ইসিএলের খনি আবাসন ও জমি থেকে জবরদখ উচ্ছেদের প্রক্রিয়ায় শ্রমিক সংগঠনগুলিকে কোনও ভাবে যুক্ত করা হবে না। কলকাতা হাইকোর্টে হলফনামা জমা দিয়ে এমনটাই জানালেন সংস্থা কর্তৃপক্ষ। গত সপ্তাহে চিফ জাস্টিস জয়নারায়ণ পাটিল ও বিচারপতি সোমবুদ্ধ চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চে ওই হলফনামা দাখিল করেন ইসিএল কর্তৃপক্ষ।
২০০৯ সালে খনিকর্মী আবাসন বহিরাগতদের দখল থেকে মুক্ত করা, জল ও বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন করে, এমনকী জমি দখল করে থাকা জবরদখলকারীদের উচ্ছেদ করে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটির অর্থ অপচয় বন্ধের আবেদন জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন আইনজীবী পার্থ ঘোষ। তার পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ইসিএল-কে খনিকর্মী আবাসন দখলমুক্ত করার নির্দেশ দেয়। পুলিশকে এ ব্যাপারে ইসিএল-কে সাহায্য করার কথাও জানায় আদালত। সম্প্রতি পার্থবাবু আদালতকে জানান, গত ৫ অগস্ট কয়লা মন্ত্রকের সঙ্গে সংস্থা অনুমোদিত ৫টি শ্রমিক সংগঠনের বৈঠক আয়োজিত হয়। সেখানে শ্রমিক নেতারা এই খনি আবাসন থেকে দখলদার উচ্ছেদ প্রক্রিয়ার ব্যাপারে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করার দাবি জানিয়েছিলেন। পার্থবাবু অভিযোগ করেন, দখলদার উচ্ছেদের প্রক্রিয়া শুরুর পরে এ নিয়ে শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনায় বসা আদালত অবমাননার সামিল। এর ভিত্তিতে ১৬ সেপ্টেম্বর আদালত ইসিএল-কে এ বিষয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গী পরিষ্কার করতে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। পার্থবাবু জানান, গত সপ্তাহে জমা দেওয়া হলফনামায় ইসিএলের তরফে জানানো হয়েছে, আবাসন থেকে দখলদার উচ্ছেদের ব্যাপারে তারা শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে কোনও আলোচনায় বসছে না।এ দিকে, মঙ্গলবার বামপন্থী কৃষক সমন্বয় কমিটি বেশ কিছু দাবিতে পাণ্ডবেশ্বরের বিডিও অফিসে বিক্ষোভ দেখায়। বিডিও-র কাছে জমা দেওয়া দাবিপত্রে তারা জানিয়েছে, আবাসন থেকে জল ও বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন করার পরে তাদের জমি জবরদখলের অভিযোগে বাড়ি ভাঙার প্রক্রিয়া শুরু করতে চলেছে। ইসিএল যে জমি নিজেদের বলে দাবি করছে, তা আদৌ তাদের কি না, নথিপত্র দিয়ে প্রমাণ করতে হবে। ওই কমিটির সদস্য তথা সিপিএমের বর্ধমান জেলা কমিটির সদস্য তুফান মণ্ডল জানান, খাস কাজোড়ায় কয়েকটি এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে বাস করছেন বহু আদিবাসী পরিবার। সেই জমি সরকারি খাস জমি না ইসিএলের, তা প্রমাণ করতে হবে। তুফানবাবুর দাবি, “সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্পে খনি এলাকার পাঁচ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় বিদ্যুৎ ও জল দিয়ে আসছে ইসিএল। এখন হঠাৎ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা যাবে না।”
ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় অবশ্য জানান, হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে নকশা দেখেই জমি থেকে জবরদখল উচ্ছেদ করা হচ্ছে। |