কয়েকটি বিষয়ের ব্যাখ্যা চেয়ে আগে এক বার ফেরত পাঠিয়েছিলেন কলকাতা পুরসভার ‘ওয়েভার স্কিম’ বিলটি। সেই ব্যাখ্যা পাওয়ার পরেও সন্তুষ্ট নন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন। সই করার আগে আরও কিছু ব্যাখ্যা এবং নথিপত্র চেয়ে পাঠালেন তিনি।
বকেয়া প্রায় ২৬০০ কোটি টাকা আদায়ের জন্য কলকাতা পুরসভা করদাতাদের কিছু ছাড় দিয়ে কর মেটাতে উৎসাহী করতে চায়। সে জন্যই তৈরি হয় ‘ওয়েভার স্কিম’। বিধানসভায় বিলটি পাশ হওয়ার পরে তা অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয় রাজ্যপালের কাছে। কারণ, নিয়ম অনুযায়ী রাজ্যপালের অনুমোদন ছাড়া বিলটি আইনে পরিণত হবে না।
রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম সোমবার বলেন, “রাজ্যপাল যে সব নথি চেয়েছিলেন, প্রথম দফায় তা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এর পরে তিনি আবার বিধানসভায় ওই বিল-বিতর্কে অংশগ্রহণকারী বিধায়কদের বক্তব্যের নথি চেয়ে পাঠান। সেই নথিও পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে নতুন করে একটি নোটও দেওয়া হয়েছে।” রাজ্যের পুর-সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ও এ দিন মহাকরণে বলেন, “রাজভবন থেকে নির্দেশ পেয়ে নতুন করে নোট তৈরি করে রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হয়েছে।” এই ধরনের বিল অনুমোদনের ক্ষেত্রে রাজ্যপাল বিধানসভায় বিধায়কদের বক্তব্যের নথি চেয়ে পাঠিয়েছেন এমনটি সাধারণ ভাবে ঘটে না বলেই প্রশাসনিক সূত্রের খবর।
পুর দফতর সূত্রে খবর, কলকাতা পুরসভার বর্তমান বোর্ডের কাজকর্ম সম্পর্কে ইতিমধ্যেই রাজ্যপালের কাছে কিছু অভিযোগ পৌঁছেছে। ‘ওয়েভার স্কিম’ চালু হলে কারা কী ধরনের সুবিধা পাবেন, এর আগে চালু করা ‘ওয়েভার স্কিম’-এ পুরসভার কত লাভ হয়েছে, সে সম্পর্কে রাজ্যপালের কাছে নানা সূত্রে খবর পৌঁছেছে। তাই তিনি এ ব্যাপারে আরও খোঁজ নিচ্ছেন। পুর দফতরের এক কর্তা বলেন, “পুরসভার বর্তমান আর্থিক অবস্থা নিয়ে রাজ্যপালের দফতর উদ্বিগ্ন। ওই দফতরের প্রশ্ন, ওয়েভার স্কিমে হয়তো কিছু টাকা সাময়িক ভাবে পাওয়া যাবে। কিন্তু, তার পরে কী হবে?”
পুর দফতর সূত্রের আরও খবর, যে বিষয়গুলি সম্পর্কে রাজ্যপাল বিশেষ ভাবে জানতে চান, তাতে রয়েছে, কর অনাদায়ী রেখে পুরসভা কেন ওয়েভারের মাধ্যমে করের উপরে সুদ ও জরিমানা বাবদ অর্থ ছাড় দিতে আগ্রহী? ইউনিট এরিয়া কর ব্যবস্থা চালুর আগেই ওই ব্যবস্থার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য আইনের কিছু ধারা পুরসভা কেন চালু করতে চায়? কিছু ক্ষেত্রে সম্পত্তিকরে ছাড় দিতে পুরসভা আগ্রহী কেন? এই ‘ওয়েভার স্কিম’ নিয়ে রাজ্যপালের একাধিক বার ব্যাখ্যা চাওয়ার বিষয়ে কলকাতা পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্যপাল বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে চান বলে জেনেছি। সরকারি নিয়ম মেনে যা করার, তিনি সেটাই করবেন বলে মনে হয়।” |