সেতু আছে। কিন্তু রেলিং ভেঙে গিয়েছে পুরোপুরি। দুর্গাপুর শহর থেকে বীরভানপুর শ্মশানে পৌঁছতে এই সেতু। ভাঙা রেলিঙের জন্য যে কোনও সময়েই বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে বলে আশঙ্কা শ্মশানযাত্রী থেকে স্থানীয় বাসিন্দা প্রত্যেকেরই। সেতু সংস্কারের জন্য অবশ্য দ্রুত পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছে সেচ দফতর।
শহর ছাড়িয়ে দামোদরের ধারে প্রত্যন্ত এক এলাকায় বীরভানপুর শ্মশান। বছর কয়েক আগেই সেখানে বৈদ্যুতিক চুল্লি গড়ে তোলে পুরসভা। তার পর থেকে শ্মশানযাত্রীর সংখ্যা আরও বেড়েছে। শ্মশানে ঢোকার ঠিক আগে দামোদরের একটি ক্যানাল পড়ে। সেই ক্যানাল দিয়ে দুর্গাপুর থার্মাল পাওয়ার স্টেশনে জল পাঠায় ডিভিসি। সেতুর উপর দিয়ে ক্যানাল পেরিয়ে ঢুকতে হয় শ্মশানে। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে সেতুর কোনও সংস্কার হয়নি। সেতুর দু’দিকের কংক্রিটের রেলিং প্রায় ভেঙে গিয়েছে। সেতুর উপর দিয়ে যাওয়ার সময় সন্তর্পণে না গেলে ক্যানালে পড়ে যাওয়ার বেশ ভয় থাকে। তাছাড়া কোনও কারণে কোনও গাড়ি সেতুর উপরে নিয়ন্ত্রণ হারালে সেটি একেবারে ক্যানালের জলে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। |
সেতুটি দিয়ে রোজই যাতায়াত করেন আশিস নগরের এক বাসিন্দা, ছোটন রায়। বীরভানপুর শ্মশান পেরিয়ে তাঁদের এলাকা। যাতায়াতের অন্যতম প্রধান মাধ্যম ওই সেতুটি। তিনি বললেন, “যানবাহন নিয়ে শহরের সঙ্গে যাতায়াতের এক মাত্র যোগসূত্র ওই সেতু। ওটা ভেঙে পড়লে তখন পায়ে চলার আর একটি সেতু আছে। সেটা দিয়েই কোনও ভাবে শহরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে। কিন্তু তখন আর কোনও যানবাহন নিয়ে এলাকায় ঢোকা যাবে না।” আর এক বাসিন্দা শ্যামল বাদ্যকরের কথায়, “শহরবাসীর শেষযাত্রার পথে ওই সেতু। অথচ সেটাই বেহাল। দীর্ঘদিনের পুরনো সেতুটির মেঝে পোক্ত। কিন্তু কংক্রিটের রেলিং ভেঙে শূন্যে ঝুলছে। এতে তো সেতুর উপরেও চাপ পড়ছে। কারও কোনও খেয়াল নেই।” অবিলম্বে সেতুটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
সম্প্রতি বি জোন থেকে বীরভানপুর শ্মশানে মৃতদেহ দাহ করতে গিয়েছিলেন সুখেন্দু মুখোপাধ্যায়, বিকাশ সুই’রা। তাঁরা জানান, ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাজ্যের তৎকালীন বিদ্যুৎমন্ত্রী মৃণাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের শেষকৃত্যে যোগ দিতেও ওই একই শ্মশানে গিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু তখনও সেতুটির দশা এত খারাপ ছিল না। তাঁদের কথায়, “সপ্তাহ খানেক আগে পাড়ার এক প্রবীণ বাসিন্দাকে দাহ করতে শ্মশানে যাওয়ার পথে দেখি সেতুটির দশা তো খুবই খারাপ হয়ে পড়েছে।”
সেচ দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, তাঁদের দফতরের আওতায় যে সব সেতু রয়েছে তার মধ্যে বেশ কয়েকটির হাল খুবই খারাপ। বাসিন্দাদের কাছ থেকে এই সেতুটির দুর্দশার কথাও তাঁরা জেনেছেন। সেতুগুলি সংস্কারের পরিকল্পনা চলছে। |