|
|
|
|
আত্মসমর্পণকারী কেএলও-দের জনসভা |
নিলয় দাস • ফালাকাটা |
এ কে ৪৭ কিংবা একে ৫৬ নিয়ে গুপ্ত বৈঠক নয়। সমাজের মূল স্রোতের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এবার জনসভা করবেন আত্মসমর্পণকারী কে এল ও জঙ্গিরা। আগামী ২০ নভেম্বর জলপাইগুড়ির বেলাকোবার কেবলপাড়া হাই স্কুলের মাঠে ওই সভা হবে। সভায় উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু শিক্ষাবিদ ও মানবাধিকার কর্মীদের আমন্ত্রণ করা হয়েছে। সভায় মূলস্রোতে ফেরার ক্ষেত্রে কী ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে তা নিয়ে বিশদে আলোচনা হবে।
সভার শেষে তাদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে বলে ঠিক হয়েছে। আমন্ত্রিতদের মধ্যে রয়েছেন ভাস্কর নন্দী। তাঁর কথায়, “সন্ত্রাসবাদের রাস্তা নিয়ে কোন দাবি পূরণ করা যায় না। তাই, অসম বা অন্য রাজ্যে জঙ্গি আন্দোলন করে তা হয়নি। কে এল ও-র আমন্ত্রণে সভায় আমি যাব।” ওই জনসভার কথা শুনেছেন উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবও। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “মূল স্রোতে থেকে কেউ যদি সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে চান, তা হলে তাঁদের স্বাগত।” আত্মসমর্পণকারী জঙ্গিদের নেতা টম অধিকারীর কথায়, “১৮ বছর বাদে কেএলও-র প্রথম জনসভা হতে চলেছে বেলাকোবায়। সরকারের সঙ্গে আমরা আলোচনায় বসতে চাই। যে সমস্ত দাবি সরকারের কাছে রাখব তা কতটা প্রাসঙ্গিক সে বিষয়ে সে দিন বিশিষ্টজনদের মতামত নেব। ভাষার স্বীকৃতি সহ এলাকার নানান উন্নয়ন মূলক বিষয়ে দাবি রয়েছে। তবে এখনই আলাদা রাজ্য নিয়ে সরকারকে চাপ দেওয়া হবে না।”
টমের কথায়, “আলাদা রাজ্যের দাবি আমাদের সবসময় থাকবে। তবে তেলেঙ্গানা বা বিদর্ভে এত আন্দোলন করেও কেন্দ্র যে ভাবে আলাদা রাজ্য নিয়ে বেঁকে বসেছে, সে দিক লক্ষ্য রেখে এ মুহূর্তে কামতাপুর রাজ্যের দাবিতে তেমন ভাবে চাপ দেওয়া হবে না। বাকি কী কী বিষয়ে আমরা রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করব তা ২০ তারিখের বৈঠকে ঠিক হবে। ১৯৯৮ সাল থেকে ওই সংগঠনের জঙ্গি কার্যকলাপ শুরু হয়। কামতাপুর পিপলস পার্টি এক দিকে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে পৃথক রাজ্য ও ভাষার দাবিতে আন্দোলনে নামে। কে এল ও অবশ্য সে পথে হাঁটেনি। আলফার মদতে ভুটানের বিভিন্ন ঘাঁটিতে অস্ত্রের প্রশিক্ষণ নিয়ে সশস্ত্র হামলা চালাতে শুরু করে কেএলও। উত্তরবঙ্গের সে সময়ের শাসক দল সিপিএমের নেতারা ছিলেন কে মূল টার্গেট। ব্যবসায়ী অপহরণ, কয়েকজন সিপিএম নেতার হত্যা সহ ধূপগুড়ি পার্টি অফিসে হামলা-সহ পুলিশের সঙ্গে বার বার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শেষ পর্যন্ত সেনা অভিযানের পরে কেএলওর সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়ে। বহু জঙ্গি গ্রেফতার হন। অনেকে আত্মসমর্পণে বাধ্য হন। কয়েক বছর জেলে কাটাবার পর অনেকে সরকারি সহায়তা পেয়ে কাজকর্ম করে সংসার চালাচ্ছেন। অনেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সরকারি ঋণ বা অনুদান নেবেন না বলে জানিয়েছেন। আলোচনা চলাকালীন উত্তরবঙ্গ কোনও ভাবে অশান্ত করা হবে না বলেও কে এল ও নেতৃত্ব জানিয়েছে।
|
|
|
|
|
|