জোকা থেকে বিবাদী বাগ পর্যন্ত মেট্রো রেল সম্প্রসারণের জন্য লালদিঘি লাগোয়া মিনিবাস স্ট্যান্ড দু’বছর বন্ধ রাখতে হবে। কারণ, জোকা থেকে মোমিনপুর হয়ে প্রস্তাবিত ওই মেট্রোর বিবাদী বাগ স্টেশনটি তৈরি হবে এখনকার মিনিবাস স্ট্যান্ডের জায়গা জুড়ে।
মেট্রোর যে সম্প্রসারণ প্রকল্পগুলির কথা রেল ঘোষণা করেছে, তার দ্রুত রূপায়ণে সাহায্য করতে আগ্রহী রাজ্য সরকার। সেই লক্ষ্য নিয়েই সোমবার মহাকরণে মুখ্যসচিব সমর ঘোষের সভাপতিত্বে এই প্রথম রেলবিকাশ নিগম লিমিটেড (আরভিএনএল)-এর শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে রাজ্যের সংশ্লিষ্ট সব ক’টি দফতরের সচিব পর্যায়ের বৈঠক বসে। সেখানেই অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে বিবাদী বাগ মেট্রো স্টেশন তৈরির জন্য মিনিবাস স্ট্যান্ডের জায়গা খালি করার প্রশ্ন ওঠে। বাস স্ট্যান্ডের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করে কবে থেকে ওই জায়গা স্টেশন তৈরির জন্য ছেড়ে দেওয়া সম্ভব হবে, বৈঠকে উপস্থিত পরিবহণসচিবকে তা দেখতে বলেন মুখ্যসচিব।
কলকাতার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে মেট্রো সম্প্রসারণের বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ করবে আরভিএনএল। সেগুলি হল: জোকা-মোমিনপুর, মোমিনপুর-বিবাদী বাগ, নোয়াপাড়া-বরাহনগর-দক্ষিণেশ্বর, নিউ গড়িয়া (কবি সুভাষ)-বিমানবন্দর এবং বরাহনগর-ব্যারাকপুর। সব ক’টি প্রকল্প রূপায়ণেই রাজ্যের বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে আরভিএনএলের সমন্বয় আরও জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব।
প্রকল্পগুলি রূপায়ণে রাজ্যের যে সব দফতরের সহযোগিতা ও সবুজ সঙ্কেত প্রয়োজন, এ দিন বৈঠকে ডাকা হয়েছিল সেই সমস্ত দফতরকেই। রাজ্যের ভূমি ও ভূমি সংস্কার, পরিবহণ, সেচ, বিদ্যুৎ, নগরোন্নয়ন, পুর ও পূর্ত দফতরের সচিবেরা ছাড়াও বৈঠকে হাজির ছিলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার রঞ্জিতকুমার পচনন্দা, কলকাতার পুর-কমিশনার অর্ণব রায়, কেএমডিএ, হিডকো এবং গ্রেটার ক্যালকাটা গ্যাস সাপ্লাই কর্পোরেশনের কর্তারা। আরভিএনএলের তরফে উপস্থিত ছিলেন সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর সতীশ অগ্নিহোত্রী।
এ দিনের বৈঠকে জোকা-মোমিনপুর শাখায় রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদের অসংখ্য হাই-টেনশন ট্রান্সমিশন লাইন সরানোর এবং জোকা ডিপোয় ঢোকার রাস্তা করতে চড়িয়াল খাল বরাবর সেচ দফতরের কিছু জমি নেওয়ার ব্যাপারে কথা হয়েছে।
এ ব্যাপারে রাজ্য এবং আরভিএনএলের অফিসারদের নিয়ে একটি কমিটি তৈরির সিদ্ধান্তও হয় বৈঠকে। কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা করা হবে।
মোমিনপুর-বিবাদী বাগ শাখায় মেট্রো রেল চালু করার জন্য প্রচুর গাছ কাটা পড়তে পারে। সেই জায়গায় নতুন গাছ লাগানোর কাজ কী ভাবে করা যায়, সেই ব্যাপারে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পরামর্শ চাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
অন্য দিকে, বরাহনগর-ব্যারাকপুর মেট্রোপথ তৈরি করার জন্য বিটি রোডের নীচে কলকাতা পুরসভার দু’টি জলের পাইপলাইনের মধ্যে সংযোগ বন্ধ করার এবং রাস্তার অনেক জায়গায় জবরদখল হয়ে থাকা জমি খালি করার প্রস্তাব দিয়েছে আরভিএনএল। এই দু’টি বিষয়ের সুরাহার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কলকাতা পুরসভা এবং রাজ্যের পূর্ত দফতরকে।
তবে, নিউ গড়িয়া থেকে কলকাতা বিমানবন্দর পর্যন্ত মেট্রো করিডর চালু করার জন্য নিউ টাউন এলাকার কলাক্ষেত্রে ডিপো তৈরি করার জন্য আরভিএনএলের প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছেন হিডকো-কর্তৃপক্ষ। এই বিষয়টি নিয়ে রাজ্য মন্ত্রিসভার অনুমোদন প্রয়োজন হবে বলে এ দিনের বৈঠকে অভিমত প্রকাশ করা হয়েছে। |