|
|
|
|
বৈঠকই সার, ধান কেনা শুরুই হয়নি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
বাজারে ধানের দাম কমেই চলেছে। অথচ এখনও সহায়ক-মূল্যে ধান কেনা শুরুই করতে পারল না পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। এখনও পর্যন্ত ধান কেনা নিয়ে কেবলমাত্র একটি প্রশাসনিক বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে শীঘ্রই ধান কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু কবে থেকে ধান কেনা শুরু হবে? তার কোনও দিনক্ষণ ঠিক হয়নি। এ বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ামক প্রদীপ ঘোষ বলেন, “যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ধান কেনা শুরুর চেষ্টা হচ্ছে।”
সরকার দু’ধরনের ধানের মূল্য বেঁধে দিয়েছে অনেক আগেই। সাধারণ ধানের মূল্য ১০৮০ টাকা প্রতি কুইন্টাল। আর সরু ধানের মূল্য ১১৩০ টাকা প্রতি কুইন্টাল। কিন্তু বাজারে কুইন্টাল-প্রতি বড় জোর ৮০০ টাকায় ধান বিক্রি হচ্ছে। ফলে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বর্তমানে সেচ, রাসায়নিক সার, কীটনাশক থেকে মজুরি--সব খরচই বেড়েছে। চাষের খরচ বাড়লেও ধানের মূল্য না পেয়ে বিপাকে চাষিরা। তাই সর্বত্রই সহায়ক-মূল্যে ঝান কেনার দাবিতে সোচ্চার হচ্ছেন কৃষিজীবীরা। চলছে মিছিল, স্মারকলিপি প্রদান। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। প্রশাসন চলছে ধীর চালেই। অভিযোগ, দেরি করলে আর চাষির কাছে ধান থাকবে না। তখন ফোড়ে বা ব্যবসায়ীদের কাছে ধান পৌঁছে যাবে। সরকার যে বেশি মূল্যে ধান কিনবে তাতে লাভবান হবেন ফোড়ে ও ব্যবসায়ীরাই।
মূলত, অভাবী বিক্রি বন্ধ করতেই ধান কেনে সরকার। যাতে কৃষকেরা সহায়ক-মূল্য পান। তা ছাড়াও বাজারে ফসলের দামটাও ঠিক থাকে। ব্যবসায়ীরা তখন দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। কিন্তু সরকার ধান কিনতে দেরি করলে অভাবী বিক্রি আটকানো যাবে না । শীত চলে এল। এ বার আলু ও সব্জি চাষের সময়। আলু চাষ করতে গেলেও বীজ, সার, সেচ ও মজুরের প্রয়োজন। মূলত, ধান বেচেই গরিব কৃষকেরা সেই কাজ চালান। সেই চাষের জন্য বাধ্য হয়েই বাজারে কম দামে ধান বিক্রি করে দিতে হচ্ছে তাঁদের। সরকার নির্ধারিত মূল্যের থেকে যা কুইন্টাল প্রতি ৩০০ টাকারও কম। চাষিদের কথায়, সরকার ধান কেনা শুরু করলে খোলা বাজারেও ধানের দাম বাড়ে। সেই মূল্য অনেক দিন পর্যন্ত থেকেও যায়। প্রতিটি চাষিই সেই সুূযোগ নিতে পারেন। ক্ষতি হয় না। কিন্তু এখন তো বেশিরভাগ ধানই ফোড়ে, মিল-মালিক ও ব্যবসায়ীদের কাছে। যারা চাষিদের কাছ থেকে ৭০০-৮০০ টাকা কুইন্টাল দামে ধান কিনছেন। সেই ধানই আবার ১০৮০ টাকা প্রতি কুইন্টালে সরকারকে বেচা হবে না তো--এই প্রশ্ন উঠেছে। যদিও প্রশাসন জানিয়েছে, সরাসরি চাষিদের কাছ থেকেই ধান কিনতে হবে। এমনকী চাষিদের নামে চেকে টাকা দিতে হবে। চাষিদের অবশ্য অভিযোগ, প্রতি বারই এমন নানা কড়া আইনের কথা বলা হয়। পরবর্তীকালে দেখা যায়, আইনের ফাঁক গলেই এক শ্রেণির মানুষ ফুলে ফেঁপে ওঠেন। সেই তিমিরেই রয়ে যান চাষিরা। |
|
|
|
|
|