|
|
|
|
তারাপীঠে যুবক খুন |
ছাড়া পেয়ে গেলেন তৃণমূল কাউন্সিলর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তারাপীঠ |
উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে নদিয়ার কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা অরূপ বন্দ্যোপাধ্যায় খুনের ঘটনায় আটক তৃণমূল কাউন্সিলর দেবানন্দ শর্মাকে বৃহস্পতিবার ছেড়ে দিল পুলিশ। তবে পুলিশের আবেদনের ভিত্তিতে এই ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ধৃত পায়েল মণ্ডলকে এবং রাজেশ সামন্তকে সাত দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তারাপীঠে দ্বারকা সেতুর উপরে অরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে গুলি করে খুন করা হয়েছিল। তাঁর জামাইবাবু কৃষ্ণনগরের ভাতজাংলার বাসিন্দা মৃণ্ময় পালের অভিযোগের ভিত্তিতে বীরভূমের মাড়গ্রাম থানার পুলিশ বুধবার সকালে কৃষ্ণনগরে গিয়ে বাড়ি থেকে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর দেবানন্দ শর্মাকে আটক করেছিল। সকালে আর এক অভিযুক্ত ওই ওয়ার্ডেরই বাসিন্দা নীতিশ দাসকেও কৃষ্ণনগর থেকে আটক করা হয়। উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে নীতিশ দাসকেও পুলিশ এ দিন ছেড়ে দেয়।
বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার নিশাত পারভেজ বলেন, “প্রমাণ না মেলায় দু’জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। রাজেশকে বৃহস্পতিবার রামপুরহাট আদালতে তোলা হয়েছিল। তবে বুধবার পায়েলকে রামপুরহাট আদলতে তোলা হলে তাকে বিচারক ১৪ দিন জেলহাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার আবেদনের ভিত্তিতে তার পুলিশি হেফাজত হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।”
দেবানন্দের বাবা দিলীপ শর্মাও কৃষ্ণনগর পুরসভার দীর্ঘদিনের কাউন্সিলর। গত পুর নির্বাচনে তিনি ৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তৃণমূলের টিকিটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। দিলীপবাবু নদিয়া জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদকও। অরূপের বাবা গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় কৃষ্ণনগর স্টেশন সংলগ্ন অঙ্গনাপাড়া এলাকার প্রভাবশালী সিপিএম নেতা। তিনি ভাতজাংলা পঞ্চায়েতের সদস্য। এলাকায় তাঁরও যথেষ্ট প্রতিপত্তি রয়েছে। শুধু তাই নয়, রাজনৈতিক বিভেদ থাকলেও গৌতমবাবুর সঙ্গে দিলীপ শর্মা এবং তার অনুগামীদের সম্পর্ক যথেষ্ট ভাল ছিল বলেই জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। দিলীপবাবুর ঘনিষ্ঠদের দাবি করেছিলেন, কৃষ্ণনগর শহরে ঠিকাদারি ব্যবসা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ চলছে। দিলীপবাবুদের তারই জেরে খুনের ঘটনায় দেবানন্দের নাম জুড়ে দিয়ে তাকে ফাঁসানো হল। এ দিন ছাড়া পেয়ে যাওয়ার ঘটনা সেই দাবিকে প্রমাণ করে।
বীরভূম জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দেবানন্দ শর্মা ও নীতিশ দাসকে আটক করে বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু খুনের ঘটনায় তাঁদের যুক্ত থাকার প্রমাণ মেলেনি। পুলিশের দাবি, বরাহনগরের নওয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা রাজেশ সামন্ত জেরায় স্বীকার করেছে, সে নিজেই অরূপের উপরে গুলি চালিয়েছে। শুধু তাই নয়, কৃষ্ণনগরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা পরিতোষ দত্তের নির্দেশে সে ওই কাজ করেছে এবং নদিয়ার করিমপুরের বাসিন্দা পায়েল মণ্ডলকে ব্যবহার করেছে পরিতোষ দত্তই। ঘটনার দিন তারাপীঠে পরিতোষ নিজে না এলেও দুপুর থেকে তাঁর লোকজন এসেছিল। রাজেশ একা তারাপীঠে আসে। গুলি করার পরে অস্ত্রটি রাজেশ পরিতোষের লোকজনের হাতে তুলে দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে রামপুরহাট স্টেশন থেকে মঙ্গলবার রাতেই তাকে ও পায়েলকে আটক করা হয়েছিল। পুলিশ জানায়, পরিতোষ ও আপা নামে কৃষ্ণনগরের এক যুবকের খোঁজ তল্লাশি চলছে। |
|
|
|
|
|