|
|
|
|
লাইনে পড়ে জখম, পাশে শ্রমিক |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
ট্রেনের ইঞ্জিনের ধাক্কায় জখম হয়ে এক তরুণ রেল লাইনে পড়ে আর্তনাদ করলেও প্রায় আধ ঘণ্টা পাশে দাঁড়াননি কেউ। শেষ পর্যন্ত এক স্থানীয় এক শ্রমিক তরুণকে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করেন। বুধবার দুপুর ১টা নাগাদ এমনই ঘটনা ঘটেছে শিলিগুড়ির মহাবীরস্থানে। পুলিশ জানায়, জখম তরুণের নাম প্রকাশ ঠাকুর। বাড়ি শালুগাড়ার বিবেকানন্দপল্লিতে। যে যুবক ওই তরুণকে নিয়ে হাসপাতালে যান তাঁর নাম সূরজ সাহানি। তাঁর বাড়ি মাল্লাগুড়িতে। হাসপাতালে গিয়ে দ্রুত চিকিৎসা শুরুর দাবিতে চিৎকার জুড়ে দেন তিনি। রেল পুলিশের শিলিগুড়ি জংশনের আইসি দীপক প্রধান বলেন, “ঘটনা শোনার পরই আমরা সেখানে যাই। সেই সময় এক যুবক জখম তরুণকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।” এদিন দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ রেলের একটি ইঞ্জিন শিলিগুড়ির দিকে যাচ্ছিল। সেই সময় ইঞ্জিনটির ধাক্কায় লাইনের উপরে পড়ে যান প্রকাশ। সেখানে জখম অবস্থায় ছটফট করতে থাকে সে। সূরজ সাহানি জানান, তিনি পাশেই একটি দোকানে বস্তা সেলাইয়ের কাজ করছিলেন। ওই তরুণকে জখম হতে দেখে দৌড়ে যান। স্থানীয় কয়েকজন পুলিশকে খবর দেন। অনেকে সেখানে ভিড় করলেও কেউ প্রকাশকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে রাজি হচ্ছিলেন না। কিছুক্ষণ পরে রেল পুলিশের ২ কর্মী ঘটনাস্থলে গেলেও জখম যুবককে হাসপাতালে পৌঁছানোর ব্যপারে খুব একটা আগ্রহ দেখাচ্ছিলেন না বলে অভিযোগ। অবস্থা বুঝে সূরজ ওই তরুণকে একটি রিকশায় তুলে নেয়। তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে যায় মাংস বিক্রেতা মহম্মদ শিরতাজ। দু’জনে মিলে প্রকাশকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সূরজের অভিযোগ, প্রকাশ ছটফট করতে থাকলেও তাঁর চিকিৎসা শুরু করতে দেরি করা হচ্ছিল। বিভিন্ন খাতায় তাঁর নাম লেখা হয়। তাঁকে সই করতে বলা হয়। বিষয়টি নিয়ে তিনি প্রতিবাদ করে হইচই শুরু করলে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। তিনি বলেন, “চোখের সামনে একটি ছেলে চোট পেয়ে কাতরাচ্ছিল। মাথা দিয়ে রক্ত পড়ছে। কথা বলতে পারছে না। বমিও করছে। এই অবস্থায় তাঁকে বাঁচানো প্রয়োজন বলে মনে হয়েছে। যখন দেখলাম কেউ তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে না। আমি ওঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। শিরতাজ আমাকে সাহায্য করে। আশা করি প্রকাশ বেঁচে যাবে।” প্রকাশের মোবাইল থেকে তাঁর বাড়িতে ফোন করে দুর্ঘটনার কথা জানায় সূরজ। প্রকাশের ভাই আরভিন জানায়, একটি সেলুন রয়েছে প্রকাশের। তার জিনিস কিনতেই মহাবরীস্থানে যান প্রকাশ। সেখানে গিয়ে দুর্ঘটনার মুখে পড়েন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রকাশের চোট গুরুতর হওয়ায় তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ‘রেফার’ করে দেওয়া হয়েছে। শিলিগুড়ি হাসপাতালের সুপার রঞ্জিত ভকত বলেন, “রোগী আসার সঙ্গে সঙ্গেই চিকিৎসা শুরু করা হয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে তাঁকে মেডিক্যাল কলেজে রেফার করে দেওয়া হয়েছে।”
|
|
|
|
|
|