|
|
|
|
নন্দীগ্রাম নিখোঁজ-কাণ্ড |
হাইকোর্টে প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট পেশ করল সিআইডি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা ও তমলুক |
নন্দীগ্রামের ভূমি-উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির নিখোঁজ সমর্থকদের ব্যাপারে বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে প্রাথমিক তদন্ত-রিপোর্ট জমা দিল সিআইডি। বিচারপতি অসীম রায় এবং বিচারপতি অসীম রায়ের ডিভিশন বেঞ্চের (দুই বিচারপতির একই নামই) কাছে জমা দেন। আজ, শুক্রবার মামলাটির শুনানি হবে। এ দিনই খেজুরির অ্যাম্বুল্যান্স-চালক, সিপিএম কর্মী শক্তি দলপতিকে গ্রেফতারও করা হল। ধৃতকে হলদিয়া এসিজেএম আদালতে হাজির করা হলে এসিজেএম সর্বাণী মল্লিক চট্টোপাধ্যায় তাঁকে ৪ দিনের সিআইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন ।
চার বছর আগে ১০ নভেম্বর ভূমি-কমিটির মিছিল থেকে নিখোঁজ সাত জনের ব্যাপারে হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্ত করছে সিআইডি। সিআইডি সূত্রের দাবি, যাঁদের সন্ধান মিলছে না, তাঁরা নিহতই হয়েছিলেন। হতাহতদের ভ্যান-রিকশায় প্রথমে খেজুরির শেরখাঁচকের wআমড়াতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে নিহত কয়েক জনের দেহ খেজুরির রসুলপুর ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ভুটভুটিতে দেহগুলি বঙ্গোপসাগরে নিয়ে গিয়ে ভাসিয়ে দেওয়া হয়w বুধবার বাজেয়াপ্ত অ্যাম্বুল্যান্সটিই (ডব্লিউবি-২৯/৬১৯০) দেহ-বহনে ব্যবহৃত হয়েছিল বলে সিআইডি সূত্রের দাবি। এর আগে সাগরে দেহ ভাসানোয় জড়িত সন্দেহে খেজুরির প্রাক্তন এক সিপিএম পঞ্চায়েত সদস্য তথা ভুটভুটি মালিক অজিত বরকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। আপাতত তিনি রয়েছেন জেল হেফাজতে। খেজুরির কটকা-শ্যামপুরের কয়েক জন মাঝি আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছেন। সে দিনের ঘটনা নিয়ে নন্দীগ্রাম-খেজুরির অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিআইডি। নিখোঁজদের পরিজনেদের বক্তব্যও নথিভুক্ত করা হয়েছে। বুধবারই তমলুকে পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য-আধিকারিকের (সিএমওএইচ) দফতর-চত্বর থেকে একটি অ্যাম্বুল্যান্স বাজেয়াপ্ত করেছিল সিআইডি। ২০০৭-এর ১০ নভেম্বর নন্দীগ্রামে ভূমি-কমিটির মিছিলে সিপিএম-বাহিনীর গুলি-চালনায় নিহত কয়েক জনের দেহ বহনে খেজুরির একটি ক্লাবের হেফাজতে থাকা অ্যাম্বুল্যান্সটি ব্যবহৃত হয়েছিল বলে দাবি সিআইডি-র। খেজুরির কামারদার ওই ক্লাবটির সম্পাদক সিপিএম নেতা তথা এক সময়ে খেজুরি-১ পঞ্চায়েত সমিটির সভাপতি হিমাংশু দাস। যাঁর বিরুদ্ধে নন্দীগ্রামে হামলায় নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ আগেই তুলেছিল ভূমি-কমিটি। স্বাস্থ্য দফতর থেকে পাওয়া অ্যাম্বুল্যান্সটি তাঁরা আর চালাতে পারবেন না জানিয়ে অতি সম্প্রতি হিমাংশুবাবু চিঠি লিখেছিলেন সিএমওএইচকে। তার পরে সেটি সিএমওএইচের দফতরে ফেরত আসে। আ্যাম্বুল্যান্সটি বাজেয়াপ্ত করা ছাড়াও কামারদা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দুই চিকিৎসকের সঙ্গেও কথা বলেন সিআইডি অফিসারেরা। আ্যাম্বুল্যান্সটি খেজুরির ক্লাবটির পরিচালনায় ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরেই থাকত। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দুই চিকিৎসক সৈয়দ আলমগির কবীর ও সুব্রত হাজরা বুধবার হলদিয়া আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পবিত্র সেনের কাছে জবানবন্দিও দেন। সে দিনই আ্যম্বুল্যান্সের দুই চালককে জেরাও শুরু করেছিল সিআইডি। তাঁদেরই অন্যতম সিপিএম-কর্মী এবং কামারদারই বাসিন্দা শক্তিবাবুকে ধরা করা হয়। দেহ লোপাটে প্রত্যক্ষ যোগসাজশের অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। |
|
|
|
|
|