আগামী জানুয়ারী মাসেই জলপাইগুড়িতে কলকাতা হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ উদ্বোধন হচ্ছে ধরে নিয়ে জেলা প্রশাসন-সহ সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরগুলিকে প্রস্তুতি শুরুর নির্দেশ দেওয়া হল। মঙ্গলবার আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক কলকাতায় সরকারি আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকে জানুয়ারি মাসে বেঞ্চ উদ্বোধনের কথা মাথায় রেখে প্রস্তুতি শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যদিকে, বেঞ্চের স্থায়ী পরিকাঠামো তৈরির জন্য উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রক থেকে বরাদ্দ করা ৫ কোটি টাকা পূর্ত দফতরের হাতে চলে এসেছে। সেই টাকা দিয়ে চলতি মাসেই স্থায়ী পরিকাঠামো তৈরির কাজ শুরুর নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। হাইকোর্টের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী স্থায়ী ভবনের কাজ শুরু হলেই জলপাইগুড়িতে অস্থায়ী ভাবে বেঞ্চের কাজ শুরু করা হবে। আইনমন্ত্রীর বৈঠকে পূর্ত দফতরের কর্তারা ছাড়াও জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি হিসেবে অতিরিক্ত জেলা শাসক তন্ময় চক্রবর্ত্তী উপস্থিত ছিলেন। গত বছর জুলাই মাসে কলকাতা হাইকোর্টের তরফে জলপাইগুড়িতে সার্কিট বেঞ্চের অস্থায়ী ভবন-সহ অন্যান্য পরিকাঠামো পরিদর্শন করে জানান, স্থায়ী ভবন তৈরির জন্য অধিগৃহীত জমিতে রাজ্য সরকার সীমানা প্রাচীর দিয়ে ভবন তৈরির কাজ শুরু করলেই অস্থায়ী ভবনে বেঞ্চের কাজ চালু করে দেওয়া হবে। সে কথা মাথায় রেখে আইনমন্ত্রক থেকে দেড় কোটি এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রক থেকে ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করে রাজ্য সরকার। এদিন বৈঠকে আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় চাইছেন আগামী জানুয়ারী মাসের মধ্যেই সার্কিট বেঞ্চের কাজ চালু হয়ে যাক। সেই মতো চলতি মাসেই সীমানার প্রাচীরের টেন্ডারের কাজ পূর্ত দফতরকে শেষ করে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অস্থায়ী ভাবে বেঞ্চ চালুর জন্য যে পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে সেগুলি প্রস্তুত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রক থেকে বরাদ্দ করা ৫ কোটি টাকা ইতিমধ্যেই পূর্ত দফতরের হাতে চলে এসেছে। জলপাইগুড়ি জেলাশাসকের থেকে সার্কিট বেঞ্চের বিষয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন। সার্কিট বেঞ্চ নিয়ে বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে সমণ্ণয়ের কাজ করে চলা মন্ত্রী গৌতমবাবু মঙ্গলবার বলেন, “আইনমন্ত্রী কলকাতায় এদিন বৈঠক করেছেন। সেখানে আমারও থাকার কথা থাকলেও ডুয়ার্সের অনুষ্ঠানের জন্য যেতে পারিনি। রাজ্যে নতুন সরকার আসার ৬ মাসের মধ্যে বেঞ্চের স্থায়ী পরিকাঠামো তৈরির জন্য প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করে দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে চাইছেন যত দ্রুত সার্কিট বেঞ্চের কাজ শুরু হোক।” সার্কিট বেঞ্চের সীমানা প্রাচীর তৈরির টেন্ডার করার জন্য পূর্ত দফতর আগেও দু’বার প্রক্রিয়া শুরু করলেও টেন্ডারে সাড়া মেলেনি বলে জানা গিয়েছে। সে কারণে নতুন করে প্রস্তুতি নিয়ে এ মাসের মধ্যেই টেন্ডার সেরে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পূর্ত দফতরকে। সীমানা প্রাচীর ছাড়াও স্থায়ী ভবন তৈরির ভিত তৈরির কাজ শুরু করতে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতমবাবু তাঁর দফতর থেকে যে ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন তাও পূর্ত দফতরের হাতে পৌঁছে গিয়েছে। গৌতমবাবু বলেন, “এ মাসের মধ্যেই কাজ শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমি প্রতিদিনই একবার করে সার্কিট বেঞ্চ নিয়ে আইনমন্ত্রী থেকে শুরু করে সব দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। আশা করছি মুখ্যমন্ত্রী যেমন চাইছেন, শীঘ্রই হবে।” |