পূর্বস্থলীর পারুলডাঙা-নসরৎপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি ক্লাসঘরের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে গিয়ে রবিবার এক ছাত্রের তৈরি করা মডেলের প্রশংসা করলেন কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। কালনার মহিষমর্দিনী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র বিষাণ গঙ্গোপাধ্যায় নিজের তৈরি যন্ত্রের নাম দিয়েছে ‘আলোর ফাঁদ’। বিষাণ জানায়, ক্ষতিকারক মাজরা পোকা দমনের উদ্দেশেই সে এই যন্ত্রটি তৈরি করেছে।
কালনা শহরের পাথুরিয়া মহলে বাড়ি বিষাণের। তার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এক বার তেহাটা গ্রামে মামার বাড়িতে গিয়ে সে ক্ষতিকারক মাজরা পোকার কথা জানতে পারে। চাষিরা তাকে জানিয়েছিল, মাজরা পোকা মারতে আগুন জ্বালান চাষিরা। আগুন জ্বালিয়ে উপদ্রব কিছুটা কমানো গেলেও মাজরার বংশবিস্তার ঠেকানো যায় না। |
কয়েক মাস আগে তার স্কুলের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে মডেল প্রদর্শনী হয়। যোগ দেয় বিষাণও। ‘আলোর ফাঁদ’ তৈরি করে প্রশংসাও পায়। বিষাণ জানায়, সাড়ে পাঁচ ফুট লম্বা যন্ত্রটি দাঁড়িয়ে রয়েছে কয়েকটি লোহার দণ্ডের উপরে। যা দেখতে অনেকটা ফানেলের মতো। চারপাশ কাঁচ দিয়ে ঘেরা। উপরের দিকে রয়েছে একটি আলো। আর তার নীচে একটি পাত্রে রয়েছে কিছুটা কেরোসিন তেল।
বিষাণ বলে, “আলোর দিকে ছুটে আসবে ক্ষতিকারক মাজরা। যন্ত্রের নীচে থাকা কেরোসিন তেলে পড়ে মৃত্যু হবে তাদের।” নিজের স্কুলে প্রশংসা পাওয়ার পরে তার তৈরি যন্ত্রটি জেলার আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র সার্ধশতবর্ষ কমিটির একটি প্রদর্শনীতে। সেখানে মডেলটি দ্বিতীয় স্থান পায়। রাজ্যস্তরেও এই ধরনের প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়ে জিতে নেয় তৃতীয় পুরস্কার। বিষাণ জানায়, তাকে এই কাজে সাহায্য করেছে তার এক বন্ধু অমিতাভ রায় ও তার মেসোমশাই।
বিষাণের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছে কৃষি দফতরও। কালনা মহকুমা কৃষি দফতরের এক বিশেষজ্ঞ নিলয় কর বলেন, “প্রচলিত সূত্র ধরেই যন্ত্রটি তৈরি করেছে ওই স্কুলছাত্র। যা সত্যিই প্রশংসনীয়।” |