প্রায় ছ’মাস আগে রাজ্যে পালাবদল হয়েছে। অথচ নতুন সরকারের আমলে, গত সাড়ে পাঁচ মাসে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা খরচ করতে পারেনি বিভিন্ন পঞ্চায়েত। মঙ্গলবার মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী শিশির অধিকারীর বৈঠকে এই তথ্য উঠে এসেছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ওই প্রকল্পের টাকা অতি দ্রুত খরচ করার জন্য পঞ্চায়েতগুলিকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মহাকরণ সূত্রের খবর, ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের টাকা খরচ না-করার তালিকায় সব চেয়ে উপরে রয়েছে বর্ধমানের নাম। ওই জেলা এখনও প্রায় ৭৯ কোটি টাকা খরচ করতে পারেনি। রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতরের এক কর্তার কথায়, “অন্য বছরে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের টাকা খরচের নিরিখে এই সময়ে অনেকটাই এগিয়ে থাকে বর্ধমান। কিন্তু এ বার চিত্রটা একেবারে উল্টো।” বর্ধমানের পঞ্চায়েতগুলির অধিকাংশই বামফ্রন্ট পরিচালিত। প্রায় ছ’মাস আগে রাজ্যের পালাবদল হলেও অধিকাংশ পঞ্চায়েত রয়েছে বামেদের দখলেই। অভিযোগ, এই বাম পরিচালিত পঞ্চায়েতগুলি কাজ করতে না পারায় টাকা খরচ হয়নি। এ ছাড়া টাকা খরচ করতে না-পারার তালিকায় উপরের দিকে রয়েছে মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর এবং বাঁকুড়া জেলা।
এ দিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের যুগ্মসচিব ডি কে জৈন এবং রাজ্যের সংশ্লিষ্ট দফতরের উচ্চপদস্থ কর্তারা। বৈঠকে রাজ্য সরকারকে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনা প্রকল্পে ১২৬২ কিলোমিটার সড়ক তৈরির জন্য আরও ৩২০ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে কেন্দ্র। ১৫০০ কোটি টাকার সড়ক প্রকল্পের সবিস্তার রিপোর্ট চলতি মাসের মধ্যেই জমা দিতে বলেছে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। মহাকরণ সূত্রের খবর, এর মধ্যে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার সড়ক তৈরি করার কথা মাওবাদী অধ্যুষিত জঙ্গলমহলে।
১০০ দিনের কাজের ক্ষেত্রে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ৬০ ঘন মিটার মাটি কাটার জন্য ১২৫ টাকা মজুরি ধার্য করা আছে।
কিন্তু এ রাজ্যে ১২৫ টাকা পেতে হলে ৯০ ঘন মিটার মাটি কাটতে হত। মুখ্যমন্ত্রী এই বিষয়ে কেন্দ্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তা পরিবর্তন করার দাবি জানিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর ওই দাবি মেনে নিয়েছে কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। |