সংখ্যালঘুদের দাবিপূরণে এ বার ‘সামাজিক’ মঞ্চের তরফে আন্দোলনের ডাক দিলেন সিপিএম ‘বিদ্রোহী’ বিধায়ক আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা। বাংলাদেশ থেকে আসা উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্বের অধিকার, সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠাগুলিতে যথাযথ সরকারি সাহায্য, শিক্ষা ও কাজে সংখ্যালঘুদের আরও বেশি সুযোগ একগুচ্ছ দাবি আদায়ে সামাজিক আন্দোলনের কথা বলেছেন তিনি। উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্বের দাবি প্রসঙ্গে প্রাক্তন ভূমিমন্ত্রীর বক্তব্য, “সিপিএম পারলে লাল সেলাম, তৃণমূল পারলে সবুজ সেলাম! যে কাজ করতে পারবে, তাদের সঙ্গেই থাকব।” |
রেজ্জাক সিপিএমে থেকেও দলীয় মঞ্চের বাইরে কী করতে চান, তা নিয়ে বাম শিবিরে জল্পনা চলছিল বেশ কিছু দিন ধরে। ‘নয়া জমানা’ সংগঠনের তরফে মঙ্গলবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবার্ষিকী হলে সংখ্যালঘুদের দাবিদাওয়া নিয়ে এ দিনের গণ কনভেনশনে মুখ্য আকর্ষণ ছিলেন রেজ্জাকই। কিন্তু প্রেক্ষাগৃহের এক-তৃতীয়াংশের বেশি আসনে শ্রোতা চোখে পড়েনি! রেজ্জাক অবশ্য দলের সমালোচনার পথে না হেঁটে বলেছেন, “রাজনৈতিক পরিচয়ের জামাটা আমি কলেজ স্ট্রিটের ও’পারে খুলে রেখে এসেছি!” কনভেনশনে রাজ্যের আরও দুই প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা আনিসুর রহমান ও আব্দুস সাত্তার, ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক অশোক ঘোষ ও সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের রাজ্য সম্পাদক পার্থ ঘোষ উপস্থিত ছিলেন।
রেজ্জাকের বক্তব্য, ১৯৭১ সালে ইন্দিরা-মুজিব চুক্তির পরে যাঁরা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ থেকে এসেছেন, সরকারের উচিত ছিল তাঁদের ‘পুশ ব্যাক’ করা। কিন্তু তা যখন করা হয়নি, তখন এত দিন এ দেশে বাস করার পরে তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না কেন? এই দাবিতে সই সংগ্রহ এবং পরবর্তী কালে মেট্রো চ্যানেলে সমাবেশের ইঙ্গিতও দেন তিনি। প্রসঙ্গত, নাগরিকত্বের দাবিতেই ২২ নভেম্বর কলকাতায় আইন অমান্যের ডাক দিয়েছে উদ্বাস্তুদের ৬টি সংগঠনের জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি।
বাম জমানায় সংখ্যালঘুদের সামাজিক নিরাপত্তা অনেকটাই নিশ্চিত করা গিয়েছিল বলে মন্তব্য করে সিপিএম বিধায়ক আনিসুর বলেন, “বাজারে সমান সুযোগ এখনও আছে। কিন্তু সংরক্ষণ করলে সমানুপাতিক হারে করতে হবে।” অশোকবাবুর বক্তব্য, “ধর্ম-জাত-ভাষা আমাদের কাছে বড় কথা নয়। আমরা চাই, শোষণহীন সমাজ গড়তে।” |