মহানগরে জাঁকিয়ে বসা জ্বর কোন ভাইরাস থেকে ছড়াচ্ছে, অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরেও তার হদিস মেলেনি। ওই ভাইরাসের ‘পরিচয়’ জানতে আক্রান্তদের রক্তের নমুনা এ বার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় সদর দফতরে পাঠাল কলকাতা পুরসভা।
কলকাতার ‘স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন’ এবং পুণের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি’র জীবাণু-বিশেষজ্ঞেরা বহু চেষ্টা করেও ওই ভাইরাস চিহ্নিত করতে না পারায় কী ভাবে এই জ্বরের মোকাবিলা করা যায়, তা নিয়ে চিকিৎসকেরা কিছুটা বিভ্রান্ত। আপাতত প্যারাসিটামল দিয়ে চিকিৎসা চলছে অধিকাংশ রোগীর। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর কিংবা পুরসভা এই জ্বরের কোনও চিকিৎসা-বিধি তৈরি করতে পারেনি। পরজীবী-বিশেষজ্ঞেরা জীবাণুটিকে মশাবাহিত বলে মনে করলেও পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর তা মানতে নারাজ।
মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ বৃহস্পতিবার বলেন, “আক্রান্তদের রক্তের নমুনা আমরা হু-র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গবেষণাগারে পাঠিয়ে দিয়েছি। সেখান থেকে রিপোর্ট আসার আগে জীবাণুটি সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানা যাবে না। ওই জীবাণু আদৌ মশাবাহিত কি না, সেটাও এখন বলা সম্ভব নয়।” এই অবস্থায় শহরবাসীর কী করণীয়, চিকিৎসকেরা কী ভাবে ওই জ্বরের মোকাবিলা করবেন, নির্দিষ্ট এলাকায় কেন রোগটি ছড়াচ্ছে এ সব নিয়ে একটি সর্বদলীয় কমিটি গড়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন কংগ্রেস কাউন্সিলর মালা রায়। অতীনবাবু এ ব্যাপারে জানান, লিখিত কোনও প্রস্তাব এলে তা খতিয়ে দেখা হবে।
এ দিন পুর-অধিবেশনে ওই অজানা জ্বরের মোকাবিলায় পুর-কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন বিরোধীরা। শহরে মশা নিয়ন্ত্রণে পুরসভার পরিকাঠামোয় যে তাঁদের আস্থা নেই, তা বোঝাতে বিরোধীরা এ দিন মশারি নিয়ে এসেছিলেন। তবে, শহরে যে মশার উপদ্রব বেড়েছে, সেই অভিযোগ মানতে চাননি মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য)। তাঁর দাবি, শহরে গত বছরের তুলনায় ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গি, চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ কমেছে। আগামী বছরে তা আরও কমিয়ে আনার লক্ষ্যে পুরসভা পরিকল্পনা তৈরি করছে। অতীনবাবুর অভিযোগ, অজানা জ্বর নিয়ে অহেতুক আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে। |