাবিত হয়েছিলাম ওর পেস দেখে,” এ দিন বিদর্ভ থেকে ফোনে বলছিলেন সুব্রত। অস্ট্রেলিয়ায় ত্রিদেশীয় সিরিজে সৌরভের সঙ্গে যাঁর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ঘটেছিল। “তার পর একটু ঘষামাজা করতে হয়েছে। যেমন অ্যাকশনটা। রান-আপ। বা বল ছাড়ার সময় হাতটাকে ঠিক রাখা। যাতে সুইংটাও ভাল আসে।” বলে সুব্রত দ্রুত যোগ করলেন, “তবে একটা ব্যাপার নিয়ে আমি খুব সতর্ক থাকি। কখনও ওকে পেস কমানোর কথা বলি না।”
ডেনিস লিলির কাছে এমআরএফ পেস ফাউন্ডেশনে পেস বোলিংয়ে দীক্ষা সুব্রতর। তিনি এবং শ্রীনাথ ছিলেন লিলির সবথেকে উজ্জ্বল ছাত্র। ক্রিকেট ছাড়ার পর অস্ট্রেলিয়া চলে গিয়েছিলেন বাংলার প্রাক্তন ক্রিকেটার। মাঝে সচিন তেন্ডুলকরের কথায় মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বোলিং কোচও হয়েছিলেন। এখন শশাঙ্ক মনোহরের রাজ্যের প্রধান কোচ। উমেশ যাদবকে তিনি লিলির মন্ত্রেই দীক্ষিত করার চেষ্টা করে গিয়েছেন। “লিলি আমাদের শুধু পালিশ করে দিতেন। কখনও পুরোপুরি পাল্টে দিতেন না। কেউ জোরে বল করলে তাকে বলতেন না যে, পেস কমিয়ে সুইং আনো। বলতেন সুইংটা আনতে হবে। তবে পেস না কমিয়ে। আমিও উমেশদের সেই কথাগুলো বলার চেষ্টা করি। এর সঙ্গে আমার নিজের অভিজ্ঞতা।” সচিন তাঁর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তাই সচিনকে জিজ্ঞেস করেছিলেন উমেশের ব্যাপারে। খুবই সন্তোষজনক রিপোর্ট পেয়েছেন। তবে এখনই খুব বাড়াবাড়ি হোক চান না। “ওকে এখনও অনেক রাস্তা যেতে হবে। অনেক দিন পর এমন এক জন এসেছে যে, গতির উত্তর গতি দিয়ে দিতে পারে। ওকে থাকতে হবে।” তার পর যোগ করলেন, “আমি শ্রীনাথের সঙ্গে খেলেছি। এত ধারাবাহিক ভাবে ১৪০ কিলোমিটার গতি শ্রীনাথকেও তুলতে দেখিনি।”
বিদর্ভ থেকে আরও দু’তিন জন পেসার দ্রুত উঠে আসছে বলে জানালেন সুব্রত। বললেন, “শশাঙ্ক মনোহর আমাকে বলেছিলেন, টাকাপয়সা নিয়ে ভেবো না। বিদর্ভ থেকে ভাল ক্রিকেটার তুলে আনতে তোমার কী লাগবে বলো।” কখনও মনে হয়নি বাংলার ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত হই? সুব্রত বললেন, “কেউ বলেনি তো কখনও!”




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.