নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
সাঁকতোড়িয়ার ধস কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন দেওয়ার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ল আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এডিডিএ)। বুধবার এডিডিএতে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। এ দিন পুনর্বাসন সংক্রান্ত একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কুলটি থানার সাঁকতোড়িয়া কলোনিতে ১১ নভেম্বর দুপুরে ধস নামে। প্রায় ২০টি বাড়িতে ফাটল ধরে। এর মধ্যে চারটি বাড়ি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরিবারগুলি নিরাপদ স্থানে উঠে যায়। কিন্তু প্রশাসনের উদ্যোগে ত্রাণের ব্যবস্থা না হওয়ায় ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। এর পরেই এডিডিএ কর্তৃপক্ষ পুনর্বাসন দেওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হন। সংস্থার চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা একশো শতাংশ আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিচ্ছি। এই বিষয়ে বিশেষ বৈঠক করে কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সিদ্ধান্তগুলি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে? তাপসবাবু জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির তরফে আদালতের এফিডেভিটের মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ চেয়ে আবেদন করতে হবে। আবেদন পত্র পাওয়ার পরে তার সঙ্গে এডিডিএ-র একটি চুক্তি স্বাক্ষর হবে। এরপর কেন্দ্রীয় কয়লা মন্ত্রকের তৈরি করে দেওয়া ২০০৬ সালের পুনর্বাসন প্রকল্প অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। প্রথমে ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের পরিচয়পত্র দেওয়া হবে। ১৮ নভেম্বরের মধ্যে এই পরিচয়পত্রগুলি দিয়ে দিতে হবে। তার পরে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের মূল্যায়ন করা হবে। সব শেষে পরিবারগুলির হাতে ক্ষতিপূরণের টাকা তুলে দেওয়া হবে। এডিডিএ-র চেয়ারম্যান তাপসবাবু জানিয়েছেন, এই প্রক্রিয়ার পুরো কাজটিই করবে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি। এই কমিটিতে থাকছেন ইসিএলের সিভিল বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার, এডিডিএ পুনর্বাসন সেলের পদাধিকারী, কুলটির বিএলআরও, জমি জরিপের কাজে নিযুক্ত বেসরকারি বিশেষজ্ঞ কমিটির এক পদাধিকারী।
তবে এখানেই শেষ নয়। ক্ষতিপূরণ পাওয়ার পরে ওই পরিবারের তরফে একটি লিখিত স্বীকারোক্তি দিয়ে এডিডিএ-কে জানাতে হবে, তিনি যে ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন তাতে তিনি সন্তুষ্ট। ভবিষ্যতে তিনি বা তাঁর পরিবারের কেউই আর ক্ষতিপূরণ চেয়ে আবেদন করবেন না। ক্ষতিপূরণ পাওয়ার পরেই তাঁর ধস কবলিত জায়গা ও বাড়িঘর ইসিএল কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিতে হবে। ইসিএলের তরফে ডোজার দিয়ে সেখানে ফাটল ধরা ঘরবাড়ি ভেঙে ফেলা হবে। ভরাট করে ফেলা হবে ধসে যাওয়া জায়গা। সেখানে যাতে আবার নতুন করে বসতি গড়ে উঠতে না পারে তার জন্য ইসিএল কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেবে। ক্ষতিপূরণ বা পুনর্বাসন প্রক্রিয়াটির যাবতীয় খরচ বহন করবে এডিডিএ।
এডিডিএ-র চেয়ারম্যান তাপসবাবু জানান, বৃহস্পতিবার থেকেই পুনর্বাসন সেলের অফিসাররা এই প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছেন। তবে ওই এলাকায় নতুন করে আর ফাটল ধরেনি। তবে মাটির তলা থেকে অনর্গল ধোঁয়া বেরোচ্ছে। মাঝেমধ্যে ধোঁয়ার পরিমাণ বাড়ছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলি আর এলাকায় ফেরেননি। |