মাওবাদীদের সঙ্গে সামিল ছত্রধরও
বন্দি-অনশন শুরু এ বার পুরুলিয়া ও মেদিনীপুরে
প্রশাসন যা আশঙ্কা করছিল, তা-ই হল। বন্দিদের অনশন-আন্দোলনের ছোঁয়াচ কলকাতার চৌহদ্দি ডিঙিয়ে পৌঁছে গেল জেলার কারাগারেও!
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মেদিনীপুর সেন্ট্রাল জেলে আটক দেড়শো জন বিচারাধীন বন্দি অনশন শুরু করেছেন। অনশনে বসেছেন পুরুলিয়া জেলা কারাগারের ২২ বন্দিও। এবং কলকাতার জেলগুলোর মতো মেদিনীপুর সেন্ট্রাল জেলেও বন্দিদের সমর্থনে অনশনে বসেছেন মাওবাদী বন্দিরাও। প্রসূন চট্টোপাধ্যায়, রাজা সরখেলের মতো মাওবাদী নেতাদের পাশাপাশি ‘পুলিশি সন্ত্রাসবিরোধী জনসাধারণের কমিটি’র নেতা ছত্রধর মাহাতোও অনশনে সামিল হয়েছেন।
মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির দাবিতে আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের বিচারাধীন বন্দিরা অনশন শুরু করেছিলেন গত শুক্রবার। দাবি ছিল: ‘হয় মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করো, নয় জামিন দাও।’ পরে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে প্রেসিডেন্সি ও দমদম সেন্ট্রাল জেলেও। এ দিন জেলায় পৌঁছে যা নিঃসন্দেহে কারা-কর্তাদের মাথাব্যথা আরও বাড়াল বলে মনে করছেন সরকারি মহলেরই একাংশ।
এ দিকে কলকাতার তিন জেলে অনশনরত বন্দিদের অনেকে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের জেল হাসপাতাল ও বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। রাজ্যের আইজি (কারা) রণবীর কুমার এ দিন মহাকরণে বলেন, “অনশনরত বন্দিদের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় সাহায্য করতে স্বাস্থ্য দফতরকে অনুরোধ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, কারও অবস্থা সামান্য খারাপ মনে হলেই জেল-কর্তৃপক্ষকে যেন সঙ্গে সঙ্গে সতর্ক করা হয়।” সেই মতো এ দিন দক্ষিণ ২৪ পরগনা স্বাস্থ্য দফতরের এক দল চিকিৎসককে আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে পাঠানো হয়েছিল। জেল হাসপাতালের ডাক্তারদের সঙ্গে তাঁরাও অনশনরত বন্দিদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন।
প্রশাসনের সামনে আরও সমস্যার ব্যাপার হল, আন্দোলন প্রত্যাহারের কোনও ইঙ্গিত এখনও নেই। রাজ্যের কারামন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী এ দিন ফের আইন ও বিচারমন্ত্রী মলয় ঘটকের সঙ্গে বিচারাধীন বন্দিদের দাবি-দাওয়া সম্পর্কে বৈঠক করেন। তিনি বলেন, “আইনমন্ত্রী কলকাতা হাইকোর্টের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।” পরে মলয়বাবু জানান, যাঁরা পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে বিচারের অপেক্ষায় রয়েছেন, তাঁদের তালিকা কারা দফতর দিয়েছে। “তালিকাটি আমরা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারকে পাঠিয়েছি। ওঁর সঙ্গে আমার কথাও হয়েছে। রেজিস্ট্রার জানিয়েছেন, হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ইতিমধ্যে হস্তক্ষেপ করেছেন।” বলেন আইনমন্ত্রী।
পাশাপাশি এ প্রসঙ্গে আইন ও বিচার দফতর থেকে এ দিনই রাজ্যের সব সরকারি আইনজীবীকে একটা জরুরি চিঠি পাঠানো হয়েছে। কী আছে তাতে?
আইনমন্ত্রী জানাচ্ছেন, বিচারাধীন বন্দিদের বিচার-প্রক্রিয়ায় সরকারি তরফে যাতে কোনও ফাঁক না-থাকে, আইনজীবীদের সেটাই দেখতে বলা হয়েছে। যেমন, বন্দিকে আদালতে তোলার সময়ে সংশ্লিষ্ট মামলা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় যাবতীয় তথ্য আদালতে পেশ করতে হবে। সাক্ষীদের হাজির করানো থেকে শুরু করে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ সব করতে হবে নিয়ম মেনে। মলয়বাবুর কথায়, “আদালতে নথি পেশের ক্ষেত্রে আমাদের যাতে কোনও ঢিলেমি না-থাকে, সরকারি আইনজীবীদের সে ব্যাপারে হুঁশিয়ার থাকতে বলা হয়েছে ওই চিঠিতে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.