চারটি শিশুর অপমৃত্যুর ঘটনায় নাম জড়িয়ে যাওয়া হাদি কুরেশির সন্ধানে এ বার ইলাহাবাদে যাবে পুলিশ।
পুলিশের কাছে হাওড়ার টিকিয়াপাড়ার বাসিন্দা, হাদি কুরেশির ভাই সাবির দাবি করেছেন, নিখোঁজ হওয়ার ৬ দিন পরে, রবিবার দাদার ফোন পান তিনি। যে ফোন ইলাহাবাদ থেকে এসেছে বলে প্রাথমিক তদন্তের পরে জানিয়েছে পুলিশ।
হাওড়া পুলিশের ডেপুটি কমিশনার সুকেশ জৈন বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি, ওই ফোন এসেছিল ইলাহাবাদ থেকে। আমরা সেখানে পুলিশ পাঠাব। চারটি শিশুর মৃত্যুর ব্যাপারে অভিযোগ দায়ের হলে পুলিশ মামলা শুরু করে তদন্ত করবে।”
মানসিক অবসাদগ্রস্ত হাদি টিকিয়াপাড়ায় শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। কোনও কাজ করতেন না। গত ১৪ নভেম্বর সেখানেই এক আত্মীয়ের বিয়ের পাকা দেখার অনুষ্ঠানে সপরিবার যোগ দিতে যান। খাওয়া-দাওয়ার পরে নিজের ছোট ছোট তিন ছেলেমেয়ে এবং শ্যালিকার ছেলেকে নিয়ে কোনও এক ফাঁকে বেরিয়ে পড়েন। ওই দিন বিকেল ৫টা পর্যন্ত পাঁচ জনকে শেষবারের মতো টিকিয়াপাড়ায় রেললাইনের ধারে বসে থাকতে দেখা গিয়েছিল। পরের দু’দিনে বাগনানের দামোদর থেকে ওই চার শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু হাদির খোঁজ মিলছিল না।
পুলিশের কাছে সাবিরের দাবি, রবিবার বিকেল ৩টে ৫ মিনিটে এবং সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ দু’বার হাদি তাঁর নিজের মোবাইল থেকে তাঁকে ফোন করেন। গলা শুনে সাবির বুঝতে পারেন হাদিই ফোন করেছেন।
পুলিশকে সাবির জানিয়েছেন, হাদি প্রথম বার ফোনে তাঁর কাছে জানতে চান, ছেলেমেয়েদের ঠিকমতো কবর দেওয়া হয়েছে কি না, এবং তাঁর স্ত্রী কেমন আছে? কিন্তু উত্তরের অপেক্ষায় না থেকে হাদি ফোন কেটে দেন। সন্ধ্যায় ফোনে সাবিরকে একই কথা জিজ্ঞাসা করেন হাদি। সাবির তাঁকে পাল্টা বলেন, “নিজের ছেলেমেয়েদের তুই মারলি! কেন এ কাজ করলি?” উত্তরে হাদি বলেন, “সে অনেক ব্যাপার। সব হিসাব চুকিয়ে-বুকিয়ে দিয়েছি।” এর পরে সাবির জানতে চান, তুই কোথায় আছিস? উত্তরে হাদি বলেন, “আমি অনেক দূরে আছি। আরও দূরে চলে যাচ্ছি।” এর পরেই হাদি ফোন কেটে দেন বলে সাবির পুলিশকে জানিয়েছেন। তার পরে সাবির ফোন করে হাদিকে ধরার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি বলে সাবিরের দাবি।
এই পুরো ঘটনা এবং কথোপকথন সাবির এবং হাদির শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকে হাওড়া থানায় রবিবার রাতেই জানানো হয়। হাদির শ্যালক ফিরোজ কুরেশি বলেন, “আমরা হাওড়া থানায় হাদির বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” |