বাগনান ২ পঞ্চায়েত সমিতি
অনাস্থা প্রস্তাব থেকে নাম প্রত্যাহার তিন তৃণমূল সদস্যের
বাগনান ২ পঞ্চায়েত সমিতিতে কংগ্রেস সভাপতির বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে এক প্রস্থ ‘নাটক’ হল। সম্প্রতি এই পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূলের ৬ জন এবং কংগ্রেসের ৩ জন সদস্য অনাস্থা প্রস্তাবে সই করে উলুবেড়িয়ার মহকুমাশাসকের কাছে জমা দেন।
বৃহস্পতিবার তৃণমূলের তিন জন সদস্য চিঠি লিখে মহকুমাশাসককে জানিয়ে দেন, অনাস্থা প্রস্তাব থেকে তাঁরা নিজেদের নাম প্রত্যাহার করতে চান। এই পঞ্চায়েত সমিতিতে মোট সদস্য ২১ জন। নিয়মানুযায়ী, এক তৃতীয়াংশ সদস্য সই না করলে অনাস্থা প্রস্তাব গৃহীত হয় না। তিন সদস্য নিজেদের নাম প্রত্যাহার করায় অনাস্থা প্রস্তাবটির আর কোনও মূল্য থাকল না বলে মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
২১ জন সদস্যের মধ্যে কংগ্রেস এবং তৃণমূলের সদস্য সংখ্যা যথাক্রমে সাত এবং ছয় জন। সিপিএমের সদস্য সাত জন। একজন নির্দল। অনাস্থা প্রস্তাবটিতে সই করে তৃণমূলের ছয় জন এবং কংগ্রেসের তিন জন সদস্য জানিয়েছিলেন, সভাপতি নিজের মতো করে পঞ্চায়েত সমিতি চালাচ্ছে। কারও কথা তিনি শুনছেন না। ফলে উন্নয়নের গতি ব্যহত হচ্ছে।
কিন্তু বৃহস্পতিবার তৃণমূলের তিন সদস্য অনাস্থা প্রস্তাব থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করতে চাওয়ায় এই দলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ পেয়েছে বলে স্থানীয় রাজনৈতিক মহলের অনুমান। অনাস্থা প্রস্তাব থেকে নিজেদের নাম তুলে নিতে চেয়ে তিন জন তৃণমূল সদস্য মহকুমা প্রশাসনের কাছে যে চিঠি পাঠিয়েছেন, তাতে সাফ জানিয়েছেন, ‘ভুল করে’ তাঁরা অনাস্থা প্রস্তাবে সই করেছিলেন। সভাপতির বিরুদ্ধে তাঁদের কোনও অভিযোগ নেই।
এই তিন জনের অন্যতম সুদর্শন ধাড়া বলেন, “অনাস্থা প্রস্তাবটি নিয়ে যাঁরা আমাদের কাছে সই করাতে এনেছিলেন, তাঁরা জানিয়েছিলেন, এ বিষয়ে দলের অনুমোদন রয়েছে। তাঁদের কথায় বিশ্বাস করে আমরা চোখ বন্ধ করে সই করে দিই। কিন্তু প্রস্তাবটি জমা পড়ার পরে দলের পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয় এতে অনুমোদন ছিল না। দলের পক্ষ থেকেই আমাদের অনাস্থা প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করার জন্য চিঠি দিতে বলা হয়।”
অন্য দিকে, অনাস্থা প্রস্তাবটি আনতে যে সব তৃণমূল সদস্য উদ্যোগী হয়েছিলেন, অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় নামে তাঁদের এক জন পাল্টা বলেন, “ব্যক্তিগত স্বাধীনতা প্রত্যেকের আছে। কাউকে জোর করে প্রস্তাবে সই করানো হয়নি। অনাস্থা প্রস্তাবে সই করার পরে কারও বাড়িতে গিয়ে কাউকে ভুল বুঝিয়ে যদি প্রত্যাহারের চিঠিতে জোর করে সই করানো হয় তাতে সই করাটাও তাঁর ব্যক্তিগত অধিকার।” অশোকবাবুর দাবি, দলীয় সভাপতির লিখিত নির্দেশেই অনাস্থা প্রস্তাবটি আনা হয়।
দলের বাগনান কেন্দ্রের সভাপতি সোমনাথ হালদার অবশ্য জানান, তৃণমূলের ছয় জন সদস্য অনাস্থা প্রস্তাব আনার সিদ্ধান্ত আগেই নিয়ে ফেলেছিলেন। তিনি বলেন, “অনাস্থা প্রস্তাব আনার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমার কাছে অশোকবাবুরা এসেছিলেন। আমি বলেছিলাম, সমিতির সদস্যেরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত যখন নিয়েই ফেলেছেন যখন তাঁদের বিরোধিতা করা মানে পরিষদীয় দলের কাজে হস্তক্ষেপ করা। এটাকে যদি লিখিত নির্দেশ বলা হয় তা হলে আমার আর কী করার আছে? আমি তাঁদের দলের আরও নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে বলেছিলাম।”
তিন জন সদস্য অনাস্থা প্রস্তাব প্রত্যাহার করতে চেয়ে চিঠি দেওয়ায় আপাতত স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন সমিতির সভাপতি কংগ্রেসের কাজল গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “যত সব ছেলেমানুষি। আমি জানতাম সততার জয় হবেই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.