দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে মুম্বইয়ে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ এবং যৌনপল্লিতে বিক্রির চেষ্টার অভিযোগে এক প্রৌঢ় শিক্ষককে গ্রেফতার করল স্বরূপনগর থানার পুলিশ। বুধবার রাতে স্বরূপনগরের গোকুলপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রসিদ গাজি নামে বছর ষাটেকের ওই প্রৌঢ়কে গ্রেফতার করা হয়। ছাত্রীটি গত ২৬ অক্টোবর বাড়ি ফিরে এসে আসে। তার মা থানায় ওই অভিযোগ দায়ের করে জানান, আব্দুরের সঙ্গে তাঁর এক আত্মীয়ও ছিল। বৃহস্পতিবার ধৃতকে বসিরহাট এসিজেএম আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাঁকে ১৪ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন আব্দুর রসিদ। ছাত্রীটিও ওই মাদ্রাসায় পড়ে। আব্দুর রসিদ তাকে বাড়িতেও পড়াতে আসতেন। গত ১৩ অগস্ট ছাত্রীটি নিখোঁজ হয়। এ ব্যাপারে ১৮ অগস্ট স্বরূপনগর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয় ওই ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে। একই সময়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যান বিবাহিত আব্দুর রসিদও। এর পরে ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে ওই প্রৌঢ়ের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগও দায়ের করা হয়। ফিরে এসে পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে ছাত্রীটি জানিয়েছে, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এবং কাজ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে আব্দুর রসিদ তাকে মুম্বই নিয়ে যান। সেখানে তাঁর উপরে অত্যাচার চালানো হয় এবং যৌনপল্লিতে বিক্রির চেষ্টা করা হয়। স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ছাত্রীর পক্ষ নিয়ে বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানায়। ওই সংগঠনের অভিযোগ ছিল, পুলিশ ব্যবস্থা নিতে দেরি করছে। কেননা, ছাত্রীটি ফিরে আসার কিছু দিন পরে আব্দুর রসিদও ফিরে আসেন।
স্বরূপনগর থানা অবশ্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ওই অভিযোগ মানেনি। তাদের বক্তব্য, রসিদ ফিরলেও বাড়ি থাকছিলেন না। তাঁর খোঁজ চলছিল। বুধবার রাতে বাড়ি থেকেই গ্রেফতার করা হয় আব্দুর রসিদকে।
আব্দুরের পরিবারের লোকজন নানা ভাবে ওই ছাত্রীর পরিবারের লোকজনকে ভয় দেখাচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। নিরাপত্তার জন্য পুলিশের কাছে আবেদন করেন ছাত্রীর মা। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে আব্দুর রসিদ বলেন, “মুম্বইয়ে বেড়াতে গিয়েছিলাম। ছাত্রী যেতে চাওয়ায় তাকে নিয়ে গিয়েছিলাম। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে।” তবে, ছাত্রীকে নিয়ে যাওয়ার কথা তার অভিভাবকদের না-জানানো ভুল হয়েছে বলে তিনি স্বীকার করেছেন। |